জলবায়ুর অশুভ পরিবর্তন সমুদ্রতীরবর্তী দেশগুলোর কোটি কোটি মানুষের জন্য সাক্ষাৎ অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইতিমধ্যে জলবায়ু উদ্বাস্তুতে পরিণত হয়েছে লাখ লাখ মানুষ। জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সামনের কাতারে। সংগত কারণেই ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর নেতা হিসেবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বকে জলবায়ু অভিবাসীদের দায়িত্ব ভাগ করে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। স্কটিশ পার্লামেন্টে ‘কল ফর ক্লাইমেট প্রসপারিটি’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধিকে বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুতর হুমকি হিসেবে বর্ণনা করেছেন। বলেছেন, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ১ মিটার বেড়ে গেলে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় লাখ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হবে। প্রতি বছর বাংলাদেশের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের ২ শতাংশ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতিকূল প্রভাবে নষ্ট হয়ে যায় এবং আগামী দশকে তা ৯ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। বাংলাদেশ সরকার নিজস্ব অর্থায়নে বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ড প্রতিষ্ঠা করেছে। এ তহবিলের আওতায় বাংলাদেশ এ পর্যন্ত ৪৮০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগসহ ৮০০ প্রকল্প হাতে নিয়েছে। যাতে অভিযোজন, প্রভাব প্রশমন ও জলবায়ু পরিবর্তনসংক্রান্ত গবেষণার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশের নেওয়া ১০০ বছরের কৌশলগত পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন। বলেন, বাংলাদেশের ৬ দশমিক ৫ মিলিয়ন পরিবারে গার্হস্থ্য ব্যবহারের জন্য সৌরশক্তি রয়েছে, যা সারা বিশ্বের অফ-গ্রিড সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের সবচেয়ে বড় একটি অংশ। জলবায়ু পরিবর্তনে অন্তত ৬০ লাখ লোক যেহেতু ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেহেতু এ বিপদ এড়াতে বাংলাদেশের আগ্রহের অভাব নেই। তবে রয়েছে সামর্থ্যরে সীমাবদ্ধতা। এ সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে উঠতে বিশ্ব সম্প্রদায়কে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর পাশে দাঁড়াতে হবে। এটি তাদের কর্তব্য বলে বিবেচিত হওয়া উচিত।