শনিবার, ১৪ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা

তিস্তা-ধরলার ভাঙন

মানুষের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দিতে হবে

বন্যা ও নদী ভাঙনের কারণে প্রায় প্রতি বছরই বিপুল পরিমাণ সম্পদের ক্ষতি হয়। সাম্প্রতিক বন্যায় বহু ঘরবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত এবং নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। নদী বা চরাঞ্চলের উল্লেখযোগ্যসংখ্যক মানুষ অপেক্ষাকৃত দরিদ্র বা অনগ্রসর বিবেচিত। এসব অঞ্চলের কোনো স্কুল নদীতে তলিয়ে যাওয়ার অর্থ বহু ক্ষেত্রে শিশুদের পড়াশোনা এক প্রকার বন্ধ হয়ে যাওয়া। পরিবার, সমাজ ও জাতীয় জীবনে এর অভিঘাত গুরুতর। উত্তরাঞ্চলে কুড়িগ্রামের তিস্তা ও ধরলা নদীপাড়ের মানুষের কান্না যেন কিছুতেই থামছে না। প্রতিনিয়ত কষ্টের শিকার মানুষ ভিটেবাড়ি হারিয়ে নিমেষেই অসহায় হয়ে পড়ছে। কৃষিনির্ভর নদীতীরবর্তী মানুষের দুঃখ কেউ বুঝতে চায় না। কোরবানি ঈদের পর জেলার বেশ কয়েকটি গ্রাম নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। নিঃস্ব হয়েছে হাজারো মানুষ। নদী ভাঙন রোধে সরকারের পক্ষ থেকে ৫৯৫ কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হলেও তা বাস্তবায়নে নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। ভাঙন রোধে সময়মতো কাজ শুরু করতে না পারায় কয়েক কর্মকর্তার অনিয়মের কথা বলছে স্থানীয় মানুষ। এসব এলাকায় নদী ভাঙনের ফলে তাদের বাড়িঘর তলিয়ে গেলেও কর্মকর্তাদের দেখা মিলছে না। যেখানে ড্রেজিং করা হচ্ছে, নিয়মবহিভর্‚তভাবে তার পাশেই জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। ঠিকাদার নিয়োগে পাওয়া গেছে বড় অনিয়মের অভিযোগ। অর্থ লুটপাটের জন্য সরকারের নকশা অনুযায়ী বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু করা হয়নি। তিস্তার পুবপাড়ের ভাঙনে গতিয়াসাম, মন্ডলপাড়া, নাখেন্দা, খিতাবখাঁ, বাবুর বাজারসহ কয়েকটি গ্রামের অস্তিত্ব বিলীন হয়ে গেছে। এসব গ্রামের কৃষক, জেলে, শ্রমজীবী কয়েক শ পরিবার একাধিকবার কষ্টের শিকার হওয়ায় মানবেতর-জীবন যাপন করছে। নদী যেহেতু ভেঙে গ্রামের মাঝ দিয়ে ঢুকেছে তাই সোজাসুজি বাঁধ নির্মাণ করলে পুরো গ্রাম রক্ষা হবে। কিন্তু খরচ কমাতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা চাইছেন তীর দিয়ে মাটি ফেলতে। আধুনিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার অধীনে নদী ভাঙনের পূর্বাভাসকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব ও অগ্রাধিকার দিয়ে মানুষকে সুরক্ষা দিতে সব রকমের পদক্ষেপ নিতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর