সোমবার, ২২ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

বাল্যবিয়ে

জনপ্রতিনিধিদের দায় বাড়াতে হবে

নাটোরের বাগাতিপাড়া মহিলা মাদরাসার ১৫ শিক্ষার্থীর সবার বিয়ে হয়ে যাওয়ায় কেউই চলমান এসএসসি সমমানের দাখিল পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে না। দাখিল পরীক্ষার পরীক্ষার্থীদের বয়স ১৮ বছরের নিচে হওয়ারই কথা। দেশের আইন অনুযায়ী ১৮ বছরের নিচের কোনো কিশোরীর বিয়ে অনুমোদনযোগ্য নয়। কিন্তু বাস্তবতা হলো আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে প্রতি বছর হাজার হাজার কিশোরীর বাল্যবিয়ে হচ্ছে। এ জন্য কাউকে আইনের আওতায় আনা দূরের কথা জবাবদিহিতার সম্মুখীনও করা হচ্ছে না। মহিলা মাদরাসার শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাল্যবিয়ের প্রবণতা তুলনামূলকভাবে বেশি। সংশ্লিষ্ট মাদরাসা প্রধান বলেছেন, করোনা মহামারীতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় সব পরীক্ষার্থীর বিয়ে হয়ে যাওয়ায় কেউ পরীক্ষায় অংশ নেয়নি। এ বছর পেড়াবাড়িয়া মাদরাসা কেন্দ্রে পাঁচটি মাদরাসার পরীক্ষার্থীরা দাখিল পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। এসব মাদরাসার মোট ৯৮ শিক্ষার্থীর ওই কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা। কিন্তু প্রতিদিন কেন্দ্রে ৮৩ জন উপস্থিত হয়। অনুপস্থিত ১৫ শিক্ষার্থীর সবাই বাগাতিপাড়া মহিলা মাদরাসার। ওই মাদরাসা থেকে এ বছর মোট ১৫ শিক্ষার্থীর পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা কিন্তু কেউই পরীক্ষায় অংশ নেয়নি। মাদরাসা সুপার ওইসব শিক্ষার্থীর প্রবেশপত্রও সংগ্রহ করেছেন। পরীক্ষার্থীপ্রতি ৩০০ টাকা কেন্দ্র ফি প্রদানের কথা থাকলেও ৪ হাজার ৫০০ টাকার পুরো ফি বকেয়া রেখে পরীক্ষার্থীদের স্বার্থে প্রবেশপত্র দেওয়া হয়েছিল। দেশের এমপিওভুক্ত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের মূল বেতন দেওয়া হয় সরকারি খাত থেকে। বাল্যবিয়ে রোধে শিক্ষকদের নৈতিক দায় থাকলেও দেশের প্রত্যন্ত এলাকার স্কুল বা মাদরাসার শিক্ষকরা তা পালন করছেন বলে মনে হয় না। ওইসব এলাকার জনপ্রতিনিধিরাও বাল্যবিয়ের সহযোগীর ভূমিকা পালন করছেন বললে অত্যুক্তি হবে না।  বাল্যবিয়ে বন্ধে শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে শিক্ষক এবং অতি অবশ্যই স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের দায় বাড়াতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর