সোমবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

ফাতেমা ধান

উচ্চ ফলনশীলতায় যার জুড়ি নেই

দেশের প্রধান খাদ্য চালের উৎপাদন গত ৫০ বছরে তিন গুণ বেড়েছে। এ সময়ে জনসংখ্যা বেড়েছে শতকরা ১২০ ভাগ। সেদিক থেকে উৎপাদন সন্তোষজনক হলেও একই সময়ে জনপ্রতি খাদ্যগ্রহণের পরিমাণও বেড়েছে উল্লেখযোগ্যভাবে। এক সময় যে বাংলাদেশ ছিল সাংবার্ষিক মঙ্গার দেশ সে জনপদে অনাহারে থাকার লজ্জা দূর হয়েছে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির কল্যাণে। তারপরও ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণে দেশের প্রধান খাদ্য চালের উৎপাদন আরও বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। এ ক্ষেত্রে আশার আলো দেখাতে পারে ফাতেমা জাতের ধান। প্রতি বিঘায় ৫০ মণ ধান উৎপাদনে সক্ষম এ ধানের উদ্ভব বাগেরহাট জেলার ফকিরহাটের বেতাগায়। ওই গ্রামের লেবুয়াত শেখ নিজেদের জমিতে ২০১৬ সালে প্রথম ওই ধান চাষ করেন। ওই বছর বোরো মৌসুমে তার বাড়ির পাশের জমিতে হাইব্রিড আফতাব-৫ জাতের ধান কাটার সময় তিনটি ভিন্ন জাতের ধানের শীষ তিনি দেখতে পান। ওই তিনটি শীষ অন্যগুলোর চেয়ে অনেক বড় এবং শীষে ধানের দানার পরিমাণও ছিল অনেক বেশি। এরপর ওই ধানের শীষ তিনটি বাড়িতে এনে শুকিয়ে বীজ হিসেবে ব্যবহার করে এ ধান চাষ শুরু করেন। তিনি তার মায়ের নামানুসারে নাম না জানা এ ধানের নাম রাখেন ‘ফাতেমা ধান’। কৃষি বিজ্ঞানীদের মতে, এ ধানের ফলন গোটা বিশ্বকে তাক লাগাতে পারে। এত বেশি ফলন পাওয়া যায়, এমন কোনো জাতের ধান বাংলাদেশে নেই। খরা ও লবণাক্ততা সহনশীল এ ধান সারা দেশে চাষের উপযোগী। এ ধান যদি সারা দেশে চাষ করা যায় তাহলে বার্ষিক উৎপাদন ৫ কোটি টন ছাড়িয়ে যাবে। বাগেরহাটে উদ্ভাবিত এ ধানটি দেশের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। ধানটি নিয়ে বিজ্ঞানীরা গবেষণা করলে এর মান আরও বাড়ানো সম্ভব হবে। চিকন ও সুস্বাদু এ ধান সারা দেশে ছড়িয়ে পড়লে বাংলাদেশ চাল রপ্তানিকারক দেশে পরিণত হওয়ার কৃতিত্ব দেখাবে।  উচ্চ ফলনশীল ফাতেমা ধানের কোনো জুড়ি নেই। এ ধান উৎপাদনে লাভবান হবেন কৃষকরাও।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর