সোমবার, ৮ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

বন্ধ হোক শিশুশ্রম

ওদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিন

শিশুশ্রম সভ্য সমাজের মানুষ কল্পনায় আনতেও নারাজ। আমাদের দেশে শিশুশ্রমের বাড়বাড়ন্ত অবস্থা চলে আসছে যুগ যুগ ধরে। শিশুশ্রম বন্ধে সরকারের অঙ্গীকারের অভাব না থাকলেও নানা কারণে তা বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। সমাজের হতদরিদ্র অংশের মূল্যায়নে ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময় পূর্ণিমার চাঁদ যেন ঝলসানো রুটির মতোই নিষ্ঠুর। অন্যদিকে ছিল কলকারখানার মালিক বিশেষ করে পোশাক শিল্পের মহাক্ষমতাধর উদ্যোক্তাদের চাপ। সস্তা শ্রমের লোভে যারা শিশুশ্রমকে জিইয়ে রেখেছেন বছরের পর বছর ধরে তারাও হঠাৎ করে সরকারকে শিশুশ্রম বন্ধে তাগিদ দিচ্ছেন। এখানেও জড়িত মানবিকতার বদলে লাভের হিসাব। দেশে শিশুশ্রম বন্ধ না হলে ইউরোপীয় ইউনিয়নে জিএসপি সুবিধা আটকে যেতে পারে। তেমনটি হলে দেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাকের বাজার হুমকিতে পড়ার আশঙ্কা করছেন এ খাতের উদ্যোক্তারা। তারা এখন উল্টো সরকারকে তাগিদ দিচ্ছেন যাতে শিশুশ্রম বন্ধে চাকরির ন্যূনতম বয়সসীমাসংক্রান্ত ‘আইএলও কনভেনশন ১৩৮’ স্বাক্ষর করা হয়। এ বছরের মধ্যেই আইএলও কনভেনশন ১৩৮ অনুস্বাক্ষরের নীতিগত সিদ্ধান্ত রয়েছে সরকারের। ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর পরামর্শেই এত দিন শিশুশ্রমসংক্রান্ত কনভেনশনে সই করেনি সরকার। নিজেদের শিল্পকারখানা ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রমমুক্ত করতে কিছুটা সময় চেয়েছিলেন ব্যবসায়ীরা। এখন জিএসপি সুবিধা হারানোর ভয়ে রপ্তানিমুখী ব্যবসা সংগঠনগুলো উল্টো সরকারকে অনুরোধ করছে যাতে দ্রুত কনভেনশনটি অনুমোদন দেওয়া হয়।  নিজেদের মানুষ হিসেবে ভেবে মানবিকতার বিষয়টি সামনে রেখে শিশুশ্রম বন্ধে সরকারকে উদ্যোগী হতে হবে। কর্মজীবী শিশুদের ভরণপোষণ ও শিক্ষার দায়িত্বও নিতে পারে সরকার। তাৎক্ষণিক হিসাবে এতে যে অর্থ ব্যয় হবে, সার্বিক কল্যাণ বয়ে আনবে তার চেয়ে অনেক বেশি। উজ্জ্বল হবে দেশের ভাবমূর্তিও।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর