রবিবার, ৩১ অক্টোবর, ২০২১ ০০:০০ টা

স্থানীয় নির্বাচন

অরাজনৈতিকভাবে হওয়াই বাঞ্ছনীয়

ইউনিয়ন পরিষদসহ সব স্থানীয় নির্বাচনে রাজনৈতিক দলের মনোনয়ন ও প্রতীক নিয়ে ভোটযুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়ার সুযোগ সৃষ্টির পর থেকে সংঘাত নির্বাচনের অনুষঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশের স্থানীয় রাজনীতিতে সরকারি দল আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ আধিপত্য প্রতিষ্ঠার পর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ না থাকায় সরকারি দলের অফিশিয়াল ও বিদ্রোহী প্রার্থীর দ্ধন্ধ স্থানীয় নির্বাচনে একের পর এক রক্ত ঝরাচ্ছে। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সাধারণ সদস্য পদে দলীয় প্রতীক না থাকলেও এলাকায় আধিপত্য ধরে রাখার লড়াইয়ে একে অন্যের রক্ত ঝরাচ্ছেন আওয়ামী লীগের তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা। দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে এক মাসে অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষে ক্ষমতাসীন দলের আট নেতা-কর্মী-সমর্থক নিহত হয়েছেন। আর জানুয়ারি থেকে প্রথম ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, মেয়াদোত্তীর্ণ উপজেলার ভোটে এ পর্যন্ত ১৭৭টি সংঘর্ষে আওয়ামী লীগের ৩৮ নেতা-কর্মী নিহত হয়েছেন। দ্বিতীয় ধাপের ৮৪৬ ইউনিয়নে ১১ নভেম্বর এবং তৃতীয় ধাপের ১ হাজার ৭ ইউনিয়নে ২৮ নভেম্বর নির্বাচন। ইতিমধ্যে এ দুটি নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে। প্রতিপক্ষবিহীন ভোটে আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ হয়ে উঠেছে। নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে ততই দানা বাঁধছে সংঘর্ষ-সংঘাতের ঘটনা। সরকারি দলের দুই পক্ষের সংঘাত স্থানীয় পর্যায়ে তাদের সমর্থনের ভিত আলগাই করে দিচ্ছে না, ভবিষ্যতের জন্য তা অশনিসংকেত বলে বিবেচিত হচ্ছে। আমরা একাধিকবার এই কলামে দলীয়ভাবে স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানে আশঙ্কা প্রকাশ করেছি। এর ফলে স্থানীয় নির্বাচনে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নয় সৎ ও নিবেদিতপ্রাণ সুশিক্ষিত নাগরিকদের অংশগ্রহণের সুযোগ কার্যত রুদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় সরকারকে বলা হয় জনগণের সরকার। সে সম্পর্কেও ভোটাররা আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। রাজনীতির স্বার্থেই এ প্রবণতা রোধের কথা ভাবতে হবে। ফিরে যেতে হবে রাজনীতিবিমুক্ত স্থানীয় নির্বাচন ব্যবস্থায়।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর