শনিবার, ২৩ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

সড়ক দুর্ঘটনা

অপমৃত্যু বন্ধ হোক

দেশের সড়ক-মহাসড়কে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির কারণে নিয়মিত বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল। সরকারি-বেসরকারি নানা উদ্যোগের পরও দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হার কমানো যাচ্ছে না। উপরন্তু দেশে মোটরসাইকেলের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় দুর্ঘটনায় বড় ভূমিকা রাখছে এ দ্বিচক্রযানটি। গত কয়েক বছরের দুর্ঘটনা পর্যবেক্ষণ থেকে জানা যায়, বর্তমানে দুর্ঘটনায় মৃতের অন্তত ৩৫ শতাংশই হচ্ছেন মোটরসাইকেলের চালক ও আরোহী। অন্যদিকে মহাসড়কে চলাচলকারী স্বল্পগতির থ্রি-হুইলার, রিকশা, ভ্যান, বিপজ্জনক নসিমন-করিমনের কারণে দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। মহাসড়কে পৃথক লেন না থাকায় বেপরোয়া গতির বাস-ট্রাকের সামনে পড়ে ছোট যানবাহনের চালক-আরোহীরা করুণ মৃত্যুর শিকার হচ্ছেন। এ প্রেক্ষাপটে ‘গতিসীমা মেনে চলি/সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করি’ শীর্ষক প্রতিপাদ্য নিয়ে দেশে গতকাল পঞ্চমবারের মতো জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস পালিত হয়। সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ২০১৮ সালে সরকার জাতীয় সংসদে নতুন আইন পাস করেছিল। কিন্তু এত দিন তা কার্যকর হতে পারেনি সড়ক পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনগুলোর বিরোধিতার কারণে। আইনটি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সরকার পরিপত্র জারি করে, যাতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত, আহত ও সম্পদ ধ্বংসের জন্য ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা বলা হয়। ১৯৮৩ সালের সড়ক পরিবহন অধ্যাদেশে ক্ষতিপূরণের যে বিধান ছিল তা-ও বাতিল হয়ে যায় নতুন আইন প্রণয়নের কারণে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পাঁচটি রিস্ক ফ্যাক্টরের সমাধান করা গেলে সড়ক দুর্ঘটনা অনেকাংশেই কমিয়ে আনা সম্ভব। ড্রাইভারসহ যাত্রীর সিটবেল্ট পরিধান বাধ্যতামূলক করা হলে সামনের সিটের ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ এবং পেছনের সিটের ক্ষেত্রে ৭৫ শতাংশ যাত্রীর দুর্ঘটনায় আহত হওয়া রোধ করা সম্ভব। মোটরসাইকেল আরোহীদের যথাযথ ও মানসম্মত হেলমেট ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অঙ্গীকার করেছিল ২০২০ সালের মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনা অর্ধেকে নামিয়ে আনবে। কিন্তু আমরা প্রশ্ন তুলতে পারি, সেই অঙ্গীকার পূরণের জন্য সরকারি কর্তৃপক্ষগুলো কী পদক্ষেপ নিয়েছেন?

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর