করোনা মহামারীতে যখন জনজীবন বিপর্যস্ত, প্রতিদিন সংক্রমণ ও মৃত্যু ঘটছে, তখন ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবের খবরটি বাড়তি উদ্বেগ তৈরি করে বটে। এ যেন ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’। ডেঙ্গু পরিস্থিতি এখনো নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আছে। কিন্তু সজাগ না হলে যে কোনো সময় সংক্রমণ বেড়ে যেতে পারে বলে জনস্বাস্থ্যবিদরা আশঙ্কা করছেন। চলতি বছরে যত ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে তার ৫৯ দশমিক ৫ শতাংশই জুনে। যতই দিন যাচ্ছে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমারজেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের দেওয়া তথ্যে জানা যায়, বৃহস্পতিবার ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২৬৭ জন। এর মধ্যে রাজধানীর হাসপাতালে ভর্তি ২১৭ জন, বাকি ৫০ জন রাজধানীর বাইরে সারা দেশের বিভিন্ন বিভাগের হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে বর্তমানে সারা দেশের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ১ হাজার ৯০ জন। এজন্য করোনা মহামারীর মধ্যে নতুন দুশ্চিন্তা হয়ে উঠছে ডেঙ্গু। ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসায় সরকারি কয়েকটি হাসপাতাল নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ, মিটফোর্ড হাসপাতাল, রেলওয়ে জেনারেল হাসপাতাল, আমিনবাজার ২০ শয্যা হাসপাতাল, লালকুঠি হাসপাতাল, কামরাঙ্গীর চর ৩১ শয্যা হাসপাতালসহ ঢাকার বাইরে গাজীপুরের শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালকেও ডেঙ্গু রোগী ভর্তির জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এসব হাসপাতালে বাড়ছে রোগীর চাপ। অনেক ক্ষেত্রে ডেঙ্গু ও করোনার উপসর্গ প্রায় অভিন্ন। জ্বর, শ্বাসকষ্ট দুই রোগেরই উপসর্গ। তবে করোনা শরীরের অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গকে যেভাবে অকেজো করে দেয় ডেঙ্গু তা করে না। ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশা। ডেঙ্গু থেকে বাঁচতে ডেঙ্গু মশা নিধন করতে হবে। সরকারের পাশাপাশি সাধারণ মানুষকেও এগিয়ে আসতে হবে। ডেঙ্গু মশা থেকে বাঁচতে যার যার বাড়ির সামনে-পেছনে সব জায়গা পরিষ্কার রাখতে হবে। ময়লা-আবর্জনা যত্রতত্র ফেলা যাবে না। সরকার ও জনগণের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমাদের ডেঙ্গু সমস্যা দূর হবে।