রবিবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

রোহিঙ্গা ক্যাম্প

খুনি ও নেপথ্যের শক্তিকে চিহ্নিত করতে হবে

জাতীয় ঐক্যের সরকার নামে পরিচিত মিয়ানমারের নির্বাসিত সরকার আশ্বাস দিয়েছিল বর্তমানে সেনাশাসিত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটিতে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হলে রোহিঙ্গাসহ অন্যান্য নৃগোষ্ঠী অন্যদের মতোই সব ধরনের নাগরিক অধিকার ভোগ করবে। অতীতে রোহিঙ্গাদের ওপর যে নৃশংসতা চালানো হয়েছে তার পুনরাবৃত্তি হবে না। মিয়ানমারের এই সেনাবাহিনী কয়েক দশক ধরে নৃতাত্তি¡ক গোষ্ঠী-অধ্যুষিত এলাকায় জাতি, ধর্ম, লিঙ্গ বা রাজনৈতিক বিশ্বাসের কারণে মানবতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধ চালিয়ে আসছে। বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের নিয়ে ষড়যন্ত্রের শেষ নেই। সম্প্রতি রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহকে খুন করা হয়। কক্সবাজারের উখিয়ায় লম্বাশিরা রোহিঙ্গা শিবিরে একদল সন্ত্রাসী তাকে হত্যা করে পালিয়ে যায়। ঘটনাটি খুবই উদ্বেগজনক। মুহিবুল্লাহ ছিলেন আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের চেয়ারম্যান। ২০১৭ সালে অন্যান্য শরণার্থীর সঙ্গে নিজ দেশ মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত হয়ে বাংলাদেশে আসার পর থেকে তিনি রোহিঙ্গা শরণার্থী সমস্যাটি বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে তুলে ধরতে সচেষ্ট ছিলেন। তিনি জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ও মিয়ানমারে গণহত্যার বিচার দাবি করেন। বৃহস্পতিবার রাতে ময়নারঘোনা পুলিশ ক্যাম্পের সদস্যরা স্থানীয় মদুতুল উম্মাহ মাদরাসা ও আশপাশ এলাকায় প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে ‘ব্লকরেইড’ চালিয়েছিলেন। অন্যান্য ক্যাম্প এলাকায়ও একই সঙ্গে অভিযান চালানো হয়। এর ঘণ্টা দেড়েক পর দারুল উলুম নাদওয়াতুল ওলামা আল-ইসলামিয়াহ মাদরাসায় ওই হামলা হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দাবি পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। হামলার শিকার মাদরাসা ও মসজিদটি পরিচালনা করে ‘ইসলামী মাহাস’ নামে রোহিঙ্গাদের একটি সংগঠন। প্রত্যাবাসন নিয়ে উভয় পক্ষের দ্ধন্ধ চলে আসছিল। এখন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তথা সরকারের দায়িত্ব সহিংসতার সঙ্গে জড়িদের আইনের আওতায় আনা। এ হত্যা প্রমাণ করে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের নিরাপত্তা কতটা ভঙ্গুর। মুহিবুল্লাহর হত্যারহস্য উন্মোচনের পাশাপাশি রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরের নিরাপত্তা জোরদারের প্রয়োজনীয় সব উদ্যোগ নিতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর