রবিবার, ২৯ আগস্ট, ২০২১ ০০:০০ টা

কাবুলে আত্মঘাতী হামলা

আফগানিস্তানের জন্য অশনিসংকেত

আফগানিস্তান ও হানাহানি যেন সমার্থক শব্দ হয়ে আছে চার দশক ধরে। দক্ষিণ এশিয়ার এ দেশটি থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের চুক্তি হয় গত বছর। এ কারণে আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠার একটি ক্ষীণ সম্ভাবনাও সৃষ্টি হয়। মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের আগেই পাকা আপেলের মতো কাবুল সরকারের পতন ঘটায় সে সম্ভাবনা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে। তবে আফগানিস্তানে আধিপত্য বিস্তারকারী তালেবানরা সব পক্ষকে আস্থায় নিয়ে কাজ করার এবং চরমপন্থা পরিহারের ঘোষণা দিলে কিছুটা হলেও স্বস্তির পরিবেশ সৃষ্টি হয়। কিন্তু সে স্বস্তি কেড়ে নিয়েছে কাবুল বিমানবন্দরে দুটি আত্মঘাতী সন্ত্রাসী হামলা। আফগানিস্তানে মার্কিন যুদ্ধ অবসানের শেষ মুহুর্তে গত বৃহস্পতিবারের ভয়াবহ জোড়া বিস্ফোরণ পরিস্থিতির দ্রুত পরিবর্তনের আশঙ্কা জোরদার করেছে। এতে বদলে যেতে পারে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ তথা সে দেশের সরকারের আগের পরিকল্পনা। কৃষ্ণগহ্‌বরে অভিকর্ষের মতো আফগানিস্তান টানতে পারে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাকে। সংস্থাটি ফিরতে পারে জটিল সন্ত্রাসবাদবিরোধী মিশনে, যা চলতে পারে আগামী কয়েক বছর। তালেবান বাহিনী আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার ১০ দিন পর বৃহস্পতিবার এ জোড়া বিস্ফোরণে মৃতের সংখ্যা ১৭৫ ছাড়িয়ে গেছে। এর মধ্যে রয়েছেন ১৩ মার্কিন সেনাও। আহত হয়েছেন ২০০ জনের বেশি। তালেবানের সঙ্গে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিদেশি সেনা প্রত্যাহারে যুক্তরাষ্ট্রের চুক্তির পর আফগানিস্তানে এই প্রথম মার্কিন সেনা নিহতের ঘটনা ঘটল। হামলার দায় স্বীকারকারী জঙ্গি সংগঠন আইএসের খোরাসান শাখা বা আইএস-কের বিরুদ্ধে লড়তে আমেরিকা আফগানিস্তানে অবস্থান করার সিদ্ধান্ত নিলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে। আইএস-কে যেহেতু তালেবান ও যুক্তরাষ্ট্র উভয় পক্ষের অভিন্ন শত্রু সেহেতু তালেবান ও আমেরিকার মধ্যে সমঝোতা সৃষ্টির সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তবে ঘটনা যা-ই হোক, যুদ্ধের দাবানল ছড়িয়ে পড়লে তা আফগানদের দুর্ভাগ্যই শুধু বাড়াবে। দক্ষিণ এশিয়ার জন্যও যা অশনিসংকেত হয়ে উঠতে পারে; যা সবার কাছেই অপ্রত্যাশিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর