রবিবার, ১৫ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা

ইসলামী মূল্যবোধ রক্ষায় বঙ্গবন্ধুর অবদান

মো. আবু তালহা তারীফ

ইসলামী মূল্যবোধ রক্ষায় বঙ্গবন্ধুর অবদান

ইসলামের প্রচার-প্রসারের লক্ষ্যে বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালের ২২ মার্চ এক অধ্যাদেশবলে ইসলামের সমুন্নত আদর্শ ও মূল্যবোধের প্রচার ও প্রসার কার্যক্রম বেগবান করার লক্ষ্যে ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন। ২৮ মার্চ, ১৯৭৫ সালে ‘ইসলামিক ফাউন্ডেশন’ অ্যাক্ট প্রণীত হয়। বঙ্গবন্ধু স্বাধীন দেশের নাগরিকদের অনৈতিক কাজ থেকে বিরত রাখার জন্য সুন্দর একটি ইসলামী পরিবেশ তৈরি করেন। তিনি মদ, জুয়া, হাউজি ও ঘোড়দৌড় নিষিদ্ধ করেন। বঙ্গবন্ধু মহানবী (সা.)-এর শিক্ষায় অনুপ্রাণিত হয়ে রেসকোর্স ময়দানে অনৈসলামিক কর্মকাণ্ড বন্ধ করেন। সে জায়গায় ফলবৃক্ষ রোপণ করেন এবং রেসকোর্স ময়দানের নাম রাখেন সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। বিশ্ব মুসলিমকে ঐক্যবদ্ধ এবং ইসলামের প্রচার ও প্রসার বিশেষ করে ইসলামের পথে দাওয়াতি কার্যক্রমের সুবিধার্থে ঢাকার অদূরে টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠানের জন্য সুবিশাল জায়গা বরাদ্দ করেন। যেখানে সারা বিশ্ব থেকে লাখ লাখ ইসলামপ্রিয় মানুষ সমবেত হয়ে ইসলামী জিন্দেগি পরিচালনার পরিকল্পনা প্রণয়ন করেন। সেখান থেকে তারা সারা দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়ার সুযোগ পাচ্ছেন। তাবলিগ জামাতের কেন্দ্রীয় দফতর হিসেবে পরিচিত কাকরাইল মসজিদ সম্প্রসারণ এবং মসজিদের জায়গা বরাদ্দ দেন। আজ আমরা মিডিয়ায় কোরআন তিলাওয়াত শুনছি যা বঙ্গবন্ধুর অবদান। তাঁর নির্দেশেই প্রথম বেতার ও টিভিতে কোরআন তিলাওয়াত ও কোরআনের তাফসির শুরু হয়। এর ফলে বাংলাদেশসহ সারা দুনিয়ার মুসলমান কোরআন তিলওয়াত ও তাফসির শুনে মুগ্ধ হচ্ছেন। আমরা মুসলমান হিসেবে রসুল (সা.)-এর অনুসারী। আমরা বিশ্বাস করি মিলাদুন্নবী পালন করা অবশ্যই নেকের কাজ। কিন্তু সরকারিভাবে এ দিবসটি উদ্যাপনের জন্য সর্বপ্রথম বঙ্গবন্ধুই ব্যবস্থা করেন। ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.), শবেবরাত, শবেকদরে সরকারি ছুটি ঘোষণা করেন এবং এসব দিনে সিনেমা হল বন্ধ রাখার নিদের্শনা দেন। শুধু তাই নয়, বঙ্গবন্ধু নিজে ১৯৭৩ ও ’৭৪ সালে বায়তুল মোকাররম চত্বরে  সরকার-প্রধান হিসেবে উপস্থিত থেকে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উদ্যাপন করে নবীপ্রেমিক হিসেবে নিজেকে প্রমাণিত করেন। বঙ্গবন্ধু জানতেন হাজীরা আল্লাহর মেহমান। এজন্যই হাজীদের সেবায় নিজেকে বিলিয়ে দেন। বঙ্গবন্ধুই স্বাধীন দেশের পক্ষ থেকে প্রথম ইসলামের পবিত্র ইবাদত হজ পালনের ব্যবস্থা করেন। দেশের অর্থনৈতিক দুরবস্থা সত্ত্বেও হজযাত্রীদের জন্য সরকারি তহবিল থেকে অনুদানের ব্যবস্থা করে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। এ ছাড়া বঙ্গবন্ধু ১৯৭৪ সালে মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়ন ও সুসম্পর্ক গড়ে তোলার লক্ষ্যে লাহোরে ইসলামী সম্মেলন সংস্থার (ওআইসি) সভায় যোগদান করেন। আনুষ্ঠানিকভাবে এ সংস্থার সদস্যপদ গ্রহণ করেন।

লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক।

সর্বশেষ খবর