বৃহস্পতিবার, ৭ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

ক্যাম্পাসে প্রাণচাঞ্চল্য

শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করুন

‘বন্যেরা বনে সুন্দর শিশুরা মাতৃক্রোড়ে’ বাক্যটি প্রবাদসম মহিমা পেয়েছে বাংলা ভাষাভাষীদের মধ্যে। দীর্ঘ ৫৬৫ দিন পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো খোলায় শিক্ষার্থীদের উচ্ছ্বাস মনে করে দিয়েছে তারা যেন তাদের আসল নিবাসে ফিরে এসেছেন করোনাভাইরাস নামের এক ভয়াল দৈত্যের ভ্রæকুটি উপেক্ষা করে। করোনার কারণে গত বছরের ১৯ মার্চ বন্ধ হওয়ার পর মঙ্গলবার অনার্স শেষ বর্ষ ও মাস্টার্সের শিক্ষার্থীদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে হলগুলো। করোনা ভ্যাকসিনের অন্তত এক ডোজ নেওয়ার শর্তে হলে উঠেছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের আগমনে ক্যাম্পাসে ফিরেছে প্রাণচাঞ্চল্য। দীর্ঘদিন পর হলে উঠতে পেরে উচ্ছ্বাসে আপ্লুত শিক্ষার্থীও। আবাসিক হল ব্যবহারে কক্ষের বাইরে এলে মাস্ক পরিধান করা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, নিজ নিজ কক্ষ পরিষ্কার রাখাসহ বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি, এ ব্যাপারে প্রতিটি হলেই শিথিলতা দেখা গেছে। নির্ধারিত দুই বর্ষের শিক্ষার্থীর বাইরেও মাস্টার্স উত্তীর্ণ অছাত্ররাও হলগুলোয় নিজেদের আগের কক্ষে উঠেছেন কর্তৃপক্ষীয় নির্দেশনা পরোয়া না করে। প্রশাসনের নির্ধারিত তারিখের আগেই হলে উঠে গিয়েছিলেন এসব শিক্ষার্থী। পরে প্রভোস্ট কমিটির সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থাসহ এসব শিক্ষার্থীকে তদন্তের মাধ্যমে চিহ্নিত ও কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে শৃঙ্খলা ভঙ্গকারীদের হল থেকে নামিয়ে দিতে প্রশাসনের কোনো তৎপরতাই দেখা যায়নি। ফলে হলগুলোয় আগে থেকে যে পরিবেশগত সমস্যা ছিল তা আগামীতেও দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সাধারণ ছাত্ররা জিম্মি হয়ে পড়বেন রাজনীতির বর্জ্য ছাত্র নামধারী অছাত্রদের কাছে। শিক্ষাদীক্ষার ওপর যে কোনো জাতির ভবিষ্যৎ নির্ভরশীল। এজন্য উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার পরিবেশ থাকা বাঞ্ছনীয়। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যেহেতু ব্যক্তি নয়, দেশবাসীর অর্থে পরিচালিত সেহেতু সেখানে শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করা সরকার ও রাষ্ট্রের কর্তব্য বলে বিবেচিত হওয়া উচিত।

সর্বশেষ খবর