শনিবার, ২০ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

ধুলায় ধূসর ঢাকার আকাশ

শ্বাসরোধ থেকে মুক্ত হতে হবে

স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দী পেরিয়ে গেলেও সঠিক পরিকল্পনার অভাবে ঢাকার অবস্থা শোচনীয়। অপরিষ্কার, বসবাসের অনুপযোগী, অপরিচ্ছন্ন, দূষিত ও অসুখী শহরের তালিকার শীর্ষ সারিতে আমাদের রাজধানী শহর। স্থিতিশীলতা, স্বাস্থ্যসুবিধা, সংস্কৃতি, পরিবেশ, শিক্ষা, শিল্পায়ন, অবকাঠামোসহ ৩০টি মানদণ্ডের বিবেচনায়ও তলানিতে রয়েছে ঢাকা। শীত আসতেই মারাত্মক বায়ুদূষণের কবলে রাজধানী। ধুলার কারণে সারাক্ষণই ধূসর হয়ে থাকছে ঢাকার আকাশ। সূর্যের আলোটাও আটকে দিচ্ছে মাত্রাতিরিক্ত ধুলা ও ধোঁয়া। দূষিত বায়ুর কারণে বেড়ে গেছে শ্বাসতন্ত্রের নানা রোগ। দূষণে বিষাক্ত ঢাকার অস্বাস্থ্যকর বাতাস থেকে রক্ষা পেতে কয়েক দিন ধরেই ঢাকাবাসীকে চারটি পরামর্শ দিয়ে আসছে বিশ্ব বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান এয়ার ভিজুয়াল। পরামর্শগুলোর মধ্যে রয়েছে- ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ রাখা, ঘরের বাইরে শরীরচর্চা না করা, মাস্ক ছাড়া বাইরে বের না হওয়া ও ঘরের বাতাস দূষণমুক্ত করতে বায়ু বিশুদ্ধকরণ যন্ত্র চালিয়ে রাখা। জনবসতি ঢাকার সবচেয়ে বড় সমস্যা। সরকারি হিসাবে ঢাকায় প্রতি বর্গকিলোমিটারে প্রায় ৪৬ হাজার মানুষ বাস করলেও আসল সংখ্যাটা আরও বড়। হাজারো মানুষ প্রতিদিন ঢাকায় আসছেন শিক্ষা ও জীবিকার সন্ধানে। সরকারি অফিস, আদালত, ব্যাংক, পোশাক কারখানা, শিল্পপ্রতিষ্ঠানের প্রধান কার্যালয় ঢাকামুখী হওয়ায় আজকের এ অবস্থা। জাতিসংঘের হ্যাবিটেট প্রতিবেদনে ঢাকাকে বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ শহর হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ঢাকার রাস্তাঘাট, যানজট, গ্যাস বা ওয়াসার পানির ব্যবস্থা কোনোটিই মেগাসিটির মতো নয়। ঢাকার বাতাসে দূষণের মূল উপাদান পিএম ২.৫ (অতিসূক্ষ্ম বস্তুকণা) ছিল প্রতি ঘনমিটারে ৮৩ মাইক্রোগ্রাম, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) বেঁধে দেওয়া নিরাপদ সীমার চেয়ে ১৬.৬ গুণ বেশি। দীর্ঘমেয়াদি সমন্বিত পরিকল্পনা যদি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা যায় তা হলেই শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা থেকে ঢাকা বেরিয়ে আসবে। কেবল সচেতনতাই এ ভয়াবহ সংকটের গতি হ্রাস করতে পারে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর