শনিবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

বায়ুদূষণ

এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে

পরিবেশবিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা গ্রিন পিস তাদের সর্বশেষ প্রতিবেদনে যে তথ্য দিয়েছে তা ভয়াবহ। তারা বলছে, বায়ুদূষণের কারণে বাংলাদেশে বছরে প্রায় সোয়া লাখ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। বায়ুদূষণজনিত রোগে কয়েক হাজার শিশুর অকালমৃত্যু হয়। বছরে প্রায় ৪০ লাখ মানুষ অ্যাজমা বা শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়। এর পাশাপাশি আছে শব্দদূষণ। ঢাকার এক-তৃতীয়াংশ মানুষ এখন শব্দদূষণে আক্রান্ত। এভাবে শব্দদূষণ অব্যাহত থাকলে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে ঢাকা শহরের মোট জনসংখ্যার তিন ভাগের এক ভাগ কানে কম শুনবে। এর একটি অংশ পুরোপুরি বধির হয়ে যাবে। শিকাগোভিত্তিক এনার্জি পলিসি ইনস্টিটিউট প্রকাশিত সবশেষ এয়ার কোয়ালিটি লাইফ ইনডেক্স (একিউএলআই) বলছে, বাংলাদেশের বাতাসের বিষাক্ত কণাগুলো সহনীয় মাত্রায় থাকলে এ দেশের মানুষ হয়তো ছয় দশমিক সাত বছর বেশি বাঁচতে পারত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নির্দেশিকা পূরণ হলে বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ু আরও প্রায় সাত বছর বেড়ে যেত। দেশের ৬৪ জেলার বায়ুতেই দূষণকারী বিষাক্ত কণার উপস্থিতি চার গুণ বেশি। বিশেষজ্ঞদের মতে বাতাসের বিষাক্ত কণা বা পিএম ২.৫ (পার্টিকুলেট ম্যাটার) আসে মূলত গাড়ির ইঞ্জিন, বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোয় ব্যবহৃত জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে। এগুলো নির্ধারিত মাত্রার চেয়ে বেশি শরীরে প্রবেশ করা মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। ওয়ার্ল্ড এয়ার কোয়ালিটি রিপোর্ট ২০২০-এ বলা হয়েছে, দেশের সবচেয়ে দূষিত বিভাগ হচ্ছে ঢাকা ও খুলনা। তবে বায়ুদূষণ হঠাৎ করে ব্যাপক মাত্রায় কমিয়ে আনা কঠিন। কারণ এর জন্য দূষণ ঘটানো বহু ইটের ভাটা, কারখানা, যানবাহন ইত্যাদি বন্ধ করতে হবে। শহরে যখন তখন যত্রতত্র খোঁড়াখুঁড়ির বিষয়টিকে পরিকল্পনার আওতায় আনা এবং দূষণ ঠেকাতে কিছু নিয়মকানুন কঠোরভাবে বাস্তবায়নের সুযোগ আছে। পাকা রাস্তার বাইরের সব জায়গায় ঘাসের আচ্ছাদনের দিকে গুরুত্ব দিতে হবে। সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে সড়ক বিভাজকে গাছ লাগানো যেতে পারে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর