বৃহস্পতিবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

বজ্রপাতে প্রাণহানি

আগাম সতর্কতার বিকল্প নেই

চলতি বছরের সাড়ে নয় মাসে দেশে বজ্রপাতে ৩২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। ২০১১ সাল থেকে গত ১১ বছরে বজ্রপাতে ২ হাজার ৮০০ জনের মৃত্যু হয়। বজ্রপাতে মৃত্যু ঠেকাতে ৪৭৬ কোটি টাকার একটি প্রকল্প নিয়েছে সরকার। ২০১৫ সালে বজ্রপাতকে জাতীয় দুর্যোগ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সে বছর বজ্রপাতে মারা যান ২২৬ জন। এরপর ২০১৬ সালে ৩৯১ আর ২০১৮ সালে ৩৫৯ জনের মৃত্যু হয় বজ্রপাতে। ২০১৯ সালে সে সংখ্যা কিছুটা কমে আসে, ১৯৮ জনের মৃত্যু হয় ওই বছর। গত বছর অর্থাৎ ২০২০ সালে সারা দেশে বজ্রপাতে অন্তত ৩৮০ জন প্রাণ হারান। বিশেষজ্ঞদের মতে সাধারণত মে মাসে বজ্রপাতে মৃত্যুর সংখ্যা বেশি থাকে। এ বছরের মে মাসেও ব্যাপক প্রাণহানি ঘটেছে। ধান কাটার জন্য মে মাসে কৃষক মাঠে কাজ করেন। আর মাঠে কাজ করার সময় বজ্রপাতে কৃষকের অনেকেই মৃত্যুবরণ করেন। সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য যে মেঘের সৃষ্টি হচ্ছে তাতে মেঘের ওপর ও নিচের স্তরে যে বিদ্যুৎ প্রবাহিত হওয়ার কথা অর্থাৎ পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসার যে প্রবণতা তা আগের চেয়ে বেশি। এর কারণ দেশের মানুষ এখন মেটালিক বডির পণ্য বেশি ব্যবহার করছে। আমাদের দেশে বজ্রপাতের সময় নিজেদের রক্ষা করার প্রস্তুতিও মানুষের নেই। আগের চেয়ে উন্মুক্ত স্থানে এখন মানুষ বেশি চলাচল করে। এ সময় তাদের সঙ্গে থাকা মেটালিক বস্তু যেমন মোবাইলের কারণে বজ্রপাতে ক্ষতির আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। প্রাকৃতিক এ দুর্যোগ যেহেতু বন্ধ করা সম্ভব নয় তাই এ সম্পর্কে ব্যাপক প্রচার চালাতে হবে। বাসাবাড়িতে বজ্রপাত নিরোধক অ্যান্টেনা ব্যবহার করা যেতে পারে। বিশ্বে এখন ইউরোপসহ বহু দেশে বজ্রপাত হবে কি না তা আগাম জানার সেন্সর প্রযুক্তি চলে এসেছে। আমাদের দেশেও বজ্রপাতের আগাম সতর্কতা পাওয়া যায় এমন প্রযুক্তি আয়ত্তে আনতে হবে। এ ব্যাপারে সাধারণ মানুষকে মোবাইল প্রযুক্তির মাধ্যমে সতর্কবাণী পৌঁছে দেওয়া যেতে পারে। বজ্রপাত থেকে রক্ষায় দেশজুড়ে তাল জাতীয় গাছ ব্যাপক হারে লাগানোর কথা ভাবা যেতে পারে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর