দীর্ঘ চার মাস পর স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফিরেছে দেশের বিচার বিভাগ। করোনাকালে এর আগের এক বছরে অন্যান্য সব ক্ষেত্রের মতো বিচার কার্যক্রমও যে কমবেশি বিঘ্নিত হয়েছে তা সহজেই অনুমেয়। তবে গত চার মাসে যে অচলাবস্থা চলেছে তার কোনো তুলনা নেই। এমনিতেই মামলার স্তুপ দেশের বিচারব্যবস্থার জন্য বিড়ম্বনা হয়ে বিরাজ করছে বছরের পর বছর। এজন্য প্রয়োজনের তুলনায় বিচারকের সংখ্যাস্বল্পতা যেমন দায়ী তেমন দায়ী আইনজীবীদের একাংশের মামলা ঝুলিয়ে রাখার প্রবণতা। তবে আশার কথা, করোনাকালে টানা চার মাস বিচার কার্যক্রমে যে ক্ষতি হয়েছে তা দ্রুত কাটিয়ে উঠতে বিচার বিভাগের পক্ষ থেকে নানামুখী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বুধবার হাই কোর্টের ৫৩ বেঞ্চের সব কটিতে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে বিচারিক কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর গতকাল থেকে নিম্ন আদালতে স্বাভাবিকতা ফিরেছে। অধস্তন আদালতের বিচারকরা চাইলে সশরীরে উপস্থিতির মাধ্যমে বা ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে যে কোনো আবেদনের শুনানি গ্রহণ করতে পারবেন। সাক্ষ্য গ্রহণসহ চলবে সব ধরনের বিচারকাজ। দেশে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির পর ৫ এপ্রিল থেকে দ্বিতীয় দফা কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ হয়। অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বন্ধ হয়ে যায় আদালতের কার্যক্রমও। এ সময় ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে উচ্চ আদালত ও সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতায় সীমিত পরিসরে শুধু ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের কার্যক্রম চলে। নিম্ন আদালতে সাক্ষ্য গ্রহণ বন্ধ থাকায় কোনো মামলার কার্যক্রমই এগোয়নি। এর আগে গত বছর ২৬ মার্চ সাধারণ ছুটি শুরুর পর দীর্ঘ সময় প্রায় স্থবির থাকে বিচারাঙ্গন। স্বাভাবিক বিচার কার্যক্রম শুরু হওয়ায় বিচারপ্রার্থীদের ক্লান্তিকর অপেক্ষা কিছুটা হলেও কমবে। ইতিমধ্যে উচ্চ আদালতের পক্ষ থেকে মামলার স্তুপ কমাতে আদালতের বাইরে সমঝোতার মাধ্যমে নিষ্পত্তির উদ্যাগ নেওয়া হয়েছে। আমরা আশা করব এ প্রক্রিয়া আরও জোরদার করা হবে। পাশাপাশি বিচার প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত যাতে না হয় সেদিকে আদালত-সংশ্লিষ্টদের প্রয়াস অব্যাহত থাকবে।