শনিবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

রেলওয়ে পরিবহন

দুর্নীতি ও অপচয় বন্ধ করতে হবে

রেলওয়ে হলো সবচেয়ে নিরাপদ ও সাশ্রয়ী পরিবহন। কিন্তু স্বাধীনতার পর প্রতিটি সরকার গরিববান্ধব এ পরিবহনের ওপর ক্রমাগত অবহেলা দেখিয়ে আসছে। দেশের পরিবহনব্যবস্থা মোটামুটি স্বাভাবিক হলেও এখনো ৯২টি মেইল, লোকাল ও কমিউটার ট্রেন চালু হয়নি রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের অনাগ্রহের কারণে। দেশে ৩৫৯টি যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করে। এর মধ্যে আন্তনগর ট্রেন ১০৪টি। ঢাকা-কলকাতা পথে চলে চারটি ট্রেন। বাকিগুলো মেইল, লোকাল ও কমিউটার ট্রেন হিসেবে চলাচল করে। তার পরও সোয়া লাখ কোটি টাকায় দেশজুড়ে চলমান মেগা প্রকল্পের বিশাল কর্মযজ্ঞের চাপ সামলে যাত্রীসেবায় মনোযোগ দিতে পারছে না বাংলাদেশ রেলওয়ে। যাত্রীদের নির্ভরতা বাড়লেও সেবার মান কমছে। অব্যবস্থাপনা, অনিয়ম, দুর্নীতির কারণে প্রত্যাশা পূরণ করতে পারছে না রেলওয়ে। রেলপথ মন্ত্রণালয় চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে বরাদ্দ পেয়েছে ১৭ হাজার ৪৮৬ কোটি টাকা। তবে রেলের বিনিয়োগ মূলত প্রকল্পকেন্দ্রিক। রেললাইন ব্যবস্থাপনা ও রেল পরিচালনায় আলাদা করে কোনো বিনিয়োগ নেই। ফলে রেলপথের সংস্কার হচ্ছে না। দীর্ঘদিন রেলে কোনো জনবল নিয়োগ হচ্ছে না। উপরন্তু বছরে হাজারখানেক অভিজ্ঞ কর্মী অবসরে চলে যাচ্ছেন। সবচেয়ে নিরাপদ বাহন হিসেবে পরিচিত রেলে গত ১০ বছরে দুর্ঘটনা ঘটেছে প্রায় আড়াই হাজার। যার ৯০ শতাংশই ঘটেছে লাইনচ্যুতির কারণে। এসব দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন প্রায় ৩৫০ জন। রেলের উন্নয়নের যে পরিকল্পনা সেখানেই ঘাটতি আছে। রেলে নতুন বগি, ইঞ্জিন দরকার। রেলপথের সংস্কার ও নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ দরকার। নতুন বিনিয়োগ, অবকাঠামোও দরকার। কিন্তু সবার আগে দরকার দক্ষ জনবল। চালকের ভুল কিংবা সিগন্যাল সিস্টেমের ত্রুটিও রয়েছে। উন্নয়ন প্রকল্পগুলো সুচারুরূপে বাস্তবায়ন হলে মানুষ এর সুফল পাবে। রেলওয়ের আয় বাড়াতে হলে এর যাত্রীসেবার মানের পাশাপাশি রেলপথের দৈর্ঘ্যও বাড়াতে হবে। রেলওয়ের দুর্নীতি ও অপচয় বন্ধ করতে পারলে রাষ্ট্রীয় এ পরিবহনটিকে লোকসানের বোঝা বইতে হবে না।

 

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর