শুক্রবার, ১ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

শিক্ষা প্রশাসনে দুর্নীতি

উৎকোচলোভী শ্বাপদদের তাড়াতে হবে

শিক্ষা দূর করে অজ্ঞানতার অন্ধকার, গড়ে তোলে আলোকিত মানুষ। আমাদের দেশে সে ধরনের মানুষের যে প্রচ- অভাব তা সহজেই অনুমেয়। সরাসরি এ বিষয়ে না হলেও শিক্ষাসংক্রান্ত এক গবেষণা প্রতিবেদনে বের হয়ে পড়েছে দেশে আলোকিত মানুষ তৈরি না হওয়ার আসল কারণ। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) পরিচালিত ওই গবেষণা প্রতিবেদনের মোদ্দাকথা মানুষ গড়ার কারিগর যারা তারা নিজেদের স্বকীয়তা ধরে রাখতে পারছেন না শিক্ষা সম্পর্কিত সব সরকারি দফতর, অসৎ স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা ও গভর্নিং বডির কারণে। গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা কার্যক্রমে প্রাতিষ্ঠানিক সীমাবদ্ধতা ও জবাবদিহির ঘাটতি উদ্বেগজনক। বিভিন্ন কাজের সেবা নিতে আসা শিক্ষকদের পদে পদে ঘুষ দিতে হয়। এ ঘুষের পরিমাণ ৫ হাজার থেকে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত। এ অনৈতিক অর্থ আদায় করেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা, গভর্নিং বডি, প্রধান শিক্ষক, পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদফতরের কর্মকর্তা, শিক্ষা বোর্ডসহ সংশ্লিষ্টরা। ‘মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যক্রম বাস্তবায়ন : সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে টিআইবি বিদ্যমান সীমাবদ্ধতা উত্তরণে ২০ দফা সুপারিশ পেশ করেছে। দুর্নীতিবাজদের সহযোগিতা থাকায় পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদফতরের তথ্যানুযায়ী ২০১৩ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ১০ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১ হাজার ৫৭৭ জন শিক্ষক নিবন্ধন সনদ, কম্পিউটার ও অন্যান্য একাডেমিক সনদ জালিয়াতির মাধ্যমে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ পেয়েছেন। মানুষ গড়ার কারিগর যারা তারা ইচ্ছায় অনিচ্ছায় দুর্নীতির বৃত্তে আবদ্ধ হয়ে পড়ছেন শিক্ষাসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সরকারি দফতর, টাউট রাজনৈতিক নেতা ও অসৎ ব্যক্তিদের নিয়ে গঠিত গভর্নিং বডির কারণে। যার অবসানে শিক্ষা ব্যবস্থাপনায় ব্যাপক সংস্কার আনতে হবে। উৎকোচলোভী শ্বাপদদেরও তাড়াতে হবে।

সর্বশেষ খবর