বুধবার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

সময়ের চাহিদা পূরণ

কর্মমুখী শিক্ষায় গুরুত্ব দিন

বাংলাদেশের শিক্ষা কার্যক্রমের লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে একদল শিক্ষিত বেকার সৃষ্টি- এমন কথা বললে খুব ভুল হবে না। সবারই জানা, দেশে একের পর এক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি হচ্ছে। শিক্ষা ব্যবসার লক্ষ্য নিয়ে ব্যাঙের ছাতার মতো জন্ম নিচ্ছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দেশে শিক্ষিত বেকার বৃদ্ধিতেই শুধু সহায়তা করছে। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হয়ে রিকশাচালকের সমান আয়ের চাকরি পেতেও পেরেশন হতে হয়। অথচ বাংলাদেশে শিল্পকারখানা চালাতে বিদেশ থেকে লোক আনতে হয়। দেশ থেকে চলে যায় বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা। বিশেষজ্ঞদের মতে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের এই সময়ে শিক্ষাকে বাস্তব ও কর্মমুখী করা না গেলে দেশের বেকারত্ব ঘুচবে না। একসময় শিক্ষা ছিল সুকুমারবৃত্তি বা মানসিক উৎকর্ষ সাধন। কিন্তু এখন শিক্ষায় সুকুমারবৃত্তির চেয়ে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে বাস্তব ও কর্মমুখী বিষয়। শত বছর বা হাজার বছরের শিক্ষাকে বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে সুকুমারবৃত্তি মানসিক উৎকর্ষ সাধনের মাধ্যম। সমাজ-সভ্যতাই ছিল শিক্ষার মূল উপাদান। কিন্তু সতের শতাব্দীতে শিল্পবিপ্লবের যুগে এসে শিক্ষাকে কর্মমুখী করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। জার্মানির এক দার্শনিক বলেছেন, শিক্ষা হলো মানসিক সুকুমারবৃত্তির লালন। মানবিক মূল্যবোধ, মানবিক বিকাশ এসব নিয়েই শিক্ষা চলবে। কিন্তু প্রথম শিল্পবিপ্লব থেকে শুরু করে এখন চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সময় কর্মমুখী শিক্ষাই ব্যাপক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। কর্মমুখী শিক্ষার অভাব থাকায় শিক্ষিত বেকারদের মধ্যে হতাশা বাড়ছে। মাদকাসক্তির আগ্রাসন তাদের গ্রাস করছে। বাবা-মা সন্তানদের লেখাপড়া শিখিয়ে হা-হুতাশে ভুগছেন। সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টিতেও তা ইন্ধন জোগাতে পারে এমন আশঙ্কা সৃষ্টি হচ্ছে।

বিপদ এড়াতে কর্মমুখী শিক্ষার প্রতি জোর দিতে হবে। সময় থাকতেই নিতে হবে বাস্তবমুখী উদ্যোগ।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর