বুধবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

বায়ুদূষণ

কর্তাব্যক্তিদের কুম্ভকর্ণের ঘুম ভাঙুক

বায়ুদূষণের দিক থেকে ঢাকা সারা বিশ্বের মেগা সিটিগুলোর মধ্যে শিরোপা অর্জন প্রতিযোগিতায় লড়ছে কয়েক বছর ধরে। কয়েকবার শিরোপা অর্জনও করেছে দেড় কোটি মানুষের এই মহানগরী। এ দুর্নাম রোধে সরকারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোর উদ্যোগেরও অভাব নেই। কিন্তু তা সফল হচ্ছে না সরকারি কর্মচারী-কর্মকর্তা নামের যে সাদা হাতিদের এসব দেখাশোনার জন্য পোষা হয় তাদের কুম্ভকর্ণের ঘুমের কারণে। বিশেষজ্ঞদের মতে বায়ুদূষণের সবচেয়ে বড় উৎস তিনটি- অনিয়ন্ত্রিত নির্মাণ, যানজট ও ইট ভাটা। বর্তমানে মহানগরীজুড়ে চলা বিশাল নির্মাণযজ্ঞের ফলেই বাড়ছে বায়ুদূষণ। ঢাকা সিটির বাইরে যে নির্মাণকাজ চলছে তা-ও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণহীন। এসব ধুলোদূষণ রোধে পরিবেশ অধিদফতর ও সিটি করপোরেশনের কোনো ভূমিকা নেই। পরিবেশ অধিদফতরের ক্লিন এয়ার অ্যান্ড সাসটেইনেবল এনভায়রনমেন্ট প্রজেক্টের বায়ুমান সূচকে ২০ অক্টোবর ঈদে মিলাদুন্নবীর ছুটির দিনে ঢাকার বায়ুমান সহনীয় পর্যায়ে ছিল। এর পরদিনই এ নিয়ে সতর্ক করা হয়। আর ২২ ও ২৩ অক্টোবরের বায়ুমানকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ এবং ২৪ অক্টোবরের বায়ুমানকে ‘অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর’ বলা হয়। এরই মধ্যে শিকাগো ইউনিভার্সিটির এনার্জি পলিসি ইনস্টিটিউট প্রকাশিত সর্বশেষ এয়ার কোয়ালিটি লাইফ ইনডেক্স অনুযায়ী বায়ুদূষণের কারণে ঢাকায় মানুষের গড় আয়ু প্রায় সাত বছর সাত মাস কমেছে। বায়ুদূষণ মানুষের আয়ু কেড়ে নিলেও তা রোধের কোনো পদক্ষেপ নেই বললেই চলে। একদিকে শব্দদূষণ, অন্যদিকে বায়ুদূষণ ঢাকাকে বসবাসের অযোগ্য করে তুলছে। যানজট আর ঐতিহ্যগত নকল-ভেজালের মহানগরী হিসেবে এর দুর্নাম তো অক্ষতই রয়ে গেছে। দেড় কোটি মানুষের স্বার্থে ঢাকার বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নিতে হবে। তবে কালো ধোঁয়ার অত্যাচার রোধ করতে  হবে সবকিছুর আগে। পরিবেশ অধিদফতরের কুম্ভকর্ণের ঘুম ভাঙানোর উদ্যোগও নিতে হবে আগেভাগে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর