রবিবার, ৩১ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

চাপে রয়েছে সাধারণ মানুষ

ড. হোসেন জিল্লুর রহমান

চাপে রয়েছে সাধারণ মানুষ

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাকের চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেছেন, করোনার ধাক্কায় আমাদের মধ্যবিত্তরা হারিয়ে গেছেন। অবশ্য এর আগে থেকেই মধ্যবিত্তরা বেশ চাপের মধ্যে ছিলেন। আর করোনা এসে তাদের আরও নিচে নামিয়ে দিয়েছে। তিনি বলেন, করোনার ধাক্কায় তারা হারিয়ে গেছেন। অর্র্থনৈতিক সক্ষমতা, সামাজিক অবস্থান, শিক্ষা- সব খানেই তারা বঞ্চিত। আমাদের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার মোটামুটি ভালো। তবে এই মধ্যবিত্ত শ্রেণি আর অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকরা যে কাজ হারিয়েছেন তা এখনো ফিরে পাননি। আবার যাদের আয় কমেছিল তাদের আয় এখনো আগের জায়গায় যায়নি। ফলে সামগ্রিকভাবে সাধারণ মানুষ বেশ চাপের মধ্যে রয়েছে। বৃহস্পতিবার তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে এসব কথা বলেন।

পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) নির্বাহী চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমান আরও বলেন, করোনাভাইরাস মহামারীতে আর্থিক ও স্বাস্থ্যগত ক্ষতির চেয়ে বড় ক্ষতি হয়েছে মানবসম্পদে। এটার ঝুঁকি এখনো কমেনি। মানবসম্পদ খাতের ক্ষতি কাটাতে সরকারের উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। এ ছাড়া দীর্ঘ বিরতির পর যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হয়েছে তাতে যে শিক্ষা খাতের ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া যাবে এ নিয়েও সংশয় রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, করোনা মহামারীর আগে প্রতি বছর যেখানে ১ শতাংশ হারে দারিদ্র্য বিমোচন হতো সেখানে করোনার কারণে এখন বছরে ৪ শতাংশ মানুষ নতুন করে দরিদ্র হচ্ছে। এ কারণে করোনাকালে নতুন করে আড়াই কোটি মানুষ চরম দরিদ্রের তালিকায় নাম লিখিয়েছে। আবার অর্থনীতি রিকভারি, করোনা মোকাবিলা ও দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচি নতুন করে এক দরিদ্রের ফাঁদে আটকে পড়ছে। সরকারের নেওয়া প্রণোদনা প্রকল্পের অর্থ যারা পাওয়ার কথা ছিল তারা ঠিকমতো পাননি। বিশেষ করে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের মানুষ ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী যারা ব্যাংকের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত তাদের বেশির ভাগই এ প্রণোদনা প্যাকেজের অর্থ পাননি। ফলে রিকভারিটা যেভাবে হয়েছে বা হচ্ছে এর চেয়েও ভালো হতে পারত। এখানে সরকারের এখনো করণীয় রয়েছে।

এদিকে আবার রেমিট্যান্স প্রবাহে ও রপ্তানি খাতেও এক ধরনের নেতিবাচক অবস্থার সৃষ্টি হতে যাচ্ছে। ফলে বিদেশের শ্রমবাজারগুলোর দিকেও দৃষ্টি দিতে হবে। রপ্তানির জন্য নতুন নতুন বাজার খুঁজতে হবে। আর দেশের অভ্যন্তরে কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগ কীভাবে বাড়ানো যায় সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। একইভাবে আমাদের অভ্যন্তরীণ কৃষি ও শিল্প উৎপাদন বাড়ানো জরুরি।

হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, কয়েক মাস ধরে ক্রমাগতভাবে পণ্যমূল্য অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে। এটা বিশ্ববাজারেও বাড়ছে। কেননা কভিড-পরবর্তী বিশ্ব অর্থনীতিটা আবার নতুন করে জেগে উঠছে। তবে তার আগে নানা ধরনের চড়াই-উতরাই বিরাজ করছে। বিশেষ করে তেলের দাম দ্রুত ওঠানামা করছে। যার ফলে শিল্প-কৃষিসহ সব ধরনের উৎপাদন খরচের ওপর একটা প্রভাব পড়ছে। এতে পণ্যমূল্য বাড়ছে। পণ্যমূল্য স্বাভাবিক রাখতে উৎপাদন ও সরবরাহ পর্যায়ে সরকারের তদারকি আরও বাড়ানো জরুরি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর