বৃহস্পতিবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

সমালোচকদের বিরুদ্ধে ক্ষমতাধরদের আক্রমণ

খায়রুল কবীর খোকন

সমালোচকদের বিরুদ্ধে ক্ষমতাধরদের আক্রমণ

প্রায় তেরো বছর একটানা পরপর তিন টার্ম ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত আওয়ামী লীগের নেতারা তাদের নেতিবাচক কাজের সমালোচকদের যে কোনোভাবে তুলাধোনা করতে মরিয়া। কেন এ অসহিষ্ণু রাজনীতি এত প্রাচীন একটি দলের নেতাদের! তার আগে আমরা দলটির অতীত সম্পর্কে একটু আলোচনা করে নিই।

প্রতিষ্ঠাতা মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ও তাঁর সাথী রাজনৈতিক নেতাদের হাত ধরে সেই ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন এ ঢাকা শহরে ‘আওয়ামী মুসলিম লীগ’ নামে তখনকার স্বৈরতন্ত্রী মুসলিম লীগ ও তার সরকারের সব অনাচারের বিরুদ্ধে গণমানুষের প্রতিবাদ সংগঠনের লক্ষ্য নিয়েই দলটির যাত্রা হয়। বলা নিষ্প্রয়োজন, এর প্রতিষ্ঠাতা-সদস্যের নিরানব্বই ভাগের বেশি ছিলেন মুসলিম লীগের নেতা-কর্মী, সংগঠক এবং সবাই ব্রিটিশ উপনিবেশবাদী শাসকগোষ্ঠীকে বিতাড়নের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন ও পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের সব বাঘা-নেতা যারা প্রচণ্ড জেল-জুলুম, হামলা-মামলা, অশেষ অত্যাচার-নির্যাতন সয়ে সয়ে জননেতা হয়েছেন।

মুসলিম লীগ শীর্ষ নেতৃত্ব পূর্ব বাংলাকে পশ্চিম পাঞ্জাবিদের নয়া উপনিবেশরূপে প্রতিষ্ঠার সুযোগটা হাতছাড়া করেননি। ‘কানের উপরে গুঁজে রাখা বিড়ি, আর মুখে চিবোনো পান-লড়াই করে প্রতিষ্ঠা করব পাকিস্তান।’ এ রকম অর্থহীন সেøাগান দিয়ে যে পাকিস্তান অর্জিত হয় তার গণমানুষের মধ্যে এ রাষ্ট্রটি সম্পর্কে কী আদর্শ, কী চেতনা কাজ করেছে? একটি সাম্প্রদায়িক মুসলিম রাষ্ট্র বানানোর লক্ষ্যে ধর্মোন্মাদ গোষ্ঠীর সহায়তায় একটি নয়া উপনিবেশবাদী ও ফ্যাসিবাদী ক্ষমতা-কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা! পরিণামে পূর্ব বাংলার বাাঙালি পেল ‘নয়া উপনিবেশ’-এর মর্যাদা।

পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর পশ্চিম পাঞ্জাবি ভূস্বামী গোষ্ঠী যখন নব্য শিল্পপতি হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠার সুযোগ পায় এবং ভারত থেকে আগত উর্দুভাষী মুসলিম মোহাজের (যারা ছিল মূলত অশিক্ষিত আর অসচেতন এবং পুরোপুরি সাম্প্রদায়িকতা-দুষ্ট) আর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একটা কট্টরপন্থি চক্র বিশেষভাবে পশ্চিম পাঞ্জাবি সামরিক অফিসাররা সংঘবদ্ধ হয় যারা মিলেমিশে একটি শাসক-শোষক চক্র গড়ে তোলে। তাদের একটাই লক্ষ্য ছিল- পূর্ব বাংলার সম্পদ পাট, চা, চামড়া, পাহাড়ি বাঁশ ইত্যাদি কাঁচামাল ব্যবহার করে নিজেদের শিল্পকারখানা পরিচালনা এবং রপ্তানি ব্যবসা-বাণিজ্য কুক্ষিগত করে পূর্ব বাংলাকে পশ্চিম পাকিস্তানের উপনিবেশে পরিণত করা। যদিও জনসংখ্যার হিসাবে পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ নাগরিকের বসবাস ছিল পূর্ব বাংলায় (প্রায় ৫৬ শতাংশ), কিন্তু শাসন-ক্ষমতা ছিল পশ্চিম পাকিস্তানি সংখ্যালঘু কুচক্রী গোষ্ঠীটির হাতে।

সেই পরিস্থিতিতে উঠতি নিম্ন-মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত বাঙালির একটা বড় অংশ পশ্চিম পাঞ্জাবি ও সিন্ধি ব্যবসায়ী এবং ভূস্বামী ও শিল্পকারখানা মালিকদের সমগ্র পাকিস্তান রাষ্ট্রটির প্রধান প্রধান ব্যবসা-বাণিজ্য শিল্পকারখানা প্রতিষ্ঠার সুযোগের ন্যায্য হিসসা লাভের লড়াইয়ে অগ্রসর হওয়ার লক্ষ্যে নবগঠিত আওয়ামী মুসলিম লীগের পেছনে সমর্থন জোগাতে শুরু করে। পরে ন্যাপ (ভাসানী) ও ন্যাপ (ওয়ালি-মোজাফফর)-ও একই সমর্থন পেতে থাকে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-ঘেঁষা পাকিস্তান আওয়ামী লীগ সভাপতি ছিলেন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী। আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মওলানা ভাসানী প্রচণ্ডভাবে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদবিরোধী এবং মজলুম জনতার নেতা হিসেবে প্রগতিশীল রাজনীতির সপক্ষে সোচ্চার ছিলেন। শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন অনেকটা মধ্যপন্থি। তিনি খুব ভালো সাধারণ সম্পাদক ছিলেন সেটা দলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মওলানা ভাসানী বারবার স্বীকার করেছেন, এমনকি সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধিতা প্রশ্নে আওয়ামী লীগ পরিত্যাগ (১৯৫৭ সালে) করে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) প্রতিষ্ঠার পরও। এর আগে ১৯৫৪ সালে হক-ভাসানী-সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বে যুক্তফ্রন্ট পূর্ব বাংলা প্রাদেশিক আইন পরিষদ নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হয়, মুসলিম লীগের ভরাডুবি ঘটে। কিন্তু পশ্চিমা শাসক গোষ্ঠী ষড়যন্ত্র করে প্রাদেশিক সরকারের পতন ঘটায়।

মওলানা ভাসানী সভাপতি থাকাকালেই ১৯৫৪ সালে দলটির নামের ‘মুসলিম’ শব্দটি বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগ হয়- পুরো অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দল। এই সময়ে বিশেষভাবে ১৯৬৩ সালে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর জীবনাবসান ঘটে। আওয়ামী লীগ পূর্ব বাংলার বাঙালিদের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল হিসেবে প্রতিষ্ঠা পায় শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে। তাঁর সঙ্গে ছিলেন সবচেয়ে শক্তিশালী ও মেধাবী সংগঠক তাজউদ্দীন আহমদ। তা ছাড়া সৈয়দ নজরুল ইসলামসহ আরও কয়েকজন ভালো সংগঠকও তাঁদের সঙ্গে ছিলেন। শেখ সাহেবের দুরন্ত সাহস ছিল- স্বৈরাচারী শাসকের জেল-জুলুম-নির্যাতনকে তিনি ভয় পেতেন না। তিনি প্রথমে প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসনের দাবি তুললেন, অচিরেই ছয় দফা দাবিনামা দিয়ে প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসনের আন্দোলন চূড়ান্ত লক্ষ্যের দিকে নিয়ে যান। পাশাপাশি মওলানা ভাসানী তাঁর ন্যাপের ব্যানারে এবং অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ তাঁর ন্যাপ (ওয়ালি-মোজাজফফর) নেতৃত্বে প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসনের দাবি নিয়ে তুমুল আন্দোলন গড়ে তোলেন। আন্ডারগ্রাউন্ড কমিউনিস্ট পার্টির নেতা-কর্মীও এবং ছাত্র ও শ্রমিক সংগঠনগুলোও আন্দোলনে ছিল। আইয়ুব খাঁর সরকার শেখ মুজিবুর রহমানকে এক নম্বর আসামি করে মোট ৩৫ জন বাঙালি রাজনীতিবিদ, আমলা ও সামরিক অফিসারের বিরুদ্ধে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা (আদালতের বিচারিক নাম -‘রাষ্ট্র বনাম শেখ মুজিব ও অন্যান্য’) দিয়ে পূর্ব বাংলার স্বায়ত্তশাসনের পক্ষের শক্তিকে চূড়ান্তভাবে নির্মূলের চেষ্টা চালায়।

১৯৬৯ সালের জানুয়ারির শুরুতে ডাকসু ও ছাত্রলীগ, ছাত্র ইউনিয়ন দুই গ্রুপ এবং এনএসএফ (দোলন গ্রুপ) নেতারা একত্র হয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠন এবং ১১ দফা দাবিনামার ভিত্তিতে ছাত্রসমাজের তুমুল আন্দোলন আরম্ভ করেন। সে লড়াই দ্রুত এক ছাত্র-গণ অভ্যুত্থানে রূপ নেয়। ছাত্রনেতা আসাদুজ্জামান, কিশোর স্কুল-ছাত্র মতিউর ও রোস্তম, অধ্যাপক শামসুজ্জোহা, সার্জেন্ট জহুরুল হকসহ অনেক শহীদের রক্তস্রোতে আইয়ুবের ক্ষমতা ভিতকে ধসিয়ে দেয়। পরিণতিতে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার এবং শেখ মুজিবুর রহমানসহ সব রাজবন্দীর মুক্তি দিতে বাধ্য হয় আইয়ুব সরকার। শেষাবধি গোলটেবিল বৈঠকেও শেষরক্ষা হয় না, আইয়ুব সরকারের পতন ঘটে। সেনাপ্রধান জেনারেল ইয়াহিয়া খানের নেতৃত্বে আরেকটি সামরিক অভ্যুত্থান ঘটে- প্রেসিডেন্ট ও প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক হন এই দানব।

সত্তরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জয়লাভ ঘটে। কিন্তু সামরিক-জান্তা ইয়াহিয়া শাসকচক্রের ষড়যন্ত্র চলে জুলফিকার আলী ভুট্টোর মদদে। এবং বাঙালি জাতির নেতা শেখ মুজিবুর রহমান অসীম সাহসিকতায় স্বাধীনতার সশস্ত্র যুদ্ধের দিকে নিয়ে যান পুরো বাঙালি জাতিকে। শেখ সাহেব পাকিস্তানি দখলদারদের হাতে বন্দী হলে তাজউদ্দীন আহমদ নেতৃত্ব দেন স্বাধীনতার সেই সশস্ত্র যুদ্ধে। মেজর জিয়াউর রহমান তখন সেই একাত্তরের মার্চে চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্টে ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টাল সেন্টারে সেকেন্ড-ইন-কমান্ড হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন। পাক দখলদার বাহিনীর ‘অপারেশন সার্চলাইট’ কার্যকর করে বর্বর গণহত্যাযজ্ঞ শুরুর অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই মেজর জিয়াউর রহমান তাঁর অধীন বাঙালি অফিসার ও সেনাদের নিয়ে বিদ্রোহ করেন এবং তাঁর তখনকার কমান্ডিং অফিসারকে (পশ্চিম পাকিস্তানি) নির্মূল করে দখলদার পাক-সেনাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করেন। তিনি চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে ২৭ মার্চ নিজেকে ‘হেড অব প্রভিশনাল গভর্নমেন্ট’ বলে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেন এবং পরে একই ঘোষণা পরিমার্জন করে জাতির প্রধান নেতা শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেন (সাংবাদিক-লেখক মাহফুজ উল্লাহর ‘প্রেসিডেন্ট জিয়া : রাজনৈতিক জীবনী’ বইয়ের তথ্য/পাতা-২৬)। সে ঘোষণা বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধযুদ্ধে উদ্বুদ্ধ করে। সারা দেশে বিভিন্ন এলাকায় দখলদার পাক-সেনাদের বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিরোধযুদ্ধ শুরু হয়। সবারই জানা তার পরের ইতিহাস। নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ মানুষের আত্মাহুতি আর দখলদার পাক-সেনাদের দ্বারা আড়াই লাখ থেকে ৬ লাখের মতো মা-বোনের সম্ভ্রমহানির নিষ্ঠুরতার মধ্যে অর্জিত হয় বাঙালির হাজার বছরের স্বপ্ন- স্বাধীনতা। তবু আওয়ামী লীগের রাজনীতির অসীম সীমাবদ্ধতা!

আওয়ামী লীগ কর্মীরা ১৯৫৭ সালের পরে দলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মওলানা ভাসানীর (যখন তিনি ন্যাপ সভাপতি) সভা-সমাবেশে হামলা করেছেন, খোদ মওলানা ভাসানীর ওপর ইট-পাটকেল ছুড়েছেন। ষাটের দশকের শেষভাগে আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মিসেস আমেনা বেগম কারাবন্দী শেখ মুজিবুর রহমান ও অন্যসব নেতার অনুপস্থিতিতে সারা দেশ ঘুরে ঘুরে ছয় দফার প্রচার চালালেন, সেই দুঃসাহসী ও আপসহীন নেত্রীকে ছুড়ে ফেলে দিলেন শীর্ষ-নেতারা। একইভাবে যে তাজউদ্দীন আহমদ দলের জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করে একটানা নেতৃত্ব দিলেন এবং একাত্তরে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে অস্থায়ী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নেতৃত্ব দিলেন, তাঁকেও ১৯৭৪ সালে অর্থমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করানো হলো। পঞ্চাশের দশকেই মেধাবী ব্যক্তিত্ব দলের অত্যন্ত শক্তিশালী সংগঠক অলি আহাদকে বেরিয়ে যেতে বাধ্য করা হয়। আরও অনেক ত্যাগী নেতা ছিটকে পড়ে গেলেন; শেষ পর্যন্ত ড. কামাল হোসেন যার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের একটি শক্তিশালী গ্রুপ শেখ হাসিনাকে বিদেশ থেকে এনে (১৯৮১ সালের ১৭ মে) দলের সভানেত্রীর দায়িত্ব দিলেন, তাঁকে বেরিয়ে যেতে বাধ্য করা হলো। আওয়ামী লীগের আরও অনেক ভালো সংগঠককে দল থেকে বিতাড়িত করা হয়েছে। এই আওয়ামী লীগের নেতাদের কাছে কী আশা করবে দেশবাসী! ১৯৭২-৭৫- সাড়ে তিন বছরে আওয়ামী লীগ আমলে বিপুলসংখ্যক বামপন্থি ও প্রগতিশীল নেতা-কর্মী নিহত হয়েছেন। সেই সাড়ে তিন বছরের শাসনকাল ছিল ক্ষমতাবানদের ক্ষমতার দাপট দেখানোর। সারা দুনিয়ার মিডিয়ায় তা প্রকাশ পেয়েছে। শেষাবধি দলটির শীর্ষ নেতা তাঁর আশপাশের ‘চাটার দল’-এর সঙ্গে আর কুলোতে না পেরে একদলীয় বাকশাল সরকার কায়েম করেছিলেন, তাঁর সারা জীবনের ‘গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াই’ থেকে সরে এসেছিলেন পঁচাত্তরের জানুয়ারিতে।

আওয়ামী লীগ নেতারা এখন জিয়াউর রহমানের মতো ‘বীরউত্তম’ খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযুদ্ধ সেক্টর কমান্ডার ও ব্রিগেড কমান্ডার (‘জেড’ ফোর্স কমান্ডার)-কে চূড়ান্ত অপমান করার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন; এমনকি তাঁর কবর ও লাশ নিয়ে মিথ্যাচার করে চলেছেন। সেসবের তো প্রত্যক্ষ সাক্ষী ছিলেন অনেকেই। একাত্তরে ভারতীয় সামরিক বাহিনীর গোয়েন্দা বিভাগ অত্যন্ত তৎপর ছিল যাতে মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে কোনো পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর গোয়েন্দা/চর ঢুকে না যায়। জিয়াউর রহমান কেন, অন্য কোনো সেক্টর কমান্ডার বা একজন সাধারণ মুক্তিযোদ্ধাও ‘পাকিস্তানি চর’ হয়ে ঢুকবে তা একেবারেই অকল্পনীয়। এখন সংসদে দাঁড়িয়ে উল্টাপাল্টা বলা হয়। ভারতীয় সামরিক অফিসাররা কি এতটাই ‘রাম-বলদ’ ছিল যে জিয়াউর রহমান সেখানে সেক্টর ও ব্রিগেড হেডকোয়ার্টার্সে বসে ‘পাকিস্তানের চর’ হিসেবে কাজ করে যাবেন আর তারা তা চোখ বুজে সহ্য করে যাবেন! এটা কেমন মূর্খামি! কেন বিএনপির বিরুদ্ধে অপরিসীম গাত্রদাহ প্রকাশ করা হচ্ছে? জনগণ সবকিছুই জানে-বোঝে। জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে কর্তৃত্ববাদী শাসনের জবাব একদিন তো পেতেই হবে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বকে।

লেখক : বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব

সাবেক সংসদ সদস্য ও

ডাকসু সাধারণ সম্পাদক।

সর্বশেষ খবর