মঙ্গলবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

হাসপাতালের যন্ত্রপাতি

বাক্সবন্দী রাখার জন্য দায়ীদের শাস্তি কাম্য

কোম্পানিকা মাল দরিয়া মে ঢাল এমন একটি প্রবচন আমাদের দেশে প্রচলিত সেই ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আমল থেকে। সবারই জানা ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এসেছিল এ দেশে ব্যবসা করতে। বণিকের হাতে একসময় চলে যায় রাজদন্ড। সে সময় ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিই ছিল এ দেশের সরকার। তাদের পাইক-পেয়াদা আর কেরানি হিসেবে কাজ করত এ দেশিরা। কোম্পানির ইংরেজ সদস্যরা নিষ্ঠুরভাবে শোষণ করত এ দেশবাসীকে। তাদের লুণ্ঠিত অর্থে ভাগ বসাত দেশি গোমস্তা আর কেরানিরা। বাংলাদেশ এখন স্বাধীন দেশ। এ দেশের মালিক-মোক্তার দেশের ১৭ কোটি মানুষ। তবে তাদের ওপর সরকারি কর্মচারী-কর্মকর্তাদের একাংশের শোষণ ও লুটপাট বন্ধ হয়নি। তারই স্পষ্ট প্রমাণ দেশের ১৬টি সরকারি হাসপাতালে ২৮টি রোগ নির্ণয় যন্ত্র বাক্সবন্দী অবস্থায় অব্যবহৃত থাকার ঘটনা, যে বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। একই সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে এসব যন্ত্রপাতি পড়ে থাকায় বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে আদালত রুল জারি করেছে। এ-সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারক এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্ট বেঞ্চ রবিবার এ আদেশ দেয়। স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক, ১৬ হাসপাতাল পরিচালকসহ ২১ জনকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে আদেশে। ২৪ আগস্ট ‘১৬ হাসপাতালে ২৮টি যন্ত্র বাক্সবন্দী’ শিরোনামে একটি জাতীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন যুক্ত করে ২৬ আগস্ট জনস্বার্থে একজন আইনজীবী হাই কোর্টে রিট করলে তার শুনানি শেষে আদালত তদন্তের আদেশ দেয়। উল্লেখ্য, লাখ লাখ টাকার ওইসব যন্ত্রপাতির বেশির ভাগ নষ্ট হওয়ার পথে। লোকবলের ও কারিগরি সহায়তার অভাবে যন্ত্রগুলো বসানো যায়নি বলে জানিয়েছে হাসপাতালগুলোর কর্তৃপক্ষ। তবে আসল কথা কমিশন পাওয়ার জন্য গড়ে দেড় বা দ্বিগুণ দামে যন্ত্রগুলো কেনা হলেও সেগুলো ব্যবহারে কর্তাব্যক্তিদের গরজ ছিল না। কারণ কমিশনেই ছিল তাদের আগ্রহ, সেবার দিকে নয়। আমরা রোগ নির্ণয় যন্ত্র বাক্সবন্দী থাকার জন্য দায়ীদের অপসারণ চাই। এ ধরনের অযোগ্যদের জনগণের ট্যাক্সের টাকায় পোষার যৌক্তিকতা থাকা উচিত নয়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর