জলবায়ু পরিবর্তন বাংলাদেশসহ সাগরতীরের বিপুলসংখ্যক দেশের অস্তিত্বের জন্য অশনিসংকেত হয়ে দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশের উপকূলবর্তী এলাকার লাখ লাখ মানুষ ইতিমধ্যে জলবায়ু উদ্বাস্তুতে পরিণত হয়েছে। অশুভ পরিবর্তনের প্রভাবে বাড়ছে বন্যা, নদী ভাঙন, ঘূর্ণিঝড়ের দাপট। জলবায়ুতে যে অপ্রত্যাশিত পরিবর্তন ঘটছে এর জন্য দায়ী উষ্ণায়ন। শিল্পোন্নত দেশগুলোর লাগামহীন শিল্পায়ন জলবায়ুতে অশুভ প্রভাব রাখছে। এর ফলে উষ্ণ হয়ে উঠছে আবহাওয়া। গলছে মেরুদেশের সঞ্চিত বরফ। সাগরের পানি তাতে স্ফীত হচ্ছে। বাংলাদেশ, মালদ্বীপসহ সাগরপ্রান্তের নিচু দেশগুলোর জন্য তা বিপদ ডেকে আনছে। এ বিপদ ঠেকাতে সোমবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ মহাসচিব ও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী আয়োজিত এক রুদ্ধদ্বার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
ছয় দফা প্রস্তাব দিয়েছেন। প্রস্তাবে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখতে প্যারিস চুক্তির কঠোর প্রয়োগের আহ্বান জানানো হয়। এজন্য উন্নত দেশগুলোর কাছ থেকে বার্ষিক ১০০ বিলিয়ন ডলার জলবায়ু তহবিল আদায়ের ওপরও জোর দেওয়া হয়। এ তহবিলের ৫০ শতাংশ জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোয় অভিযোজন ও স্থিতিস্থাপকতার জন্য ব্যবহার করা হবে। উন্নয়নশীল দেশগুলোয় নতুন আর্থিক প্রক্রিয়া এবং সবুজ প্রযুক্তি হস্তান্তরের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে লোকসান ও ক্ষয়ক্ষতির সমস্যা এবং সেই সঙ্গে বৃহৎ আকারের জনসংখ্যার স্থানচ্যুতি মোকাবিলার আহ্বান জানান। উল্লেখ করেন, মহামারী ও দুর্যোগের দ্বৈত বিপদ মোকাবিলায় জলবায়ুসৃষ্ট দুর্যোগের আক্রান্ত দেশগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা প্রয়োজন। জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো বৈশ্বিক গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনে সবচেয়ে কম ভূমিকা রাখলেও এর প্রতিক্রিয়ায় তাদের অস্তিত্বই বিপন্ন হয়ে উঠছে। এ প্রেক্ষাপটে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর প্রতি সহায়তার হাত বাড়ানোর দাবিটি খুবই প্রাসঙ্গিক এবং যৌক্তিক।