বুধবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

পরিবেশ ও জীবজগৎ

আফতাব চৌধুরী

যে পরিবেশ ও প্রকৃতির মধ্যে লালিতপালিত, নিজের অস্তিত্ব, আর্থিক উন্নতি, সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য বজায় রাখার জন্য সেই পরিবেশ ও প্রকৃতিকে মানুষ বেশির ভাগ সময়ই বিস্মৃত হয়, ভুলে থাকে। মানুষ আজ শুধু ব্যস্ত নিজেকে নিয়েই। সভ্যতার অহংকার তাকে গ্রাস করে। কথায় বলে, প্রতি ক্রিয়ারই সমান ও বিপরীত প্রতিক্রিয়া রয়েছে। আর মানুষকে তারই মাশুল দিতে হচ্ছে প্রতিদিন একটু একটু করে। প্রকৃতি তার নিজস্ব নিয়মে প্রতিশোধ নিচ্ছে। মানুষ দেখছে, ভাবছে, কিন্তু নিজেরাই নিজেদের জালে ফেঁসে যাচ্ছে।

প্রকৃতি তাকে যে সম্পদ দিয়েছিল দুই হাত ভরে, আর্থিক-বাণিজ্যিক প্রয়োজনে মাত্রাছাড়া ব্যবহারে সে সম্পদ নিঃশেষ হবে একদিন। মানুষ দিনের পর দিন আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুুক্তি ব্যবহার করে নীরবে ধ্বংস করে চলেছে সবুজ প্রকৃতি। একটি ছোট উদাহরণ। যে ডিডিটি বিষাক্ত কীটনাশক তার উৎপত্তি বা সৃষ্টিকালীন ব্যবহারের সঙ্গে আজকের ব্যবহারের ধরন কিন্তু সম্পূর্ণ আলাদা। এ ডিডিটি তৈরি হয়েছিল বিশ্বযুদ্ধের সময়। রাসায়নিক সমরাস্ত্র হিসেবে এর তখন ব্যবহার হতো। কিন্তু যুদ্ধ শেষ হলেও দেখা গেল হাতে অনেক ডিডিটি কীটনাশক রয়ে গেছে। কী হবে এত কীটনাশক দিয়ে? শুরু হলো কীটনাশক বিক্রি। বলা হলো এ কীটনাশক যথেষ্ট উন্নতমানের, এমনকি ম্যালেরিয়া প্রতিরোধেও ব্যবহৃত হলো ডিডিটি। কিছুদিন ভালো ফল পাওয়া গেল। ধীরে ধীরে ডিডিটি ছড়িয়ে পড়ল চাষের খেতে, খামারে। ডিডিটির এ ব্যবহারে ক্ষতিকারক কীটনাশকের বিনাশ ঘটল ঠিকই কিন্তু সমস্যা বাধল অন্য জায়গায়। ডিডিটির ব্যবহারে পরাগ সংযোগকারী পতঙ্গেরও বিলুপ্তি ঘটল। ফলে গাছ জন্মানো বন্ধ হলো।  প্রখ্যাত পরিবেশবিদ রাচেল কারসন তাঁর ‘সাইলেট স্প্রিং’ বইতে এ-বিষয়ে সচেতনতা গড়ে তোলেন। বিজ্ঞানী তাঁর বার্তাটুকু দিয়েছেন। এখন উদ্যোগ নিতে হবে জনসাধারণকে।


লেখক : সাংবাদিক-কলামিস্ট। 

সর্বশেষ খবর