শুক্রবার, ২৭ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা

মিডিয়াকে ভিলেন বানানোর এ চেষ্টা কেন

মহিউদ্দিন খান মোহন

মিডিয়াকে ভিলেন বানানোর এ চেষ্টা কেন

একসময় আমি বাংলা সিনেমার একজন নিয়মিত দর্শক ছিলাম। এ দেশের সবচেয়ে ব্যবসাসফল ছবি ‘বেদের মেয়ে জোছনা’ যেমন দেখেছি তেমন সবচেয়ে ফ্লপ ছবি ‘শীষনাগ’ও বাদ যায়নি। প্রেক্ষাগৃহে বসে বড় পর্দায় ছবি দেখতে আমার ভালোই লাগত। সেই সঙ্গে রুপালি জগতের মানুষ সম্পর্কে কৌত‚হলও কম ছিল না। এ কারণে সত্তরের দশকে মফস্বলের কলেজছাত্র থাকা অবস্থাতেই সাপ্তাহিক ‘চিত্রালী’, ‘পূর্বাণী’ ও ‘সিনেমা’র নিয়মিত পাঠক ছিলাম। ওই পত্রিকাগুলোর ব্যাপক পাঠকপ্রিয়তা ছিল তখন। পত্রিকাগুলোয় দেশ-বিদেশের চলচ্চিত্রবিষয়ক খবর থাকত। নায়ক-নায়িকাদের হাঁড়ির খবরও ছাপা হতো কখনো কখনো। তবে তা কোন নায়ক কোন নায়িকার প্রেমের সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছেন, কে কবে কার বাসায় গিয়েছিলেন, কী কারণে কার সংসার ভাঙল এ-জাতীয় খবর। চলচ্চিত্র অঙ্গনে এসব খবরকে স্ক্যান্ডাল বলা হয়। সে সময় সব অভিনেতা-অভিনেত্রী সতর্ক থাকতেন যাতে কোনো স্ক্যান্ডাল তাকে স্পর্শ করতে না পারে। তারা চলচ্চিত্র সাংবাদিকদের খুব সমীহ করতেন।

ঢাকায় স্থায়ীভাবে আবাস গাড়ার পর যুক্ত হয়েছিলাম গ্রুপ থিয়েটারের সঙ্গে। সম্পৃক্ত ছিলাম রঙ্গনা নাট্যগোষ্ঠীতে। এ নাট্য সংগঠনটির প্রাণপুরুষ ছিলেন অভিনেতা-পরিচালক সিরাজ হায়দার। পাশাপাশি পত্রপত্রিকায় লেখালেখির সুবাদে পরিচয় হয় লুপ্ত দৈনিক ‘দেশ’-এর চলচ্চিত্র পাতার সম্পাদক পরিচালক শহীদুল হক খান ও শরীফুল ইসলাম আলমাজীর সঙ্গে। তাঁদের কাছে ঢাকাই সিনেমার ভিতরের অনেক খবরই জানতে পারতাম। শরীফুল ইসলাম আলমাজী এখন প্রয়াত। তিনি বলতেন, পত্রিকায় নায়ক-নায়িকাদের নিয়ে যেসব খবর দেখেন তার অধিকাংশই ভুয়া। প্রশ্ন করেছিলাম, তারা কিছু বলেন না? মামলাও তো করে দিতে পারেন। আলমাজী ভাই বলেছিলেন, এটা বুঝবেন না। এগুলো হলো পজিটিভ স্ক্যান্ডাল। এতে নায়ক-নায়িকাদের পাবলিসিটি হয়। পত্রিকারও কাটতি বাড়ে। তাই ওঁরা এসব গায়ে মাখেন না।

তার পরও অনেক সময় অনেক অঘটন ঘটেছে আমাদের চিত্রজগতে। আশির দশকের গোড়ার দিকে কোনো একটি খবরের জেরে নায়করাজ রাজ্জাকের হাতে প্রহৃত হন স্বনামধন্য সাংবাদিক আহমদ জামান চৌধুরী; যিনি ‘আজাচৌ’ নামে কলাম লিখে প্রখ্যাত হয়েছিলেন। অভিনেতা রাজ্জাকের এ আচরণে বিক্ষুব্ধ সাংবাদিকসমাজ তাঁকে বয়কট করে। পত্রিকায় রাজ্জাকের খবর, এমনকি সিনেমার বিজ্ঞাপনে নায়ক রাজ্জাকের নাম ও ছবি ছাপানো বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ প্রতিবাদ ঘটনার জন্য আহমদ জামান চৌধুরীর কাছে নায়ক রাজ্জাকের দুঃখ প্রকাশ ও নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার আগ পর্যন্ত চলমান ছিল।

হলে গিয়ে সিনেমা দেখি না বহুদিন। শেষ কবে সিনেমা হলের টিকিট কেটেছিলাম মনে নেই। চলচ্চিত্রের খবরও রাখি না আগের মতো। আগে আমরা আমাদের সিনেমা নিয়ে গর্ব করতাম। নায়ক-নায়িকাদের ভক্তও ছিলাম একেকজন একেকজনের। তর্ক-বিতর্কও হতো কে ভালো অভিনেতা-অভিনেত্রী তা নিয়ে। এখন সিনেমার খবর পাওয়ার জন্য পত্রিকা পাঠকদের এক সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হয় না। দৈনিক পত্রিকাগুলো প্রতিদিন অর্ধপাতা বরাদ্দ রাখে নাটক-সিনেমার খবরের জন্য। সিনেমার নায়ক-নায়িকা বিশেষ করে নায়িকারা চলচ্চিত্র পাতা থেকে পত্রিকার প্রথম পাতায় স্থান করে নিতে সক্ষম হয়েছেন। তবে তা কৃতিত্বপূর্ণ কোনো কাজের চেয়ে নানারকম নেতিবাচক খবরের জন্যই বেশি। সেসব খবর আমাদের চলচ্চিত্র অঙ্গন সম্পর্কে মানুষের মনে নেতিবাচক ধারণা বাড়িয়ে দিচ্ছে।

দেশের উঠতি নায়িকা পরীমণিকে নিয়ে আলোচনা এখনো স্তিমিত হয়ে যায়নি। গত জুনের এক গভীর রাতে আশুলিয়ার বিরুলিয়ার বোট ক্লাব ও গুলশানের অল কমিউনিটি ক্লাবে মাতাল অবস্থায় ভাঙচুর ও গন্ডগোল করার পরই তিনি আলোচনায় আসেন। তাকে হত্যা-ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ এনে একজন ব্যবসায়ীকে অভিযুক্ত করে মামলাও করেন। সে কারণে ওই ব্যবসায়ীকে কয়েকদিন হাজতবাসও করতে হয়। অনেকেই তখন পরীমণির পক্ষ নিয়েছিলেন। কেউ কেউ তাকে ‘দুধে ধোয়া তুলসীপাতা’ হিসেবে উপস্থাপনের চেষ্টাও করেছিলেন। কিন্তু তারা এ প্রশ্নটি আমলে নেননি, এত রাতে একজন নায়িকা কয়েকজন পুরুষসঙ্গীসহ কেন ক্লাবগুলোয় গিয়েছিলেন। কিন্তু ‘ধর্মের কল বাতাসে নড়ে’ প্রবাদটি পরীমণির ক্ষেত্রে আবারও সত্য প্রমাণিত হলো শেষ পর্যন্ত। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে ৪ আগস্ট র‌্যাব পরীমণিকে তার বনানীর বাসা থেকে প্রচুর বিদেশি মদ-বিয়ার, আইস, এলএসডিসহ আটক করে। পত্রিকায় যে খবর বেরিয়েছে তাতে পরীমণির বাসাটিকে ছোটখাটো মদের গুদাম বলা যায়। তার বাসার বেডরুম, ড্রয়িংরুম, ডাইনিংরুম এমনকি ওয়াশরুমেও পাওয়া গেছে মদভর্তি বোতল। এর কয়েকদিন আগে গ্রেফতার হয়েছেন পিয়াসা ও মৌ নামে দুই কথিত মডেল। তাদের বাসা থেকেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী উদ্ধার করেছে মদ, গাঁজা, ইয়াবাসহ নানারকম নেশার সামগ্রী। আর তাদের সূত্র ধরে গ্রেফতার করা হয়েছে রাজ মাল্টিমিডিয়ার স্বত্বাধিকারী নজরুল ইসলাম রাজকে।

যারা গ্রেফতার হয়েছেন তাদের সম্পর্কে বেরিয়েছে নানারকম অনৈতিক কাজে লিপ্ত থাকার তথ্য। খবরে বলা হয়েছে- কথিত মডেল পিয়াসার অধীনে রয়েছে প্রায় ১০০ সুন্দরী যাদের দিয়ে তিনি ফাঁদে ফেলতেন নষ্ট চরিত্রের ধনীর দুলাল ও বিত্তবান ব্যক্তিদের। ‘লেডি মাফিয়া গ্যাং’ নামে পরিচিত চক্রের মক্ষীরানী মৌর অধীনেও রয়েছে অর্ধশতাধিক মেয়ে। উচ্চবিত্তের পরিবারের সন্তান ও ধনাঢ্য ব্যবসায়ীদের ফাঁদে ফেলে গোপনে ছবি তুলে তাদের ব্ল্যাকমেল করত পিয়াসা-মৌ চক্র। ৫ আগস্ট একটি দৈনিকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি একটি বেসরকারি ব্যাংকের এমডি মডেল পিয়াসা ও মৌর চক্করে পড়েন। অসতর্ক অবস্থার ছবি তুলে তার কাছ থেকে চক্রটি হাতিয়ে নেয় কয়েক লাখ টাকা। নিরুপায় হয়ে তিনি এক প্রভাবশালীর শরণ নিয়ে আইনি প্রতিকার চান। এর পরই শুরু হয় অভিযান। বেরিয়ে আসে নেপথ্যের অনেক কাহিনি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পিয়াসা ও মৌর মোবাইল ফোন পরীক্ষা করে এ ধরনের ১৭টি ভিডিওর অস্তিত্ব পেয়েছে। আর পরীমণি সম্পর্কে তো রয়েছে অভিযোগের পাহাড়। তিনি নাকি তার বাসায় মাঝেমধ্যেই মদের আসর বসাতেন। সেসব আসরে সমাজের বিত্তশালী ও উঁচুতলার অনেকেই নিয়মিত অংশ নিতেন। সবচেয়ে বিস্ময়ের ব্যাপার হলো, আমাদের দেশের স্বনামধন্য নায়িকারা সারা জীবন অভিনয়ের উপার্জনে যে সম্পদ করতে পারেননি, মাত্র কয়েক বছরে তার চেয়ে অনেক বেশি সম্পদের মালিক হয়েছেন পরীমণি। তার চলাফেরা, লাইফস্টাইল, বাসা ও গাড়ি বলে দেয় ‘ডাল মে কুচ কালা হ্যায়’।

সমাজে নানারকম অনৈতিক কার্যকলাপ প্রতিনিয়তই ঘটে। খুন, ধর্ষণ, ডাকাতি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, প্রতারণা নতুন কোনো ব্যাপার নয়। কিন্তু পরীমণি-পিয়াসা-মৌরা তাদের অনৈতিক কারবার চালিয়ে আসছিলেন আমাদের শিল্প-সংস্কৃতির অন্যতম শাখা অভিনয়-মডেলিংয়ের নেকাবের আড়ালে। তাই এসব খবরে বিব্রত চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্টরা। তারা এ ঘটনায় তাদের ক্ষোভের কথা জানিয়েছেন গণমাধ্যমকে। পরিচালক কাজী হায়াৎ বলেছেন, যারা নানা বিতর্কিত কাজের মাধ্যমে চলচ্চিত্রশিল্পকে কলুষিত করছেন তাদের এ অঙ্গনে কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। পরিচালক সোহানুর রহমান সোহান বলেছেন, আমাদের চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রিতে অনেক শিল্পী এর আগে কাজ করে গেছেন। তাদের নিয়ে তো কোনো দিন এসব হতো না। পরীমণিকে নিয়ে এসব বিষয় আর মেনে নেওয়া যায় না। সিনিয়র অভিনয়শিল্পী রোজিনা ঘটনাকে চলচ্চিত্রের জন্য দুঃখজনক মন্তব্য করে বলেছেন, কিছু মানুষ নানা বিতর্কিত কর্মকান্ড করে চলচ্চিত্রজগৎটাকে কলুষিত করছেন। আর প্রযোজক খোরশেদ আলম খসরু এসব ঘটনা যাতে আর না ঘটে সেজন্য কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন। (বাংলাদেশ প্রতিদিন, ৬ আগস্ট ২০২১)।

বিষয়টি নিয়ে কথা বলছিলাম দেশের বিশিষ্ট চলচ্চিত্রকার ও রাজনীতিক শফি বিক্রমপুরীর সঙ্গে। তিনি বললেন, ‘একসময় চলচ্চিত্রের মানুষ ছিলাম তাই এসব খবর দেখলে খুব কষ্ট পাই। আমরা যখন এ শিল্পে ছিলাম তখন এমন ছিল না। অভিনেতা-অভিনেত্রীরা পেশাকে আরাধনাজ্ঞানে শ্রদ্ধা করতেন, সবচেয়ে গুরুত্ব দিতেন। রাতারাতি ধনাঢ্য হয়ে ওঠার আকাক্সক্ষায় তারা গড্ডলিকা প্রবাহে গা ভাসাতেন না, অনৈতিক পথে পা বাড়াতেন না। নিজেদের ইমেজ রক্ষার তাগিদেই তারা কোনো নেতিবাচক কাজে সম্পৃক্ত হতেন না। কিন্তু আজ এসব কী দেখছি! একটি মেয়ে সিনেমায় আসতে না আসতেই বিলাসবহুল গাড়ি-বাড়ির মালিক হয়ে যায়! ওদের হাতে তো আলাদিনের চেরাগ নেই। তাহলে? আসল কথা হলো পচন। পচন ধরেছে সবখানে। সিনেমাও এর বাইরে নয়। দুঃখটা কী জানো? আমি যে দুটি কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িয়ে ছিলাম সে দুটি ক্ষেত্রেই চরম অবক্ষয় সৃষ্টি হয়েছে। যেমন চলচ্চিত্রে তেমন রাজনীতিতে। চলচ্চিত্রে পরীমণি-পিয়াসারা আর রাজনীতিতে হেলেনা-দর্জি মনিররা পরিবেশ দূষিত করছে। সেজন্যই এখন হাত গুটিয়ে বসে আছি।’ শফি বিক্রমপুরীর এ দুঃখবোধ অসংগত নয়। যিনি যে সেক্টরে কাজ করেন সে সেক্টরের অধঃপতন দেখলে দুঃখবোধ হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এ অবক্ষয়ের ধারা কি বহমান থাকবে? নাকি এর রাশ টেনে ধরা সম্ভব হবে?

সর্বশেষ খবর হলো, কয়েকবারের রিমান্ড শেষে পরীমণিকে জেলহাজতে পাঠিয়েছে আদালত। তার বিষয়টি এখন আদালতের অধীন। বিচারে তিনি দোষী সাব্যস্ত হবেন কি হবেন না তা বলার এখতিয়ার এ মুহুর্তে কারও নেই। কিন্তু এ সময়ে কেউ কেউ পরীমণির পক্ষে সোচ্চার হওয়ার চেষ্টা করছেন। কিছু ব্যক্তি পরীমণিকে ‘অবৈধভাবে’ গ্রেফতারের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন। তার মুক্তি চাচ্ছেন। গণতান্ত্রিক অধিকার থাকায় তাদের এ দাবির বিষয়ে কারও কোনো আপত্তি থাকার কথা নয়। কিন্তু যখন এসব প্রতিবাদ করতে গিয়ে এ বিষয়ে সংবাদ পরিবেশনকারী গণমাধ্যমকে আসামির কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর চেষ্টা হয়, আপত্তি ওঠে তখনই। কদিন আগে পত্রিকান্তরে লন্ডনে অবস্থানকারী এক প্রবীণ সাংবাদিক ও কলাম লেখকের লেখায় কিছু মিডিয়ায় তাঁর ভাষায় পরীমণির চরিত্রহননের অপচেষ্টায় তাঁর মনঃকষ্টের বিষয়টি দেখে খুবই অবাক হলাম। তিনি পরীমণির গ্রেফতারকে একজন নারীর জন্য অবমাননাকর বলে মন্তব্য করেছেন। তীব্র সমালোচনা করেছেন রাষ্ট্র তথা র‌্যাব-পুলিশের ভূমিকার। কিন্তু আমরা যারা ঘটনা ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রত্যক্ষ করেছি, সংবাদপত্রের পাতায় খবর-ছবি দেখেছি তাদের কাছে মনে হয়নি র‌্যাব-পুলিশ পরীমণির সঙ্গে কোনো অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছে। বরং তাকে সম্মানের সঙ্গেই নিয়ে যাওয়া হয়েছে। দুজন মহিলা পুলিশ পরীমণির দুই হাত ধরে রেখেছিলেন। তাকে হাতকড়াও পরানো হয়নি। অথচ রাজনৈতিক কর্মীদের আটকের সময় পুলিশ হাতকড়া লাগিয়ে থানায় নিয়ে যায়। তাহলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কোন দিক দিয়ে পরীমণিকে অসম্মান করল? এখানে না বলে পারছি না, ২০০৬ সালের জরুরি অবস্থার সময় দেশের দুই সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে যৌথ বাহিনী গ্রেফতার করেছিল। ওই গ্রেফতারের সময় তাঁদের সঙ্গে যে অসম্মানজনক আচরণ করা হয়েছিল তা সবাইকে ব্যথিত করেছিল। বিশেষ করে শেখ হাসিনাকে যেভাবে গ্রেফতার করা হয়েছিল তাতে সব বৈরিতা ভুলে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছিলেন। তখন কিন্তু লন্ডনপ্রবাসী বর্ষীয়ান সাংবাদিক মহোদয়কে আমরা টুঁশব্দটি করতে দেখিনি। এখন যখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অনৈতিক কার্যকলাপের বিরুদ্ধে অভিযানে নেমেছে তখন সে অভিযানকে প্রশ্নবিদ্ধ করার এ প্রয়াস কেন?

‘কলুষমুক্ত সমাজ চাই’ এ আপ্তবাক্যটি আমরা প্রায়ই উচ্চারণ করি। কিন্তু দুঃখজনক হলো, কর্তৃপক্ষ যখন সে ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ নেন, রহস্যজনক কারণে আমাদের কেউ কেউ সমালোচনায় প্রবৃত্ত হই। বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনকারী গণমাধ্যমকে ভিলেন বানানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু কেন এ স্ববিরোধিতা, কেন এ আত্মপ্রবঞ্চনা?

লেখক : সাংবাদিক ও রাজনীতি বিশ্লেষক।

সর্বশেষ খবর