মঙ্গলবার, ১২ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

পরমাণু যুগে বাংলাদেশ

ধ্বংস নয় নিশ্চিত করবে মানব উন্নয়ন

পরমাণু শক্তির ধ্বংসযজ্ঞের কথা জগদ্বাসী প্রথম জেনেছে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সময় হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে বোমা বর্ষণের ঘটনায়। লাখ লাখ মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছিল দুটি পরমাণু বোমা। মানবতার এত বড় অপচয়ের পরও নিজেদের শুধরে নেয়নি ক্ষমতাদর্পী দেশগুলো। বিশ্বের এক ডজনের বেশি দেশ এখন পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী। পরমাণু শক্তি অবিশ্বাস্য ধ্বংসযজ্ঞের ক্ষমতা যেমন রাখে তেমন এর শান্তিপূর্ণ ব্যবহারে নিশ্চিত করা যায় মানবকল্যাণও। পারমাণবিক শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহার জ্বালানির চাহিদা পূরণে যেমন অবদান রাখতে পারে তেমন চিকিৎসাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রেও রাখতে পারে অবদান। শান্তির প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ বাংলাদেশ এ শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারে পাবনার রূপপুরে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করেছে। রবিবার সে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রথম ইউনিটে রিঅ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল বা পরমাণু চুল্লিপত্র স্থাপনের কাজ উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেওয়া বক্তব্যে তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেছেন, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি শান্তির জন্য ব্যবহার করছে। এ শক্তির মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে দেশের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করা হবে। ভবিষ্যতে দেশের দক্ষিণাঞ্চলেও পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করতে চায় সরকার। স্মর্তব্য, রিঅ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল হলো পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মূল যন্ত্র। এর ভিতরেই ইউরেনিয়াম থেকে শক্তি উৎপাদন হয়, যা কাজে লাগিয়ে তৈরি করা যায় বিদ্যুৎ। রিঅ্যাক্টরই হলো পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রাণ। ২০২৩ সালের এপ্রিলে রূপপুরের ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার প্রথম ইউনিট থেকে জাতীয় গ্রিডে পরীক্ষামূলক বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু হবে। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্ভব হবে। বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনই এ মুহূর্তে প্রকৃষ্ট পথ। ভবিষ্যতের কথা মনে রেখে প্রধানমন্ত্রী আরও একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের যে ঘোষণা দিয়েছেন তা প্রশংসার দাবিদার।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর