সোমবার, ২৬ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

মুসলিম মানেই উত্তম গুণাবলি সম্পন্ন মানুষ

মুহম্মাদ ওমর ফারুক

মুসলিম মানেই উত্তম গুণাবলি সম্পন্ন মানুষ

মুসলিম নিছক একটি শব্দ নয়। মুসলমান শব্দের সঙ্গে রয়েছে সত্যিকারের মানুষ হয়ে ওঠার সম্পর্ক। ‘মুসলিম’ শব্দের আভিধানিক অর্থ আত্মসমর্পণকারী। আর ইসলামের পারিভাষিক অর্থ আল্লাহ ও তাঁর রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হুকুম পালনকারী। আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) বলেন, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘পূর্ণ মুসলিম সেই পুরুষ বা নারী যার জবান ও হাত থেকে অন্যান্য পুরুষ বা নারী নিরাপদে থাকে’ (বুখারি, মুসলিম, মিশকাত)।

হাদিসের অর্থ অনুযায়ী মুসলিম পরিচয় দিতে হলে উত্তম মানুষ হতে হবে। শরিয়তের হুকুম ছাড়া যে কোনো মানুষকে যে কোনো রকমের কষ্ট দেওয়া ইসলামবিরোধী কাজ। এতে মানুষ পূর্ণ মুসলিম থাকে না। অন্য বর্ণনায় রয়েছে, ‘মুসলিম সেই ব্যক্তি যে নিজের জন্য যা কল্যাণকর মনে করে অন্যের জন্যও তা কল্যাণকর মনে করে’ (মুসনাদে আহমাদ, মিশকাত)। মানুষকে কষ্ট দেওয়া সদাচরণবিরোধী কাজ, যার পরিণাম জাহান্নাম। জুবায়ের ইবনে মুতইম (রা.) বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘সম্পর্ক ছিন্নকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না’ (বুখারি, মুসলিম, মিশকাত)। কেননা সম্পর্ক ছিন্ন করাই হচ্ছে আদর্শ নষ্ট করার মূল। প্রকৃত মুসলমান না থাকার পরিচায়ক। হজরত ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘এক মুসলিম অন্য মুসলিমের ভাই। সে তার ওপর অত্যাচার করতে পারে না, আর তাকে দুশমনের হাতেও সোপর্দ করতে পারে না। যে ব্যক্তি তার মুসলিম ভাইয়ের প্রয়োজন পূরণে সচেষ্ট হয়, আল্লাহ তার প্রয়োজন পূরণ করে দেন। যে ব্যক্তি কোনো মুসলিমের পার্থিব কষ্ট বা বিপদ দূর করে দেয়, এর বদৌলতে আল্লাহ মহাপ্রলয়ের দিন তার কষ্ট বা বিপদ দূর করে দেবেন। যে ব্যক্তি কোনো মুসলিমের দোষ গোপন রাখে, আল্লাহ মহাপ্রলয়ের দিন তার দোষ গোপন রাখবেন’ (বুখারি, মুসলিম, তিরমিজি, নাসায়ি)। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা পরস্পরের প্রতি হিংসা-বিদ্বেষ পোষণ কর না, নকল ক্রেতা সেজে আসল ক্রেতাকে ধোঁকা দিও না, পরস্পর শত্র“তা পোষণ কর না, পরস্পর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিও না, একজনের দামের ওপর অন্যজন দাম কর না। আল্লাহর দাসেরা! তোমরা ভাই ভাই হয়ে থেকো। এক মুসলিম অন্য মুসলিমের ভাই। সে তাকে নির্যাতন করতে পারে না। হেয় মনে করতে পারে না এবং অপমান-অপদস্থও করতে পারে না। তাকওয়া এখানে। (নিজের বুকের দিকে ইশারা করে এ বাণীটি তিনি তিনবার বললেন)। কোনো ব্যক্তির খারাপ প্রমাণিত হওয়ার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট, সে তার মুসলিম ভাইকে হেয় মনে করে। সব মুসলিমের রক্ত, ধন-সম্পদ এবং মানসম্মান অন্যসব মুসলিমের ওপর হারাম’ (বুখারি, মুসলিম, তিরমিজি, নাসায়ি)। আল্লাহ আমাদের সবাইকে প্রকৃত মুসলমান হওয়ার তৌফিক দান করুন।

লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক।

সর্বশেষ খবর