সোমবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

নির্বাচনী হানাহানি

শুভ বুদ্ধির উদয় হোক

ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন রক্তাক্ত নির্বাচনে পরিণত হয়েছে আমাদের কর্তাব্যক্তিদের একটি ভুল সিদ্ধান্তের পরিণতিতে। সে ভুল সিদ্ধান্তটি হলো স্থানীয় নির্বাচনেও রাজনৈতিক দলের প্রতীক নিয়ে ভোটযুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ থাকা। দুনিয়ার প্রায় সব সভ্য দেশে দলীয় ভিত্তিতেই স্থানীয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ থাকে। সে যুক্তিতে আমাদের দেশে সভ্য দেশের নির্বাচন পদ্ধতি চালুর আগে বিবেচনা করা উচিত ছিল আমরা সেসব দেশের কাতারে পড়ি কি না? তা বিবেচনা না করে ইউনিয়ন পরিষদসহ সব স্থানীয় নির্বাচনে রাজনৈতিক দলের মনোনয়ন ও প্রতীক নিয়ে ভোটযুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়ার সুযোগ সৃষ্টিতে সংঘাত নির্বাচনের অনুষঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশের রাজনীতিতে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ না থাকায় সরকারি দলের অফিশিয়াল এবং বিদ্রোহী প্রার্থীর দ্বন্দ্ব স্থানীয় নির্বাচনে একের পর এক রক্ত ঝরাচ্ছে। এমনকি নির্বাচন শেষেও চলছে হানাহানির রেশ। ঝরছে রক্ত। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সাধারণ সদস্য পদে দলীয় প্রতীক না থাকলেও এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের লড়াইয়ে একে অন্যের রক্ত ঝরাচ্ছে তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকরা। প্রতিপক্ষবিহীন ভোটে আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ হয়ে উঠেছে। নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে ততই দানা বেঁধে উঠছে সংঘর্ষ-সংঘাতের ঘটনা। সরকারি দলের দুই পক্ষের সংঘাত স্থানীয় পর্যায়ে তাদের সমর্থনের ভিত আলগাই করে দিচ্ছে না ভবিষ্যতের জন্য তা অশনিসংকেত বলে বিবেচিত হচ্ছে। দলীয়ভাবে স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ায় রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নয় সৎ সুশিক্ষিত নাগরিকদের অংশগ্রহণের সুযোগ কার্যত রুদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় সরকারকে বলা হয় জনগণের সরকার। সে সরকার সম্পর্কেও ভোটাররা আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন।  রাজনীতির স্বার্থেই এ প্রবণতা রোধের কথা ভাবতে হবে। রাজনীতি বিমুক্ত স্থানীয় নির্বাচন ব্যবস্থায় ফিরে যেতে হবে। এ বিষয়ে শুভ বুদ্ধি উদয় হলে তাতে সবারই মঙ্গল।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর