সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম দুনিয়াজুড়ে এক মানুষের সঙ্গে আরেক মানুষের যোগাযোগ এবং তথ্য জানার ক্ষেত্রে যে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে তা অনস্বীকার্য। তবে এর অপব্যবহার দেশীয় এবং আন্তদেশীয় অপরাধের বিস্তার ঘটাচ্ছে। মানব পাচারের হাতিয়ার হয়ে দাঁড়িয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। জঙ্গিবাদ বিস্তারেও তা অবদান রাখছে। সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়ানোর কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। যৌনতা ও মাদকাসক্তির ক্ষেত্রেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কালো হাত ভূমিকা রাখছে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও বৈশ্বিক শান্তির জন্যও ডেকে আনছে বিপদ। বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপতৎপরতায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে যুদ্ধাপরাধী ও তাদের স্বজনরা। ফেসবুক-ইউটিউবে ভিডিও ছড়িয়ে বঙ্গবন্ধু পরিবার, সরকার, বিচার বিভাগ, ব্যবসায়ী, শিল্পপতি ও দেশের বিরুদ্ধে তৎপরতা চালানো হচ্ছে। জবাবদিহি না থাকায় বেপরোয়াভাবে চলছে এসব কার্যক্রম। অনেক ক্ষেত্রে জনপ্রতিনিধি, স্কুল-কলেজের শিক্ষক, ছাত্রছাত্রীসহ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষও বুলিংয়ের শিকার হচ্ছেন। ফেসবুক-ইউটিউবের মাধ্যমে এখন ভুঁইফোড় বহু পন্ডিতের জন্ম হয়েছে। সরকারবিরোধী প্রচারণার পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেক অ্যাডাল্ট কনটেন্ট আপলোড করা হয়। এসব অডিও শুনে ও ভিডিও দেখে শিশু-কিশোরদের মধ্যে বিভ্রান্তির পাশাপাশি নানা নেতিবাচক প্রভাব তৈরি হচ্ছে। ধর্মের উসকানিমূলক অপব্যাখ্যা দিয়ে ফেসবুক-ইউটিউবে বিভিন্ন বক্তব্য প্রচার করা হচ্ছে। মতলববাজরা লাইক শেয়ারের জমজমাট ব্যবসায় অর্থ আয়ের উদ্দেশে উদ্ভট সব বিষয়ের অবতারণা করছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। বিশেষত জঙ্গিবাদী ও মুক্তিযুদ্ধবিরোধী অপশক্তি বিদেশে বসে মুক্তিযুদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার বিরুদ্ধে যেভাবে সাইবার যুদ্ধ চালাচ্ছে তা কোনোভাবে মেনে নেওয়া যায় না। তাদের অপপ্রচার ঠেকাতে ডাক ও টেলিযোগাযোগ এবং আইসিটি এই দুই মন্ত্রণালয়কে দায়িত্ব পালনের উপযোগী করে গড়ে তুলতে হবে।