দুনিয়াজুড়ে প্রাণঘাতী রোগে পরিণত হয়েছে স্ট্রোক। এ রোগ সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়াতে আজ পালিত হচ্ছে বিশ্ব স্ট্রোক দিবস। এ দিবস সামনে রেখে পরিচালিত এক জরিপে বলা হয়েছে- বাংলাদেশে প্রতি ১ হাজারে ১১ দশমিক ৪ জন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়। দেশের আট বিভাগের ৬৪ জেলার ২৫ হাজার ২৮৭ জনের অংশগ্রহণে এ জরিপ পরিচালনা করেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স অ্যান্ড হসপিটালের তিন এবং কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক চিকিৎসক। জরিপের ফলাফলে দেখা যায়, ১ হাজার জনের মধ্যে ময়মনসিংহে সর্বোচ্চ ১৪ দশমিক ৭১ আর রাজশাহীতে সর্বনিম্ন ৭ দশমিক ৬২ জন স্ট্রোকে আক্রান্ত। খুলনা বিভাগে ১৪ দশমিক ১, বরিশালে ১৩ দশমিক ৪১, ঢাকায় ১২ দশমিক ২৭, সিলেটে ১১ দশমিক ৮৮, চট্টগ্রামে ১১ দশমিক ৪ এবং রংপুরে ৮ দশমিক ৯৬ স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছে। চিকিৎসাবিজ্ঞানীদের মতে স্ট্রোক হলে মুখ বাঁকা হয়ে আসা, হাত-পা অবশ লাগা, দৃষ্টি ঝাপসা হওয়ার মতো উপসর্গ দেখা দেয়। প্রথম উপসর্গ দেখা দেওয়ার সাড়ে ৪ ঘণ্টার মধ্যে রোগীকে হাসপাতালে আনলে জীবন বাঁচানো সহজ হয়। দেরি হলে ঝুঁকি বাড়তে থাকে। উচ্চ রক্তচাপ, অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, ধূমপান, জাঙ্কফুড খাওয়ার ফলে স্ট্রোকের ঝুঁকি থাকে। প্রাণঘাতী এ রোগ থেকে নিজেদের সুরক্ষা চাইলে সবার আগে দরকার স্ট্রোক সম্পর্কে সচেতনতা। প্রাণঘাতী রোগে পরিণত হলেও দেশের সিংহভাগ মানুষ স্ট্রোক সম্পর্কে সচেতন নয়। অনেকে হৃদরোগের সঙ্গে স্ট্রোক গুলিয়ে ফেলে। স্ট্রোক থেকে সুরক্ষায় নিয়ন্ত্রিত জীবনের বিকল্প নেই। ধূমপান যে বিষপান সে সত্যকে স্বীকার করে বদভ্যাস থেকে সরে আসতে হবে। ক্ষতিকর খাবার থেকে দূরে থাকাও জরুরি। হাইপার টেনশন স্ট্রোকের অন্যতম কারণ। অকারণে দুশ্চিন্তায় ভোগা কিংবা ক্ষুব্ধ হওয়ার প্রবণতা থেকে সরে আসতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা আক্রান্ত হলেই সময়মতো ছুটে যেতে হবে হাসপাতালে। জনস্বাস্থ্যের স্বার্থে স্ট্রোক সম্পর্কে ব্যাপক প্রচার প্রয়োজন। জনসচেতনতা গড়ে উঠলে স্ট্রোক নামের দানবের আগ্রাসন থামানো সম্ভব হবে।