সোমবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

মাদক মামলা

ভুয়া সাক্ষী বন্ধে কঠোর হতে হবে

মাদক আগ্রাসন দুনিয়াজুড়ে অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠার মূল কারণ এটি এমন এক ব্যবসা যেখানে মুনাফার পরিমাণ ঈর্ষণীয়। ফলে অনেক দেশের মতো বাংলাদেশেও মৃত্যুদন্ডের মতো কঠিনতম সাজার ব্যবস্থা করেও তা বন্ধ করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। মাদক ব্যবসায়ীরা টাকা দিয়ে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার অসৎ সদস্যদের কিনে নিতেও যে সক্ষম হয় তা একটি ওপেন সিক্রেট। আইনের ফাঁক গলিয়ে অপরাধীরা যাতে রক্ষা পায় সে সুযোগও তৈরি করে দেয় মাদক পাচারকারীদের ক্রীতদাসের ভূমিকা পালনকারীরা। যে কারণে মাদক ধরা পড়ে, মামলাও হয়, কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে সাজার সম্মুখীন হয় না মাদক পাচারকারীরা। বাংলাদেশ প্রতিদিনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মাদক মামলার বেশির ভাগ সাক্ষীই ভুয়া! সাক্ষীদের অনেকেই জানেন না কোন ঘটনায়, কীসের সাক্ষী তারা। এদের কেউ কেউ একই থানার একাধিক মামলার সাক্ষী হয়েছেন। সাক্ষীর তালিকায় রাখা হয় পথচারী, পুলিশের সোর্স, অটো, সিএনজি ও রিকশাচালকদের, যাদের বেশির ভাগের ঠিকানা ঠিক নেই। সাক্ষীদের মধ্যে আবার পুলিশ সদস্যও আছেন। তাদের যে ঘটনায় সাক্ষী বানানো হয়েছে সেসব ঘটনা সম্পর্কে তারা কিছুই জানেন না, যে কারণে থেমে থাকছে মাদক মামলার বিচার। রাজধানীর বিভিন্ন থানায় করা অন্তত ১০টির বেশি মামলার তথ্য অনুসন্ধান ও পর্যালোচনা করে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে। তবে পুলিশ কর্মকর্তাদের কেউই এমন অনিয়মের কথা স্বীকার করেননি। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভুয়া সাক্ষীতে মামলা হলে বিচার হওয়ার সম্ভাবনা নেই। আসামি দোষী হলেও ছাড়া পেয়ে যেতে পারেন। আবার অনেক ক্ষেত্রে নিরপরাধ ব্যক্তিও হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এমন মামলায় আদালতে মামলাজটের পাশাপাশি সময়ক্ষেপণ হচ্ছে। মাদক দেশের যুব সমাজকে সর্বনাশের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। আইনশৃঙ্খলার জন্যও ডেকে আনছে বিড়ম্বনা। মাদকসেবীদের যে কোনো অপরাধে প্রলুব্ধ করা সম্ভব হয়।  মাদকের অর্থ না দিলে বাবা-মাকে খুন করতেও পিছপা হয় না তারা। মাদকবিরোধী লড়াই জোরদার করতে চাইলে মাদক মামলায় ভুয়া সাক্ষীর ক্ষেত্রে কঠোর হতে হবে। এর দায় নির্ধারণ করে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর