বৃহস্পতিবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

নগর জীবনের সংকট

নগর জীবনের সংকট

ঢাকাকে বলা হয় সমস্যার নগরী। নানা সংকটে রাজধানী ঢাকা অচল নগরীতে পরিণত হচ্ছে এবং এটি শুধু নগরবাসীর নয়, জাতির জন্যও লজ্জা বয়ে আনছে। এ দুরবস্থার জন্য ব্যবস্থাপনার সংকট যেমন দায়ী, নাগরিক সচেতনতার অভাবও তেমন দায়ী। জনসচেতনতার অভাবে রাজধানীর জীবনে দুর্ভোগ ভাগ্যের লিখন হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফুটওভার ব্রিজ থাকা সত্ত্বেও ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পার হওয়া নাগরিকের

বৃহদাংশের মজ্জাগত অভ্যাসে পরিণত হয়েছে বললেও অত্যুক্তি হবে না। উল্টোপথে ড্রাইভিং করাকে অনেকেই অপরাধ মনে করেন না এ মহানগরীতে। ড্রাইভিংয়ের সময় মোবাইল ফোনে কথা বলা নিষিদ্ধ হলেও সে ব্যাপারে তাপ-উত্তাপ নেই বেশির ভাগ গাড়িচালকের। রাজপথে চলার সময় প্রায়ই তীব্র হর্নে আঁতকে উঠতে হয়। মাইকসহ অন্যান্য শব্দদূষণেরও নির্দয় শিকার রাজধানীবাসী। রাস্তায় চলাচলের সময় যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনার স্তূপে বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে বেশির ভাগ নাগরিক।

রাজধানীর জীবনে নিত্যবিড়ম্বনা সৃষ্টিকারী সমস্যাগুলো যুগ যুগ ধরে বিরাজ করছে নাগরিক সচেতনতার অভাবে। দেশে আইন মান্যতার অভাব থাকায় অহরহই আইন ভঙ্গ হচ্ছে। রাজধানীর জীবনের বিদ্যমান সংকটের বেশির ভাগই নিরসন করা সম্ভব আইন মেনে বা সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে। যেখানে সেখানে পার্কিং, উল্টোপথে ড্রাইভিং, বাসে যেখানে সেখানে যাত্রী ওঠানো-নামানোর প্রবণতা রোধ করা গেলে রাজধানীর যানজট অর্ধেকে নামিয়ে আনা সম্ভব। যেখানে সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলা বন্ধ হলে নগর জীবন আরও পরিচ্ছন্ন তথা গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠবে। আইন ভঙ্গ করলে জবাবদিহির সম্মুখীন হতে হয় না বলে প্রায়ই দেশে   শৃঙ্খলাভঙ্গ ঘটছে। নাগরিক জীবনে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা সম্ভব হলে শুধু ঢাকা মহানগরী নয়, সারা দেশেই তার সুফল অনুভূত হবে। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, আইন প্রয়োগের দায়িত্ব যাদের তাদের অবহেলা যাচ্ছেতাই পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটাচ্ছে। ভিআইপিদের গাড়ি লাল বাতির সংকেত সত্ত্বেও চলার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে অহরহ। আইন মান্যতার বিষয়টি কড়াভাবে মেনে চলার অভ্যাস গড়ে উঠলে নাগরিক জীবন সুন্দর, সহনশীল হয়ে উঠবে। এজন্য সরকার, সিটি করপোরেশন সবাইকে সচেতন হতে হবে।

মোহাম্মদ সোহেল

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর