আফগানিস্তানে রক্তঝরা যেন নিয়তির লিখন হয়ে দাঁড়িয়েছে। ধর্মীয় উগ্রপন্থিদের এক গ্রুপ ক্ষমতায় এসে তাদের যাচ্ছেতাই কর্মকান্ডে কিছুটা লাগাম পরালেও অন্য গ্রুপের রক্তপিপাসা বেড়েই চলেছে। উগ্র সুন্নি মুসলিমদের ওই গ্রুপটি জুমার দিনে মসজিদে গণহত্যা চালিয়ে নিজেদের দানবীয় পরিচয় সবাইকে জানান দিয়েছে। কুন্দুজ প্রদেশের একটি শিয়া মসজিদে আত্মঘাতী হামলা চালিয়ে হতাহত করেছে ২ শতাধিক মুসল্লিকে। বিধ্বস্ত হয়ে গেছে মসজিদটি। শুক্রবার স্থানীয় সময় দুপুর দেড়টায় আত্মঘাতী হামলার শিকার হন মুসল্লিরা। কোনো কোনো সংবাদে শতাধিক মুসুল্লির মৃত্যু ও প্রায় ২০০ জনের আহত হওয়ার কথা বলা হয়েছে। যে এলাকায় বোমা হামলা ঘটল সেই কুন্দুজকে তাজিকিস্তানের সঙ্গে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক বিনিময়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করছিল তালেবানরা। এর আগে কাবুলসহ আফগানিস্তানজুড়ে একাধিক ছোট বড় হামলা হয়েছে। সেসব হামলার দায় স্বীকার করেছে সুন্নি জিহাদি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট-কে। আফগানিস্তানের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে তালেবানের সক্ষমতা নিয়ে প্রথম থেকেই সন্দেহ প্রকাশ করে আসছে পশ্চিমা দেশগুলো। সাম্প্রতিক হামলাগুলো সে সন্দেহকে আরও জোরদার করছে। আফগানিস্তানের প্রধান দুটি জঙ্গি গ্রুপই সুন্নিপন্থি এবং শিয়াদের হত্যা করাকে তারা ধর্মীয় কর্তব্য হিসেবেই ভাবে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমঝোতায় তালেবান জঙ্গিরা ক্ষমতা ফিরে পাওয়ার পর আইএস জঙ্গিরা বেপরোয়া হয়ে একের পর এক হত্যাকান্ড চালাচ্ছে। নিজেদের ধার্মিক দাবি করলেও অধঃপতিত বকধার্মিকরা মসজিদে হামলা করারও ধৃষ্টতা দেখাচ্ছে। মানবকল্যাণে পৃথিবীর প্রতিটি ধর্মের উদ্ভব হলেও ধর্মীয় উগ্রবাদীরা যে মানবতার শত্রু তা যুগে যুগে প্রমাণিত। আফগানিস্তানেও তার অন্যথা হয়নি। জঙ্গিরা যে মানুষ প্রজাতির কেউ নয় তা তাদের আচরণে প্রকাশ পেয়েছে।