বৃহস্পতিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

নড়বড়ে খুঁটির ঘরে ঝুলবারান্দা

মহিউদ্দিন খান মোহন

নড়বড়ে খুঁটির ঘরে ঝুলবারান্দা

৪৩ পেরিয়ে বিএনপির ৪৪ বছরে পদার্পণের দিন ১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ প্রতিদিনের শিরোনাম ছিল ‘৪৩ বছরে কঠিন দুঃসময়ে বিএনপি’। এতে দলটির চলমান দুর্দশাগ্রস্ত অবস্থা সবিস্তার তুলে ধরা হয়েছে। নেতৃত্বহীনতা, অগোছালো সাংগঠনিক অবস্থা, জোটের রাজনীতির লক্ষ্যহীনতা, সব মিলিয়ে দলটির মধ্যে বিরাজমান বিশৃঙ্খলার কথা উঠে এসেছে। বিএনপি নেতারা তা স্বীকার করতে না চাইলেও আমরা যদি সাম্প্রতিককালে দলটি সম্পর্কে পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরগুলোর দিকে চোখ ফেরাই তাহলে দ্বন্দ্ব-কোন্দলে কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত বহুধাবিভক্ত একটি ক্ষয়িষ্ণু ও শক্তিহীন রাজনৈতিক সংগঠনের ছবি প্রতিভাত হয়ে উঠবে। তবে এ কথা ঠিক, এখনো দেশের সাধারণ মানুষের একটি বড় অংশ এ দলটির সমর্থক। কিন্তু যারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে দলটির অভ্যন্তরে যেমন, পর্যবেক্ষক মহলেও তেমন। তাদের ভুল সিদ্ধান্ত, দলের চেয়ে কোটারি স্বার্থচিন্তা ঐক্যের পরিবর্তে বিভেদ বাড়াচ্ছে; যা দলটিকে ক্রমাগত বিপর্যয়ের দিকেই ঠেলে দিচ্ছে। একই দিনে বাংলাদেশ প্রতিদিনের মতো অন্যান্য পত্রিকার প্রতিবেদনেও দলটির সাংগঠনিক বিপর্যস্ত অবস্থার কথা উঠে এসেছে।

কিন্তু একটি বড় রাজনৈতিক দল যেটি একাধিকবার রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিল, দেশব্যাপী রয়েছে যার সাংগঠনিক বিস্তৃতি- কেন এমন নাজুক অবস্থায় উপনীত হলো অনেকের কাছেই তা একটি বড় প্রশ্ন। রাজনৈতিক দলের সুসময়-দুঃসময় অত্যন্ত স্বাভাবিক ব্যাপার। বলা নিষ্প্রয়োজন, বিএনপির এখন দুঃসময় চলছে। তবে সে দুঃসময় কাটিয়ে ওঠার জন্য যে প্রয়াস-প্রচেষ্টা প্রয়োজন, নেতৃত্বদানকারী নেতারা তা দেখাতে ব্যর্থ হচ্ছেন। চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতি দলটির জন্য চরম অভিশাপ হয়ে উঠেছে। তাঁর পরিবর্তে যিনি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে আছেন তিনি কতটা কার্যকর নেতৃত্ব দিতে পারছেন তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। শোনা যায়, দলকে ‘সুসংগঠিত’ করার জন্য তিনি লন্ডন থেকে দিকনির্দেশনা দিলেও বাস্তবে তার প্রতিফলন ঘটে খুবই কম।

পত্রপত্রিকার খবর অনুযায়ী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে লক্ষ্যস্থির করে এগোনোর চিন্তাভাবনা করছে বিএনপি। এ লক্ষ্যে তারা ঘর গোছানোর পাশাপাশি বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার ওপরও বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। এজন্য বিশ্বস্ত, ত্যাগী ও সাহসী নেতা-কর্মীদের নেতৃত্বে এনে দলকে তৃণমূল থেকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করার উদ্যোগ নিচ্ছে। জোট গঠনের আগে সমমনা দলগুলোকে নিয়ে যুগপৎ আন্দোলনের কথাও নাকি ভাবছে দলটি। নির্দলীয় সরকারের অধীনে পরবর্তী সংসদ নির্বাচন আদায় করাই তাদের একমাত্র লক্ষ্য। অভীষ্ট অর্জনের জন্য একটি রাজনৈতিক দলের এসব তৎপরতা স্বাভাবিক। কিন্তু বাস্তবতা বিবেচনায় সে লক্ষ্য অর্জনে বিএনপি কতটা সক্ষম সে প্রশ্ন রয়েছে। স্বীকার করতেই হবে, প্রায় ১৫ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি এখন চরম সাংগঠনিক বিশৃঙ্খলায় জর্জরিত। এ সময়ের মধ্যে দলটি দুটি জাতীয় কাউন্সিল করেছে। কিন্তু কোনো কাউন্সিল অধিবেশনের পর পূর্ণাঙ্গ জাতীয় নির্বাহী কমিটি গঠন করতে পারেনি। ২০০৯ সালের কাউন্সিলের পর থেকে আজ অবধি দলটির কেন্দ্রীয় কোনো দফতর সম্পাদক নেই। তখন থেকে যুগ্মমহাসচিব এবং বর্তমানে সিনিয়র যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে দফতর সামলাচ্ছেন। সম্প্রতি করোনায় আক্রান্ত হয়ে তিনি শয্যাগত হলে দলের ময়মনসিংহ বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান সালেহ প্রিন্সকে দিয়ে দফতরের কাজ চালানো হয়েছে। অথচ দলটির সর্বশেষ সংশোধিত গঠনতন্ত্রেও একজন পূর্ণাঙ্গ এবং সার্বক্ষণিক দফতর সম্পাদক পদের উল্লেখ আছে। তা ছাড়া ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ কাউন্সিলে ‘এক ব্যক্তি এক পদ’ নীতি গৃহীত হলেও তার বাস্তবায়ন হয়নি অনেক ক্ষেত্রেই। এখন যে জাতীয় নির্বাহী কমিটি রয়েছে তাতেও বেশ কিছু পদ শূন্য আছে। এমনকি জাতীয় স্থায়ী কমিটিরও পাঁচটি পদ শূন্য। দুই যুগের বেশি সময়ের মধ্যে দলটির পুনর্গঠনে বেশ কয়েকবার উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা সফল হয়নি। কোনোটা শুরুতেই, কোনোটা মাঝপথে হোঁচট খেয়ে মুখ থুবড়ে পড়েছে। পুনর্গঠনের দায়িত্ব যাদের দেওয়া হয়েছে তারা দলের চেয়ে নিজেদের লোক খোঁজার দিকে বেশি মনোনিবেশ করায় দ্বন্দ্ব-কোন্দল নিরসনের চেয়ে আরও প্রকট হয়েছে।

সম্প্রতি সিলেট জেলা ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক কমিটি গঠন নিয়ে ক্ষোভের কারণে বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শামসুজ্জামান জামানসহ শতাধিক নেতা-কর্মী পদত্যাগ করেছেন। ধারাবাহিক এ পদত্যাগে সিলেট বিএনপিতে টালমাটাল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে। এর আগে সিলেটের সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীসহ প্রভাবশালী চার নেতা পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। যদিও দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের আশ্বাসে তারা সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন। পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, ২০১৩ সাল থেকে সক্রিয় হওয়া খন্দকার আবদুল মুক্তাদিরের দলে নিজস্ব বলয় সৃষ্টি এবং প্রতিদ্বন্দ্বী নেতাদের কোণঠাসা করে রাখার পরিকল্পনার কারণেই সিলেট বিএনপির এ টালমাটাল অবস্থা। বিভিন্ন সূত্রে যেসব খবর পাওয়া যায় তাতে এটা স্পষ্ট যে তিনি তার লন্ডন কানেকশন কাজে লাগিয়ে দলের অভ্যন্তরে নিজের অবস্থান মজবুত করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। শুধু সিলেটে নয়, এ অবস্থা দলটির বিভিন্ন পর্যায়ে বিরাজ করছে। স্থানীয় নেতাদের একটি অংশ কেন্দ্রীয় কোনো ক্ষমতাধর নেতার ছত্রচ্ছায়ায় নিজস্ব বলয় সৃষ্টি করে দলে বিভাজন রেখা টানছে। তাদের কারণে দল ঐক্যবদ্ধ হওয়ার পরিবর্তে আরও বেশি অনৈক্যের বেড়াজালে আটকে পড়ছে।

এদিকে দলটি জেলা কমিটি পুনর্গঠনের যে কর্মসূচি শুরু করেছে তাতেও দেখা দিয়েছে বিশৃঙ্খলা। পুরনো কমিটি ভেঙে নতুন আহ্বায়ক কমিটি করা হচ্ছে বিভিন্ন জেলায়। এ পুনর্গঠনকে কেন্দ্র করেও বিভিন্ন স্থানে দ্বন্দ্ব-কোন্দল প্রকাশ্য রূপ নিচ্ছে। মুন্সীগঞ্জ জেলা বিএনপির মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি বিলুপ্ত করে যে নতুন আহ্বায়ক কমিটি করা হয়েছে তাতে পূর্বতন কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পদককে আহ্বায়ক ও সদস্যসচিব করায় সেখানে বিদ্রোহ ঘটেছে। সাবেক ছাত্রনেতারা পাল্টা আহ্বায়ক কমিটি করেছেন। অন্যদিকে দুই প্রয়াত নেতা কে এম ওবায়দুর রহমান ও কামাল ইবনে ইউসুফের দুই কন্যার আধিপত্য বিস্তারের দ্বন্দ্বে দ্বিধাবিভক্ত ফরিদপুর জেলা বিএনপি। সেখানে কমিটি নেই ১৪ বছর ধরে। কবে কমিটি হবে কেউ জানে না। খোঁজ নিলে এমন দ্বন্দ্ব-কোন্দলের খবর পাওয়া যাবে প্রায় সব জেলা-উপজেলায়।

এদিকে বিএনপি দাবি আদায়ের লক্ষ্যে যে বৃহত্তর জোট গঠনের কথা ভাবছে তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে আলোচনা হচ্ছে। কেননা সাম্প্রতিক রাজনীতিতে তাদের জোটের অভিজ্ঞতা খুব একটা সুখকর নয়। বর্তমানে দলটি নির্জীব ২০-দলীয় জোটের নেতৃত্ব দিচ্ছে। পাশাপাশি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টেরও অংশীদার। ওই ফ্রন্টে যোগ দিয়ে বিএনপির কী লাভ হয়েছে তা নিয়ে এখনো রাজনৈতিক মহলে বিতর্ক আছে। দলটির বেশির ভাগ নেতা-কর্মী মনে করেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে যোগ দিয়ে বিএনপির কোনো লাভ হয়নি। তারা মনে করেন ঐক্যফ্রন্টের ফাঁদে ফেলে বিএনপিকে কোনো দাবি আদায় ছাড়াই নির্বাচনে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছিল সরকার। তাদের অভিমত, ঐক্যফ্রন্টের নেতার আশ্বাসে বিনা শর্তে সরকারের সঙ্গে সংলাপে বসায় বিএনপি তাদের নেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ কোনো দাবি তোলার সুযোগই পায়নি। সেই অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্তের ফলে খালেদা জিয়াকে শেষ পর্যন্ত তাঁর ‘আপসহীন’ অভিধা জলাঞ্জলি দিয়ে সরকারের অনুকম্পায় কারাফটকের বাইরে আসতে হয়েছে- এমনটি মনে করেন দলের নেতা-কর্মীরা।

অন্যদিকে বিএনপি নেতারা জোট সম্প্রসারণের কথা বললেও তাদের বর্তমান ২০-দলীয় জোট ক্রমান্বয়ে সংকুচিত হয়ে আসছে। ইতিমধ্যে জোটের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ করেছে আন্দালিভ রহমান পার্থর বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, ইসলামী ঐক্যজোটের একটি অংশসহ বেশ কয়েকটি ক্ষুদ্র দল। অবশ্য যেসব দল বা যেগুলোর ভগ্নাংশ জোট ছেড়েছে বা আছে সেগুলোর বাংলাদেশের রাজনীতিতে কোনো প্রভাব বা ভূমিকা নেই। কোনো কোনো দলের পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রীয় কমিটিও নেই। অধিকাংশই নিবন্ধনহীন। তা ছাড়া বিএনপিও কিছুদিন ধরে জোটের চাইতে দলীয় শক্তি বৃদ্ধির দিকে নজর দিচ্ছে বেশি। এ নিয়ে জোটের শরিক দলগুলোর মধ্যে সৃষ্ট অসন্তোষের খবরও সংবাদমাধ্যমে এসেছে। ছোট দলগুলো মনে করে বিএনপি তাদের অবহেলা করছে।

অন্যদিকে জোটের অন্যতম শরিক জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে বিএনপি রয়েছে ‘শ্যাম রাখি না কুল রাখি’ অবস্থায়। দলের একটি বড় অংশ জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্ক ঘুচিয়ে ফেলার পক্ষে। তাদের মতে বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিএনপি একটি বড় ফ্যাক্টর। আওয়ামী লীগের বিকল্প হিসেবে এখনো সবাই বিএনপিকে মনে করে। জামায়াতে ইসলামীরও আগের সেই সাংগঠনিক শক্তি নেই। বিশেষ করে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে তাদের বেশির ভাগ শীর্ষ নেতার ফাঁসি ও আমৃত্যু কারাদন্ডের পর দলটি মরা ঘোড়ায় পরিণত হয়েছে। সুতরাং এ বোঝা বিএনপির মাথা থেকে নামিয়ে ফেলাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। তা ছাড়া জামায়াতকে সঙ্গে রাখার কারণে আওয়ামী লীগকে পছন্দ করেন না এমন অনেকে বিএনপিকে সমর্থন করতে দ্বিধান্বিত। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও জামায়াতের জন্য বিএনপি সমালোচিত। প্রসঙ্গত, কয়েক মাস আগে জামায়াতের সঙ্গত্যাগের কথা উঠেছিল বিএনপিতে। তবে এখন সে অবস্থান থেকে সরে এসেছে দলটি। বিএনপির নীতিনির্ধারকদের বেশির ভাগ জামায়াতকে ছেড়ে দিতে চাইলেও একটি অংশ মনে করে তাহলে সরকার তাদের চাপে রেখে বিএনপির বিরুদ্ধে কাজে লাগাতে পারে। এ বিষয়ে ২০-দলীয় জোটের সমন্বয়ক ও বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান সম্প্রতি একটি পত্রিকাকে বলেছেন, ‘জামায়াত আমাদের সঙ্গে আছে এবং থাকবে।’ তাঁর এ মন্তব্য থেকে পরিষ্কার, বিএনপি জামায়াত ছাড়ছে না। ফলে যারা আশা করেছিলেন বিএনপি জামায়াতের বোঝা ঝেড়ে ফেলে রাজাকার পোষণের দুর্নামমুক্ত হবে তারা আশাহত হয়েছেন। জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্ক রাখার পক্ষের নেতাদের অভিমত হলো, বাংলাদেশের ভোটের রাজনীতিতে জামায়াত একটি ফ্যাক্টর। ভোটযুদ্ধে জামায়াতকে পাশে পেলে আওয়ামী লীগকে পরাস্ত করা বিএনপির জন্য অনেকটাই সহজ হবে। তা ছাড়া যে আন্দোলনের ছক বিএনপি কষছে তাতে জামায়াত সঙ্গে থাকলে রাজপথে শক্তি বাড়বে বলেও তারা মনে করেন।

কিন্তু জামায়াতকে সঙ্গে রাখলে সরকারবিরোধী বৃহত্তর ঐক্য বিএনপি গঠন করতে পারবে কি না সে সংশয় রয়েছে। কেননা জামায়াত থাকলে প্রগতিবাদী দলগুলো বিএনপির কাছে ঘেঁষতে চাইবে না। এ বিষয়ে জানতে চেয়েছিলাম বিএনপির প্রথম জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানী ও মশিউর রহমান যাদু মিয়ার ঘনিষ্ঠ সহচর অশীতিপর রাজনীতিক মো. শামসুল হকের কাছে। তিনি বললেন, ‘যেখানে জামায়াত আছে সেখানে প্রগতিশীলরা থাকতে পারে না। জামায়াত যদি নিজের শক্তিতে অবস্থান করে নিতে পারে তাহলে আমার আপত্তি নেই। তবে জিয়াউর রহমানের মতো একজন মুক্তিযোদ্ধার প্রতিষ্ঠিত দল বিএনপি কেন জামায়াতের বোঝা বইবে?’ তাঁর মতে নিজেদের সাংগঠনিক শক্তি মজবুত না করে বিএনপির কথিত বৃহত্তর জোটের স্বপ্নবিলাস হবে নড়বড়ে খুঁটির ওপর দাঁড়িয়ে থাকা একটি ঘরের চারদিকে ঝুলবারান্দা দেওয়ার শামিল। এতে পুরো ঘরটাই ধসে পড়তে পারে। তাই ওসব কল্পনা বাদ দিয়ে বিএনপির উচিত নিজের ঘরখানি শক্ত খুঁটির ওপর দাঁড় করানো। শামসুল হক সাহেবের কথার সঙ্গে দ্বিমত পোষণের অবকাশ আছে বলে মনে হয় না।

                লেখক : সাংবাদিক ও রাজনীতি বিশ্লেষক।

সর্বশেষ খবর