সোমবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

গণতন্ত্র বাঁচাতে মেডিকেল বোর্ড!

মহিউদ্দিন খান মোহন

গণতন্ত্র বাঁচাতে মেডিকেল বোর্ড!

হাসপাতালে ভর্তি জটিল রোগে আক্রান্ত কোনো রোগীর চিকিৎসার জন্য অনেক সময় মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। রোগীর অবস্থা শোচনীয় হলে তার চিকিৎসা বিষয়ে এককভাবে কোনো চিকিৎসকের পক্ষে সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। তখন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে বোর্ড গঠন করে সেই বোর্ড-সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে রোগীর চিকিৎসা করা হয়। বোর্ড সদস্য-চিকিৎসকরা রোগীর শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ, নানান পরীক্ষা-নিরীক্ষার রিপোর্ট পর্যালোচনা করে সম্মিলিতভাবে সিদ্ধান্ত নেন। তবে মেডিকেল বোর্ড গঠনই একজন রোগীর সুস্থ হওয়ার নিশ্চয়তা দেয় না। মনে পড়ে ১৯৭৯ সালের ৯ মার্চ হঠাৎ ব্রেইনস্ট্রোকে আক্রান্ত হন তৎকালীন সিনিয়র মন্ত্রী মশিয়ুর রহমান যাদু মিয়া। সেই স্ট্রোক এতটাই সিভিয়ার ছিল যে, তিনি কোমায় চলে যান। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের উদ্যোগে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সমন্বয়ে গঠন করা হয়েছিল মেডিকেল বোর্ড। কিন্তু তাঁকে বাঁচানো যায়নি। আসলে রোগ যখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় তখন কোনো বোর্ডই কাজে আসে না। এ জন্য চিকিৎসকগণ রোগের লক্ষণ দেখা দিলেই প্রয়োজনীয় চিকিৎসার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। হায়াত-মউত আল্লাহর হাতে- এ কথায় বিশ্বাস রাখার পরও মানুষকে চিকিৎসা ও ওষুধপথ্যের ওপর গুরুত্ব দিতে হয়। রোগ হলে তার চিকিৎসাও আছে। মেডিকেল বোর্ড সেই চিকিৎসা-প্রক্রিয়ারই একটি অংশ।

সম্প্রতি সেই মেডিকেল বোর্ডের বিষয়টি অত্যন্ত প্রাসঙ্গিকভাবেই আমাদের রাজনৈতিক আলোচনায় স্থান করে নিয়েছে। আর তার অবতারণা করেছেন বর্তমান নির্বাচন কমিশনের অন্যতম কমিশনার মাহবুব তালুকদার। গত ১০ অক্টোবর নির্বাচন কমিশন ভবনে ‘চলমান স্থানীয় নির্বাচন ও অন্যান্য প্রসঙ্গ- আমার কথা’ শিরোনামে এক লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেছেন, ‘নির্বাচন এখন কতিপয় জটিল অসুখে আক্রান্ত। এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় গণতন্ত্রের অবস্থা সংকটাপন্ন। একক ডাক্তারের পক্ষে তাকে বাঁচিয়ে তোলা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে মেডিকেল বোর্ড গঠনের কোনো বিকল্প নেই। মৃত্যুপথযাত্রী গণতন্ত্রকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরানো একান্ত অপরিহার্য। আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে আমরা গণতন্ত্র চাই কি না’ (বাংলাদেশ প্রতিদিন, ১১ অক্টোবর, ২০২১)। মাহবুব তালুকদার কেবল একজন সাবেক আমলা বা বর্তমান নির্বাচন কমিশনারই নন, একজন সুলেখক হিসেবেও তিনি পাঠকসমাজে সুপরিচিত। সম্প্রতি প্রকাশিত তার ‘আমলার আমলনামা’ বইটি পাঠকদের কাছে সমাদৃত হয়েছে। এক সময়ের ছাত্রনেতা, মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রবাসী সরকারের তথ্য বিভাগের দায়িত্ব পালন, প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা থেকে শুরু করে সরকারি প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ে গুরু দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। আমলার আমলনামা বইয়ে তিনি সেসব অভিজ্ঞতার কথাই তুলে ধরেছেন। লেখক হিসেবে উপমা ব্যবহারেও তিনি বেশ পারঙ্গম। তাই আমাদের গণতন্ত্র ও বর্তমান নির্বাচনব্যবস্থার হালহকিকত বোঝাতে রূপক অর্থেই মেডিকেল বোর্ডের প্রসঙ্গটি এনেছেন। তার এ উপমা বা উদাহরণের সঙ্গে দ্বিমত পোষণের কোনো অবকাশ আছে বলে মনে হয় না।

আমরা যদি সুস্থির মস্তিষ্কে একটু চিন্তা করি তাহলে আমাদের গণতন্ত্র ও নির্বাচনব্যবস্থার দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি সহজেই উপলব্ধিতে না আসার কথা নয়। অবস্থা এমন পর্যায়ে চলে গেছে যে, এর স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা সম্পর্কে কেউ আশাবাদী হতে পারছেন না। গণতন্ত্রকে সুস্থ করে তোলা এবং নির্বাচনব্যবস্থাকে সবল করে তোলার মূল দায়িত্ব যাদের ওপর ন্যস্ত, সেই রাজনৈতিক নেতৃত্বের মধ্যে এ ব্যাপারে কোনো বিকার আমরা লক্ষ্য করছি না। সরকার ও বিরোধী পক্ষ যার যার স্বার্থ রক্ষার বিষয়টি মাথায় রেখে কথা বলে যাচ্ছে। বিরোধী দল, বিশেষত বিএনপি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের কথা বলছে। তাদের মতে সে পথ একমাত্র নির্দলীয় সরকারের অধীনে সংসদ নির্বাচন। তারা মনে করেন এ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে না। তাই তারা নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। অপরদিকে সরকার ও ক্ষমতাসীন দলের নেতৃবৃন্দ ‘বিনা যুদ্ধে নাহি দিব সূচ্যগ্র মেদিনী’র ন্যায় পণ করে বলছেন, তারা সংবিধানের প্রতি অনুগত এবং যেহেতু সংবিধান অনুযায়ী তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কোনো সুযোগ নেই, তাই বিএনপিকে নির্বাচন করতে হলে তাদের সরকারকে ক্ষমতায় রেখেই তা করতে হবে।

এদিকে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ প্রায় শেষ হয়ে আসছে। আগামী বছরের মধ্য ফেব্রুয়ারিতে শেষ হয়ে যাবে নূরুল হুদা কমিশনের মেয়াদ। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে এ মুহূর্তে রাজনীতির মাঠ সরগরম। নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে বিতর্ক এড়াতে অভিজ্ঞ মহল সংবিধান মোতাবেক একটি আইন প্রণয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করছেন। তারা বলছেন যে, একটি স্থায়ী আইনই কেবল নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে প্রতি মেয়াদান্তে অনাবশ্যক বিতর্ক ও জটিলতার অবসান ঘটাতে পারে। এ প্রসঙ্গে স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ গত ৮ অক্টোবর একটি পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘নির্বাচন কমিশন গঠন একটি নিয়মিত প্রক্রিয়া। সংবিধানের ১১৮ নম্বর অনুচ্ছেদে এ-সংক্রান্ত আইন প্রণয়নের সুস্পষ্ট নির্দেশনা থাকার পরও আইন প্রণয়নের কাজটি এড়িয়ে চলা রহস্যজনক। বর্তমানে ও অতীতে যেসব দল রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে ছিল তারা এ কাজটি সযতেœ এড়িয়ে চলেছে।’ তিনি মনে করেন, একটি নতুন আইন প্রণয়নের মাধ্যমে সরকার তার দায় এড়াতে পারে। কারণ, বর্তমান সংসদে তাদের মেজরিটি রয়েছে। যদিও নতুন আইন প্রণয়নে সংসদে প্রধান বিরোধী দল ও মাঠের বিরোধী দল বিএনপিও তাদের অবস্থান পরিষ্কার করছে না। এ জন্য বিষয়টি রহস্যজনক। অন্যদিকে ১০ অক্টোবর বাংলাদেশ প্রতিদিনে প্রকাশিত সাক্ষাৎকারে সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজনের সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, ‘সংবিধান মেনে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হলে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের লক্ষ্যে একটি আইন প্রণয়নের কোনো বিকল্প নেই। তবে, আইন করলেই হবে না, আইনটি হতে হবে জনস্বার্থে, যাতে সৎ, নির্ভীক ও গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি নির্বাচন কমিশনে নিয়োগ পান।’ লক্ষণীয় হলো- দেশের বিশিষ্টজনেরা নির্বাচন কমিশন গঠনের নিমিত্তে স্থায়ী আইন করার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে উপলব্ধি করলেও আমাদের রাজনৈতিক নেতৃত্ব তা সযতেœই যেন এড়িয়ে যাচ্ছেন। এ বিষয়ে ড. তোফায়েল আহমেদের বক্তব্যের সত্যতা রয়েছে বিএনপির সাম্প্রতিক বক্তব্য-বিবৃতিতে। তারা ক্ষমতাসীন সরকারের পছন্দের ব্যক্তিদের দিয়ে গঠিত নির্বাচন কমিশনকে মেনে নেবে না বললেও একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠনের উপায় বা এ-সংক্রান্ত আইন প্রণয়ন বিষয়ে রহস্যজনক নিশ্চুপ। এর কারণটি অবশ্য সহজ বোধগম্য। কেননা, আমাদের সংবিধান প্রণীত ও গৃহীত হওয়ার পর যে ৫০ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে, এর মধ্যে বিএনপি একাধিকবার স্বল্প এবং পূর্ণ মেয়াদে সরকারে ছিল। বার দুয়েক সংসদে তাদের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতাও ছিল। কিন্তু ওই সময়ে এ-সংক্রান্ত আইন প্রণয়নের কোনো উদ্যোগ তারা নেয়নি। এখন যে কারণে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নির্বাচন কমিশন গঠন সংক্রান্ত আইন প্রণয়নের বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছে, অতীতে বিএনপিও একই কারণে একই কাজ করেছে। আর সে কারণটি হলো নিজেদের পছন্দের ব্যক্তিদের দিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন; যে কমিশন তল্পিবাহকের কাজ করবে।

এদিকে আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হকের বক্তব্যে সরকারের অবস্থান একেবারে স্পষ্ট হয়ে গেছে। সম্প্রতি একটি দৈনিককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ঐকমত্যের ভিত্তিতে যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়, সে মতে একটা সার্চ কমিটির মাধ্যমে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে। সেটা অতীতেও কয়েকবার হয়েছে। তিনি বলেছেন, মহামারী কভিডের কারণে এখন নতুন আইন করে ইসি গঠনের কোনো সুযোগ নেই। আইনমন্ত্রীর বক্তব্যে নতুন কিছু নেই এবং এটাই যে সরকারের সিদ্ধান্ত তা পরিষ্কার। কারণ সরকারের অন্যান্য মন্ত্রী ও নেতারাও গত কিছুদিন ধরে অনুরূপ বক্তব্যই দিয়ে আসছেন। এ অবস্থান থেকে সরকার সরে আসবে এমন সম্ভাবনাও আপাতত দেখা যাচ্ছে না।

তবে সচেতন মহল মনে করেন, আমাদের নির্বাচনব্যবস্থা নিয়ে যে সংকট বিরাজমান এর সমাধান নির্ভর করছে রাজনৈতিক নেতৃত্বের সদিচ্ছার ওপর। তারা যদি গণতন্ত্রের স্বার্থে ইতিবাচক অবস্থান নেন তাহলে যে কোনো সমস্যার সমাধান সম্ভব। আইনমন্ত্রী কভিড পরিস্থিতির কারণে নতুন আইন করা সম্ভব নয় বললেও অনেকেই এর সঙ্গে একমত হতে পারছেন না। তারা বলছেন, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের এখনো প্রায় চার মাস বাকি আছে। সরকার ইচ্ছা করলে এর মধ্যেই একটি আইন করতে পারে। এ প্রসঙ্গে তারা ১৯৭৫ সালে সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনী (বাকশাল প্রতিষ্ঠা) এবং ১৯৯৬ সালের ত্রয়োদশ সংশোধনীর (তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা) উদাহরণকে সামনে আনতে চান। অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত সময়ে সংবিধানের ওই দুটি সংশোধনী গৃহীত হয়েছিল। সে তুলনায় এখন বহু সময় হাতে আছে। দরকার শুধু সদিচ্ছা। তবে সে সদিচ্ছার কোনো প্রতিফলন যে আদৌ দেখা যাবে এমন আশা করা বোধকরি সমীচীন হবে না। ফলে নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে যে বিতর্ক, তার অবসানের কোনো সম্ভাবনা আপাতত দেখা যাচ্ছে না।

এ নিবন্ধটি যখন লিখছি তখনই হাতে এলো বাংলাদেশ প্রতিদিনের ১৫ অক্টোবরের সংখ্যাটি। তাতে সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত নেতা অবসরপ্রাপ্ত মেজর আখতারের একটি নিবন্ধ পড়লাম। তিনি তার নিবন্ধে দেশের বিদ্যমান নির্বাচন ব্যবস্থাপনার সংস্কারের লক্ষ্যে বেশ কিছু পরামর্শ বা প্রস্তাবনা উল্লেখ করেছেন। তার ওইসব প্রস্তাবনাকে আমার বাস্তবসম্মত মনে হয়নি। কেননা, তিনি নির্বাচনী কার্যক্রম থেকে ডিসি-ইউএনও, পুলিশ-র‌্যাব, এমনকি সেনাবাহিনীকেও দূরে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন। পরিবর্তে ব্যাংকের কর্মকর্তাদের রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব দেওয়ার কথা বলেছেন। তার এ প্রস্তাবনা বাস্তবতার সঙ্গে কতটা সংগতিপূর্ণ তা নিয়ে অবশ্যই প্রশ্ন তোলার অবকাশ আছে। কেননা, অতীতে যে নির্বাচনগুলো সুষ্ঠু ও সবার কাছে গ্রহণযোগ্য বলে স্বীকৃত হয়েছে, (১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১, ২০০৮) সেগুলোতে ডিসি-ইউএনওরাই রিটার্নিং-সহকারী রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করেছে। আর আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পালন করেছে পুলিশ বাহিনী। তাদের সহায়তা করেছে বিজিবি, র‌্যাব এবং সেনাবাহিনী। সুতরাং রাষ্ট্রের এসব অঙ্গ প্রতিষ্ঠানকে সরিয়ে রেখে সংসদ নির্বাচনের মতো একটি সুবিশাল কর্মযজ্ঞ সম্পাদন যে একেবারেই সম্ভব নয়, তা না বললেও চলে। মেজর আখতারের প্রস্তাবনাগুলোকে আমার কাছে ‘মাথাব্যথার জন্য মাথা কেটে ফেলার শামিল’ বলেই মনে হলো।

তাহলে এ সমস্যার সমাধান কী? মাহবুব তালুকদারের বক্তব্যের প্রাসঙ্গিকতা এখানেই। বস্তুত আমাদের নির্বাচনব্যবস্থা এবং গণতন্ত্র জটিল রোগে আক্রান্ত। এর চিকিৎসায় যে মেডিকেল বোর্ড গঠন করা দরকার তাতে দেশের সব রাজনৈতিক দলের অংশীদারিত্ব থাকতে হবে।

নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে হলে কেবল তত্ত্বাবধায়ক সরকারই দরকার এ কথা আমি মনে করি না। যদি পৃথক আইনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনকে আক্ষরিক অর্থেই শক্তিশালী ও কার্যকর করা যায়, তাহলে নির্বাচনে ক্ষমতাসীন সরকারের হস্তক্ষেপ বা প্রভাব বিস্তারের সুযোগ সংকুচিত হয়ে আসবে। এটা স্মরণে রাখা দরকার, নির্বাচন কমিশনের হাত শক্তিশালী হলে সরকার তার হাত গুটিয়ে নিতে বাধ্য হবে। যে মরণব্যাধিতে আমাদের গণতন্ত্র ও নির্বাচনব্যবস্থা এখন শয্যাশায়ী, রাজনৈতিক ঐকমত্যের মেডিকেল বোর্ডই তাকে সুস্থ করে তুলতে পারে।

                লেখক : সাংবাদিক ও রাজনীতি বিশ্লেষক।

সর্বশেষ খবর