প্রায় দেড় বছর কম দামে বিক্রির ক্ষতি পুষিয়ে নিতে তেল উত্তোলনকারী দেশগুলো দাম বাড়ানোর কৌশল হিসেবে দৈনিক তেল উত্তোলনের পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছে। এ পরিস্থিতিতে সব ধরনের জ্বালানির দাম আরও কিছুদিন ঊর্ধ্বমুখী থাকবে। লোকসান কমানো এবং ভারতে পাচার রোধ করতে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বাড়িয়েছে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ। কিন্তু ডিজেলের দাম বাড়ানোয় গতকাল সকাল থেকে গণপরিবহন অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের ঘোষণা দেয় পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের তিনটি সংগঠন। বৃহস্পতিবার ডিজেলের দাম বাড়ার পর বাসের ভাড়া বাড়ানোর জন্য বাস মালিক সমিতি থেকে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষকে (বিআরটিএ) চিঠি দেওয়া হয়। রবিবার বিকালে এ নিয়ে বাস মালিকদের সঙ্গে বিআরটিএর বৈঠক হবে। বিশ্ববাজারে যেহেতু জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে। আমাদের দেশে যখন তেলের দাম বাড়ে ঠিক যে অনুপাতে গাড়ি ভাড়া বাড়ানো উচিত তার চেয়ে অনেক বেশি অনুপাতে বাড়ানো হয়। সরকারকে এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। ডিজেলের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়ার কারণে গণপরিবহনে ১০০ টাকার ভাড়া সর্বোচ্চ ১১০-১১৫ টাকা হতে পারে। কেরোসিনের ব্যবহার বর্তমানে বলতে গেলে নেই। তাই কেরোসিনের দাম বাড়ানোয় দেশে তেমন প্রভাব পড়বে না। কারণ গ্রামাঞ্চলে কেরোসিন দিয়ে এখন খুব কমসংখ্যক মানুষ কুপিবাতি জ্বালায়। বিদ্যুৎ পৌঁছে যাওয়ায় লোডশেডিংয়ের সময় এখন ছোট ব্যাটারি দিয়ে এলইডি লাইট ব্যবহার করে। ডিজেল-কেরোসিনের দাম বাড়ায় পরিবহন খরচ, নিত্যপণ্যের দামে এর প্রভাব পড়বে। করোনার কারণে দেশের সাধারণ মানুষের আয়ের ওপর ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। বহু মানুষ কাজ হারিয়েছে, অনেকের ব্যবসাও বন্ধ হয়েছে। এর বিরূপ প্রভাব কাটিয়ে ওঠার চেষ্টার মধ্যেই জ্বালানি তেলের এই দামের প্রভাব সাধারণ মানুষের ওপর চাপ তৈরি করবে। আমরা মনে করি জ্বালানি তেলের দাম কমানো হলে লাভবান হবে দেশের অর্থনীতি ও জনগণ।