বুধবার, ৩ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

জলবায়ু পরিবর্তন

অস্তিত্বের স্বার্থেই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে হবে

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর জোট সিভিএফের চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা বিশ্বনেতৃবৃন্দকে প্যারিস সম্মেলনের প্রতিশ্রুতি স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। কার্বন নির্গমন কমিয়ে আনার যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল ওই সম্মেলনে তা বাস্তবায়নে উন্নত দেশগুলোর প্রতি আহ্‌বানও জানিয়েছেন তিনি। এজন্য যেসব দেশে বেশি কার্বন নির্গমন ঘটছে তাদের উচ্চাভিলাষী এনডিসি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের তাগিদও দিয়েছেন। স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোয় জলবায়ুসংক্রান্ত ২৬তম জাতিসংঘ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী চারটি প্রস্তাব উত্থাপন করেন। জলবায়ু ক্ষতি কাটাতে উন্নত দেশগুলোর প্রতিশ্রুত বার্ষিক ১০০ কোটি ডলার তহবিল গঠন এবং অভিযোজন ও প্রশমনে আধাআধি বরাদ্দের প্রস্তাবও রেখেছেন। সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোকে সাশ্রয়ী মূল্যে পরিচ্ছন্ন ও সবুজ প্রযুক্তি দেওয়া এবং সিভিএফ দেশগুলোর উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা বিবেচনা করতে উন্নত দেশগুলোর প্রতি আহ্‌বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রস্তাবে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, লবণাক্ততা বৃদ্ধি, নদী ভাঙন, বন্যা এবং খরার কারণে বাস্তুচ্যুত জলবায়ু অভিবাসীদের জন্য বিশ্বব্যাপী দায়বদ্ধতা ভাগ করে নেওয়াসহ লোকসান ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয়টির সুনিশ্চিত সমাধান দাবি করেছেন। বলেছেন, বিশ্বব্যাপী নির্গমনের মাত্র ০.৪৭ শতাংশের কম অবদান রাখা সত্ত্বেও বাংলাদেশ জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। প্রধানমন্ত্রী কার্বন নির্গমন কমাতে বাংলাদেশের নানা পরিকল্পনা জলবায়ু সম্মেলনে উপস্থাপন করেন। গ্লাসগোর জলবায়ু সম্মেলনের মূল অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য বিশেষ তাৎপর্যের দাবিদার। উন্নত দেশগুলোর কারণেই জলবায়ুতে অনভিপ্রেত পরিবর্তন ঘটছে। কার্বন নির্গমনের মাত্রা স্বল্প হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশ এ ক্ষেত্রে আরও অগ্রগতি নিশ্চিত করতে ১২ বিলিয়ন বিদেশি বিনিয়োগসংবলিত ১০টি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাতিল করেছে। ২০৪১ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য উৎস থেকে জ্বালানি শক্তির ৫০ শতাংশ জোগানোর উদ্যোগ নিয়েছে। উন্নত দেশগুলোকেও সাময়িক লাভের দিকে না চেয়ে মানব জাতির অস্তিত্বের স্বার্থেই এ বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ভূমিকা রাখতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর