সোমবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

পাকিস্তানের বম্বশেল হতবাক বিশ্ব সম্প্রদায়

মেজর জেনারেল এ কে মোহাম্মাদ আলী শিকদার পিএসসি (অব.)

পাকিস্তানের বম্বশেল হতবাক বিশ্ব সম্প্রদায়

পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মঈদ ইউসুফ বলেছেন, বিশ্ব সম্প্রদায় যদি আফগানিস্তানের তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি না দেয় তাহলে আবার ৯/১১-এর মতো ঘটনা ঘটবে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান একটু ঘুরিয়ে প্রায় একই কথা বলেছেন। আন্তর্জাতিক অঙ্গনের প্রচন্ড সমালোচনার মুখে পাকিস্তানি মিডিয়া এবং সরকারের মুখপাত্রগণ এখন মঈদ ইউসুফের কথাটির পিছনে নিজেদের আড়াল করার চেষ্টা করছেন। কিন্তু সামরিক বাহিনী ও সরকার তালেবানের বিজয়কে যে পাকিস্তানের বিজয় হিসেবে দেখছে সেটা এখন আর কারও কাছে নতুন কথা নয়। পাকিস্তানিরা মনে করছে, তালেবান তদের প্রক্সি হিসেবে কাজ করবে। প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান উল্লসিত হয়ে বলেছেন, দাসত্বের শিকল ভেঙে এবার আফগানবাসী সত্যিকার মুক্তি অর্জন করেছে। এই কথার মধ্য দিয়ে পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠীর দ্বিমুখী আচরণ এবং ভন্ডামির আরেকটি নতুন উদাহরণ সৃষ্টি হলো। ২০ বছর যদি আমেরিকানদের দ্বারা আফগানবাসী শৃঙ্খলাবদ্ধ হয়ে থেকে থাকে তাহলে সেই কাজে আমেরিকার বড় সহযোগী পাকিস্তান। পাকিস্তানের ভূখন্ড এবং আকাশসীমা ব্যবহার করে আফগানিস্তানে সামরিক অভিযান ও ২০ বছর তালেবানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে আমেরিকান সেনাবাহিনী। আমেরিকা তালেবানকে জঙ্গি সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা দিয়ে সামরিক অভিযান চালিয়েছে এবং তাতে সঙ্গী হয়েছে পাকিস্তান। অর্থাৎ অফিশিয়ালি পাকিস্তান স্বীকার করেছে তালেবান একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। তাই ইমরান খানের কথার মধ্য দিয়ে পুরনো অভিযোগটিই আবার প্রমাণ হলো, বাহ্যিকভাবে আমেরিকার সঙ্গী হলেও তারা সব সময় তালেবানি সন্ত্রাসী সংগঠনকে সর্বতোভাবে সহযোগিতা ও সমর্থন অব্যাহত রেখেছে। এখন বিশ্ব সম্প্রদায় যখন তালেবানকে স্বীকৃতি দিতে চাইছে না, তখন পাকিস্তান হুমকি দিচ্ছে, এমনটা হলে আবার ৯/১১ ঘটবে। সুতরাং আগে একাধিকবার যেমন হয়েছে, তেমনি আবার প্রমাণিত হলো জঙ্গি-সন্ত্রাস বিশ্বায়নের মূল কালপ্রিট পাকিস্তান। সোভিয়েত ইউনিয়ন চলে যাওয়ার পর আমেরিকাসহ বিশ্ব সম্প্রদায় যদি জঙ্গি-সন্ত্রাসী রাষ্ট্র হিসেবে পাকিস্তানকে বয়কট করত, তাহলে তালেবানের উত্থান হতো না, ৯/১১ হয়তো ঘটত না এবং ২০২১ সালে আমেরিকাকে এভাবে লজ্জার মধ্যে পড়তে হতো না। এবার ইমরান খানের দাসত্বমুক্ত হওয়া কথায় আসি। একটা জাতি-রাষ্ট্র যখন বিদেশি শক্তির কবল থেকে দাসত্বমুক্ত হয় তখন সেই দেশের জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত আনন্দের জোয়ার কেমন হয় তার চিত্র সারা বিশ্বের মানুষ দেখেছে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় বাংলাদেশে। ঢাকার লাখ লাখ মানুষ সেদিন সন্ধ্যায় রাস্তায় নেমে উল্লাস করেছে। কিন্তু আফগানিস্তানের দাসত্ব মুক্তি নয়, বরং উল্টো একটা করুণ চিত্র সারা বিশ্বের মিডিয়ায় ধরা পড়েছে। রাজধানী কাবুলে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘরের বাইরে আসছে না। কয়েক দিন আগেও কাবুলের রাস্তায় মেয়েরা-নারীরা যেকরম স্বাধীনভাবে চলাফেরা করেছে তার ছিটেফোঁটাও নেই। দেশব্যাপী বৃহত্তর মানুষের চিত্রটা আরও করুণ। আফগানিস্তানের মোট জনসংখ্যা চার কোটি। গত জুলাই মাসে জাতিসংঘের শরণার্থী কমিশনের প্রতিবেদন অনুযায়ী ২৬ লাখ আফগানবাসী দীর্ঘদিন ধরে পার্শ্ববর্তী দেশসমূহে মানবেতর জীবনযাপন করছে। প্রায় দুই কোটি মানুষ গত কয়েক বছর ধরে তালেবানের ভয়ে ঘরবাড়ি ছেড়ে অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুত হয়ে ভাসমান অবস্থায় আছে। ১৫ আগস্ট তালেবান বাহিনী কাবুল দখলের পর হাজার হাজার মানুষ প্রাণ বাঁচাতে কাবুল বিমানবন্দরে হুমকি খেয়ে পড়েছে। সুতরাং দাসত্বমুক্ত হলো কারা- বরং তালেবানের মতো একটা মধ্যযুগীয় বর্বরদের কবলে আবার পড়ে গেল আফগানিস্তানের বৃহত্তর মানুষ। ধর্মের নামে মিথ্যাচার ও ভন্ডামির জন্য ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের অর্ধকবর হলেও কোনো শিক্ষা তাদের হয়নি। বরং সেই একই পথেই তারা হাঁটছে। ইতিহাস থেকে দুটি ছোট উদাহরণ দিই। ১৯৭১ সালের মার্চ মাসে ঢাকায় বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে প্রথম দিন আলোচনার শুরুতে ইয়াহিয়া খান হুইস্কির (মদ) গ্লাস হাতে নিয়ে বলেন, আসুন শেখ মুজিব আমরা একসঙ্গে ইসলামের গৌরব রক্ষা করি (হুসেন হাক্কানি-পাকিস্তান-বিটুইন মস্ক অ্যান্ড মিলিটারি, পৃ-৭৫)। মেজর জেনারেল শের আলী খান ছিলেন ইয়াহিয়ার প্রচারমন্ত্রী। এই শের আলী খান সেনানিবাসে সৈনিকদের উদ্দেশে এবং সভা-সমাবেশে বক্তৃতার সময় বলতেন, তিনি প্রতিদিন পাঁচ বেলায় আল্লাহর সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করেন এবং কথা বলেন (প্রাগুক্ত পৃ-৫৫)। চিরশত্রু ভারতকে শায়েস্তা করা ও জিহাদের মাধ্যমে কাশ্মীর উদ্ধার করার মতো অবাস্তব উন্মাদনায় পাকিস্তানি শাসকবর্গ এতই ব্যস্ত যে, দেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের কথা তারা ভাবার সময় পান না। যে জন্য দেশ সামগ্রিকভাবে তিমির থেকে আরও তিমিরে তলিয়ে যাচ্ছে। একাত্তরে বাংলাদেশে লজ্জাকর পরাজয় তো রয়েছেই, তার সঙ্গে ১৯৪৭-৪৮, ১৯৬৫ ও ১৯৯৯ সালের কারগিল যুদ্ধ, এই তিনটা যুদ্ধই প্রথম শুরু করেছে পাকিস্তান এবং সেই সূত্রে তারা আগ্রাসী দেশ, কিন্তু তিনটা যুদ্ধেই পাকিস্তান ভারতের কাছে শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়েছে। ভারতের বিরুদ্ধে চরম অন্ধ শত্রুতার কবলে পড়ে পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠী নিজ রাষ্ট্রের অস্তিত্বের আসল হুমকির দিকে না তাকিয়ে জঙ্গি-সন্ত্রাসীদের দ্বারা ভারতের জন্য হুমকি সৃষ্টি করছে। সে কারণে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন পাকিস্তানি গবেষকগণই বলছেন, এই জঙ্গি-সন্ত্রাসীরা ফ্রাঙ্কেনস্টাইনের দানবের মতো পাকিস্তানের সর্বনাশ ঘটাবে এবং সেদিন হয়তো আর বেশি দূরে নয় যখন সামগ্রিকভাবে পাকিস্তান বলতে আর কিছু থাকবে না। তাই মিলিটারির পুতুল, ক্ষমতাসীন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের নেতৃবৃন্দ নার্ভাস ও অস্থির। সুতরাং টিটিপি, আইএস, আল-কায়েদা জঙ্গি থেকে নিজেদের পীঠ বাঁচানোর উপায় হিসেবে আবার ধর্মকে সামনে এনে আহ্বান জানাচ্ছে,  আফগানিস্তানে ইসলামের বিজয় ছড়িয়ে দিতে এখন সবাই মিলে কাশ্মীর মুক্ত করার অভিযানে নামতে হবে। এই অপচেষ্টা পাকিস্তান গত ৭৪ বছর ধরে করে আসছে, যার জন্য ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে কয়েকটি বড় যুদ্ধ হয়ে গেছে, যে কথা একটু আগে উল্লেখ করেছি। কাশ্মীরের জনগণ নয়, পাকিস্তানই ভারত থেকে কাশ্মীরকে বিচ্ছিন্ন করতে চায়। দুয়েকটি উদাহরণ দিই। ১৯৬৫ সালের যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সেনাপ্রধান ছিলেন জেনারেল মুহম্মদ মুসা। তিনি আত্মজীবনীমূলক একটি বই লিখেছেন, যার শিরোনাম- সিপাই টু জেনারেল। এই বইয়ে বিস্তারিত বর্ণনা আছে, যুদ্ধ শুরু হওয়ার তিন-চার মাস আগেই বিশেষ কমান্ডো বাহিনীর পুরো একটা ব্যাটালিয়ন সংখ্যক সৈন্য মুজাহিদ ছদ্মবেশে কাশ্মীরের অভ্যন্তরে পাঠায় পাকিস্তান এবং সেই সূত্রেই পরিপূর্ণ যুদ্ধ বেধে যায়। এর সঙ্গে কাশ্মীরি জনগণের কোনো সম্পর্ক ছিল না। ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল ও নিউজউইকের সাংবাদিক জাহিদ হুসেন কর্তৃক লিখিত ফ্রন্টলাইন পাকিস্তান গ্রন্থে বছর, মাস, তারিখসহ উল্লেখ আছে, লস্কর-ই-তৈয়বা ও জইশ-ই-মুহম্মদসহ ডজনখানেক জঙ্গি সংগঠনকে কাশ্মীর ও ভারতের বিরুদ্ধে কীভাবে ব্যবহার করছে আইএসআই। ২০০১ সালে আমেরিকান সেনা অভিযানে তালেবান, আল-কায়েদাসহ সব জঙ্গি সংগঠন আফগানিস্তান ছেড়ে পাকিস্তানে আশ্রয় নেয়। কাশ্মীর হয়ে ওঠে তাদের নতুন যুদ্ধক্ষেত্র। ২০০২ সালের ১৫ মে কাশ্মীরের কালুচকে অবস্থিত ভারতীয় সেনাক্যাম্পের আবাসিক এলাকায় জঙ্গিরা আত্মঘাতী বোমা হামলা চালায় এবং তাতে নারী-শিশুসহ ৩৫ জন নিহত হন। দুই পারমাণবিক শক্তি ভারত-পাকিস্তান আবার যুদ্ধের কিনারায় চলে আসে, শঙ্কিত হয় বিশ্ব সম্প্রদায়। আমেরিকার সেক্রেটারি অব স্টেট কলিন পাওয়েল ও সিআইয়ের পরিচালক জর্জ টেনেট পাকিস্তানে আসেন এবং প্রেসিডেন্ট মোশাররফ ও আইএসআই প্রধান মেজর জেনারেল খালিদ মাহমুদকে সরাসরি হুমকি দেন, কাশ্মীরে জঙ্গি সন্ত্রাসী পাঠানো যদি বন্ধ না করা হয় তাহলে পাকিস্তানকে জঙ্গি রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা এবং পরিপূর্ণ অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। আমেরিকার হুমকিতে ২০০২ সালের মে মাসের শেষ সপ্তাহে আইএসআই প্রধান জেনারেল খালিদ সব জঙ্গি সংগঠনের নেতাদের মুজাফরাবাদে ডাকেন এবং নির্দেশ দেন, তারা সবাই আপাতত কাশ্মীরের অভ্যন্তরে যেন তাদের জিহাদিদের না পাঠায়। তাতে জঙ্গি সংগঠনের নেতারা জেনারেল খালিদের ওপর প্রচন্ড ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং হুমকি দেন, বিশ্বাসঘাতকতা করার জন্য তারা পাকিস্তানি মিলিটারিকে দেখে নিবেন (জাহিদ হুসেন, ফ্রন্টলাইন পাকিস্তান পৃ-১১১-১১২)। এ ঘটনার সূত্রেই বলা যায়, শুধু অন্ধ ভারত বিরোধিতায় আজ কাবুলে বর্বর জঙ্গি তালেবানের ক্ষমতা দখলকে স্বাগত জানান ও উল্লাস করার পরিণতি পাকিস্তানের জন্য আত্মঘাতী হয়ে উঠবে। তালেবানি শাসন সুসংহত হলেই বিশ্বের সব প্রান্তের জঙ্গি সংগঠনের আশ্রয়স্থল হবে আফগানিস্তান। আর তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) এবং আল-কায়েদা আইএসসহ পাকিস্তানিভিত্তিক জঙ্গি সংগঠনগুলো আগের মতোই পাকিস্তানের অভ্যন্তরে আক্রমণ চালাবে, যেমন ২০১৪ সালে পেশোয়ারের স্কুলে টিটিপি আক্রমণ চালিয়ে ১৪৯ কিশোর-কিশোরীকে হত্যা করেছিল। তারা পাকিস্তানের সেনা, নৌ, বিমান বাহিনীর সদর দফতরের ওপর আক্রমণসহ চায়নিজ নাগরিকদেরও হত্যা করেছে। দানব ও সাপের সহজাত প্রবৃত্তি হলো, একটু এদিক-ওদিক হলেই তারা প্রভু ও পালনকারীকে ছোবল মারবে। আগামীতে তালেবান একটু শক্তি অর্জন করলেই তারা পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে বেলুচিস্তান, কাশ্মীর ও অভ্যন্তরে ব্যতিব্যস্ত রেখে বিতর্কিত ডোরান্ড লাইন সীমান্তকে বাতিল ঘোষণা করবে এবং পাকিস্তানি পাশতুন অঞ্চলকে আফগানিস্তানের সঙ্গে সংযুক্ত করে নিবে। তালেবানসহ আফগানিস্তানের কোনো শাসকই ডোরান্ড লাইনের সীমান্তকে স্বীকৃতি দেয়নি। অধিকন্তু গত ২০ বছর পাকিস্তানের দ্বিমুখী আচরণে তালেবানের যে ক্ষতি হয়েছে, সেই সুযোগ পাকিস্তান যেন আর কখনো না পায় সেটি নিশ্চিত করতে চাইবে কাবুলের তালেবান সরকার। ১৯৯৪ সালে তালেবানের জন্ম থেকে এ পর্যন্ত ২৭ বছরে এমন একটি রেকর্ডও নেই, যার ওপর ভিত্তি করে বিশ্ব সম্প্রদায় তালেবানকে বিশ্বাস করতে পারে। ২০২০ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি আমেরিকার সঙ্গে স্বাক্ষরিত চুক্তিতে তালেবান প্রতিশ্রুতি দেয় তারা অন্য কোনো সন্ত্রাসী সংগঠনকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেবে না এবং আমেরিকার সেনাবাহিনীর ওপর আক্রমণের ঘটনা ঘটবে না। কিন্তু গত ২৬ আগস্ট কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে আইএস খোরসান কর্তৃক বোমা আক্রমণ এবং তাতে ১৩ আমেরিকান সেনাসহ প্রায় ১৮০ জন নিহত হন। নিরাপত্তা সংক্রান্ত ম্যাকানিজমের অভিজ্ঞতা যাদের রয়েছে তারা জানেন তালেবান বাহিনীর ব্যাপক উপস্থিতির মধ্যেও যেভাবে আক্রমণ হলো তাতে এটা স্পষ্ট যে, তালেবান বাহিনীর সম্মতি ছাড়া আইএস খোরাসানের পক্ষে এটা করা সম্ভব ছিল না। একটি খবরে দেখলাম আল-কায়েদার এক নেতা পাকিস্তান থেকে কান্দাহারে পৌঁছেছে এবং স্থানীয় তালেবানরা তাকে লালগালিচা সংবর্ধনা দিয়েছে। যে কয়জন টিটিপির সদস্য তালেবানের হাতে বন্দী ছিল তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বিগত সময়ের ঘটনাবলি এবং অকাট্য গবেষণালব্ধ তথ্যে প্রমাণ হয় আল-কায়েদা, আইএস, তালেবান খোরাসান গ্রুপসহ সব ইসলামিস্ট, জঙ্গি সংগঠন মতাদর্শগতভাবে এক ও অভিন্ন, তারা একে অপরের পরিপূরক। বাহ্যিক দৃষ্টিতে যতটুকু পার্থক্য দেখা যায় এটা তাদের সবার সম্মিলিত স্ট্র্যাটেজি। সুতরাং সিরিয়া-ইরাক থেকে বিশ্ব সম্প্রদায় যে কারণে আইএসকে উৎখাত করেছে তার সবকিছু তালেবানের জন্যও প্রযোজ্য। কিন্তু তালেবানকে স্বীকৃতি না দিলে পুনরায় ৯/১১ ঘটবে, এ রকম বিস্ময়কর একটা বম্বশেল ফাটিয়ে পাকিস্তান বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেছে সেটা বোঝা যায়। কিন্তু এর পরিণতি হবে ভয়াবহ, যার থেকে পাকিস্তানও রক্ষা পাবে না।

লেখক : রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক।

[email protected]

সর্বশেষ খবর