বুধবার, ১ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

ভাবতে হবে ইউপি নির্বাচন নিয়ে

আলম রায়হান

ভাবতে হবে ইউপি নির্বাচন নিয়ে

বিগত দিনে আলোচনার কেন্দ্রে থাকত জাতীয় নির্বাচন। তা হোক সামরিক শাসকদের অনাসৃষ্টি ‘হ্যাঁ-না ভোট’, জাতীয় সংসদ বা রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। কেবল সামরিক শাসকদের আমল নয়, ১৯৭৩ সাল থেকে এ পর্যন্ত যতগুলো জাতীয় নির্বাচন হয়েছে তার দু-একটি ছাড়া সবকটির ললাটেই রয়েছে কলঙ্কের তিলক। ভবিষ্যতে এ ধারা থেকে কতটা বের হওয়া যাবে এ নিয়ে সংশয় বাড়ছে ক্রমাগত। এ ধারা থেকে বের হওয়ার একটি পরিবেশ ও সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল ১৯৯০ সালে রাজনীতি ও বিভিন্ন শক্তি কেন্দ্রের সর্বজনীন সমঝোতা এবং গণজাগরণের ধারায় জেনারেল এরশাদের পতনের পর। কিন্তু বাস্তবে নির্বাচনকেন্দ্রিক অপ্রত্যাশিত ঘটনা থেকে খুব একটা বের হওয়া যায়নি। ফলে এ পর্যন্ত কোনো নির্বাচনই খুব একটা যেতেও পারেনি কলঙ্কের ছোঁয়ার বাইরে। কলঙ্কের মাত্রাভেদ রয়েছে মাত্র। আর এ কলঙ্কের গ্রাস জাতীয় থেকে স্থানীয় নির্বাচন পর্যন্ত পৌঁছে গেছে উদ্বেগজনক মাত্রায়। যা ফুটে উঠেছে বিভিন্ন জনের উচ্চারণ ও অবাঞ্ছিত নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে কলঙ্কের ছোঁয়া, বলা চলে গ্রাস, কোন মাত্রায় পৌঁছেছে তার কিছুটা চিত্র মেলে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. মুরাদ হাসানের উচ্চারণে। তথ্য প্রতিমন্ত্রী হিসেবে তাঁর বক্তব্য বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। তিনি বলেছেন, ‘স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে যা হচ্ছে তা কাম্য নয়। নির্বাচন নিয়ে আমাদের দায়িত্ব কী? আমরা কী করছি? আমাদের আরও সহনশীল হওয়া উচিত।’ সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ মন্তব্য করেছেন ১১ নভেম্বর ইউপি নির্বাচনে ভোট গ্রহণ চলাকালে তাঁর অফিসকক্ষে। কেবল প্রতিমন্ত্রী অথবা সচেতন মহল নয়, এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সরকারের অনেক কর্তাব্যক্তিও। এমনকি খোদ প্রধানমন্ত্রী ১৭ নভেম্বর সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সহিংসতা আগেও হয়েছে। এখনো হোক তা চাই না। হানাহানি, ভোট দিতে গিয়ে মানুষের প্রাণ যাবে তা কখনো গ্রহণযোগ্য নয়।’ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উচ্চারণে আসলে জনমতের স্পষ্ট প্রতিফলন ঘটেছে। ১১ নভেম্বরের পর ২৩ নভেম্বর ইউপি নির্বচনের চিত্র বেশ উদ্বেগের। আশঙ্কা চরমে পৌঁছেছে ডিসেম্বরে দুই দফার ইউপি নির্বাচন কেন্দ্র করে।

স্থানীয় নির্বাচনে সহিংসতা বৃদ্ধির জন্য কেউ কেউ চেয়ারম্যান প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দব্যবস্থাকে দায়ী করছেন। অবশ্য এ নিয়ে জোরালো দ্বিমতও আছে। এ মতই ফুটে উঠেছে প্রধানমন্ত্রীর উচ্চারণে। সংঘাতের সঙ্গে প্রতীক বরাদ্দের কোনো সম্পর্ক না থাকার কথা প্রধানমন্ত্রী স্পষ্টভাবে উচ্চারণ করেছেন। সঙ্গে সঙ্গে এও স্পষ্ট যে প্রতীক বরাদ্দ সংঘাতের মূল কারণ না হলেও মাত্রাতিরিক্ত সন্ত্রাস তো হয়েছে এবং এর কারণও আছে। স্বতঃসিদ্ধ কথা, কারণ ছাড়া কোনো ঘটনা ঘটে না। সম্ভবত বিষয়টির গভীরে যেতে শুরু করেছেন ক্ষমতাসীন দলের নীতিনির্ধারকরা। যার কিছুটা ইঙ্গিত মেলে প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনের বক্তব্যেও। এদিকে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বিষয়টি আর একটু পরিষ্কার করেছেন ১২ নভেম্বরের বক্তব্যে। মন্ত্রী বলেছেন, ৬৫ থেকে ৭০ শতাংশ ভোটারের উপস্থিতিতে স্বতঃস্ফূর্ত ও উৎসবমুখর পরিবেশে দ্বিতীয় দফায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে হতাহতের ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। সারা দেশে তৃণমূল পর্যায়ে নির্বাচন ঘিরে উৎসবমুখরতা ধরে রাখতে সবাইকে আরও সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে নির্বাচনের অনুকূল পরিবেশ ধরে রাখার জন্য নির্বাচন কমিশন ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন ওবায়দুল কাদের। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক যে কথা বলেছেন তার মধ্যে অধিক গুরুত্বপূর্ণ প্রসঙ্গ হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে তিনি সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে বলেছেন। কিন্তু যারা সতর্ক থকেননি অথবা সতর্ক থেকেও হানাহানি প্রতিরোধে সক্ষমতা প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছেন তাদের বিষয়টিও বিবেচনায় নেওয়া প্রয়োজন। একাধিক প্রমাণ আছে, যেসব এলাকায় আইনশৃঙ্খলা প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো দক্ষতার সঙ্গে সতর্ক ছিল সেখানে হানাহানি-সন্ত্রাস কম হয়েছে। এমনকি এবার নির্বাচনী সন্ত্রাসকে শূন্যের ঘরে রাখার দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়েছে বরিশাল সদর উপজেলায়। এ উপজেলায় এবার ছয়টি ইউনিয়ন নিয়েই আশঙ্কা ছিল, দুটি ছিল চরম ঝুঁকিপূর্ণ। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখার ক্ষেত্রে নগর পুলিশের কৌশল ও কার্যকর তৎপরতায় নির্বাচনী সন্ত্রাস দূরের কথা, কেউ কাউকে ধাওয়া করারও সাহস দেখায়নি। একজন সিনিয়র সাংবাদিকের ভাষায়, নির্বাচনের পরিবেশ-বিরোধী ‘গাছের পাতাও’ নড়তে দেয়নি নগর পুলিশ। ফল হচ্ছে- দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে আনন্দমুখর পরিবেশে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন ভোটাররা এবং পুরো এলাকা ছিল উৎসবমুখর। মহিলা-পুরুষ ভোটারের লম্বা লাইন আবার মনে করিয়ে দিয়েছে, ভোটের অধিকার প্রয়োগে এ দেশের সাধারণ মানুষ কতটা আন্তরিক ও সহনশীল- এর একটি মডেল হতে পারে এ চিত্র। এ মডেল সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে হবে সরকারকে এবং তা বাস্তবায়নের সক্ষমতা থাকতে হবে স্থানীয় সিভিল ও পুলিশ প্রশাসনের। যার অনিবার্যতা এবার অকাট্যভাবে প্রমাণিত হয়েছে কিঞ্চিৎ স্বস্তি ও সীমাহীন অস্বস্তির মধ্য দিয়ে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে ঘটনাবলির পরিপ্রেক্ষিতে ওবায়দুল কাদের একটি সুনির্দিষ্ট মেসেজ দিতে চেয়েছেন। যদিও ইউপি নির্বাচনে ভোট গ্রহণের আগে-পরে কোনো কোনো নেতা-মন্ত্রী অনেক অগ্রহণযোগ্য কথা বলেছেন। যা গ্রহণযোগ্য নয়। এটি ক্ষতিকর। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিকর বিষয় হচ্ছে ক্ষমতাসীন দলের কেন্দ্র থেকে মুহুর্মুহু হুংকার বর্ষণ! এবারের ইউপি নির্বাচন প্রক্রিয়ার শুরুতেই কেন্দ্র থেকে হুংকার দেওয়া হচ্ছে- দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গেলেই বহিষ্কার! এরই মধ্যে দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়ার দায়ে অনেককে বহিষ্কার করাও হয়েছে। এর পরও সংকট কেটেছে বলে মনে হয় না।

ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলের কথিত ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী নিয়ে বেকায়দায় পড়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। প্রথমত, এসব কথিত বিদ্রোহীকে কোনোভাবেই ঠেকানো যায়নি, যাচ্ছে না। দ্বিতীয়ত, এসব বিদ্রোহীর কাছে শোচনীয়ভাবে হেরে গেছেন দল থেকে মনোনীত অনুগত অনেক প্রার্থী। নির্বাচনী লড়াইয়ে প্রাণ গেছে অনেকের। তৃণমূলে বিরোধ ধূমায়িত হচ্ছে। এদিকে দল থেকে ‘বিদ্রোহীদের’ বহিষ্কারের সুপারিশের স্তূপ জমেছে কেন্দ্রে। আবার এ তালিকায় নাম আছে অনেক ত্যাগী নেতারও। ফলে এখন কুল রাখি না শ্যাম রাখি অবস্থায় আছে টানা এক যুগের বেশি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর চেয়ে আওয়ামী লীগ ঘরানার প্রার্থীর সংখ্যা বেশি এবং ক্রমবর্ধমান। যা থামানো যাচ্ছে না বহিষ্কারেও। অথচ ধরে নেওয়া হয়েছিল পরিস্থিতি সামলাতে বহিষ্কারই হচ্ছে একমাত্র করণীয়, সর্বরোগ নিরাময়ের তাবিজের মতো। কিন্তু বাস্তবতা মোটেই তা নয়। বরং বহিষ্কার হুংকারে এ পর্যন্ত কোনো সুফল পাওয়া যায়নি। এর পরও সমস্যার মূলে না গিয়ে কেবল বহিষ্কারের হুমকি বর্ষণ পর্ব চলছেই পুরনো আমলের ভাঙা রেকর্ডের মতো। কিন্তু এ রেকর্ড বেশ বেসুরো মনে হচ্ছে। হয়তো বিবেচনা করা হয়েছিল বহিষ্কারের ভয় দেখালেই সবাই নুনমুখো জোঁক হয়ে যাবে। কিন্তু বাস্তবতা সে রকম নয়। এটি এর মধ্যে প্রমাণিত হয়েছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে বহিষ্কার হুঁশিয়ারিকে তেমন আমলে নিচ্ছেন না সংশ্লিষ্টরা। বিবেচনায় রাখা প্রয়োজন, ইউনিয়ন পর্যায়ে বহিষ্কৃত দলীয় ব্যক্তিটির ক্ষতির তেমন কিছুই নেই। বরং আওয়ামী লীগের ক্ষতি হওয়ার আছে অনেক কিছু। বিশেষ করে আগামী সংসদ নির্বাচনের বাস্তবতায়। বহিষ্কার করার ক্ষমতার দম্ভে আচ্ছন্ন না থাকলে কেন্দ্রীয় নেতারা হয়তো উপলব্ধি করতে পারতেন দলীয় মনোনয়নের বাইরে নির্বাচনে অংশ নিয়ে নির্বাচিত অথবা পরাজিত যা-ই হোক, তারা নিজ নিজ এলাকায় ফ্যাক্টর। তাদের জনভিত্তি আছে। আর তৃণমূলের এই নেতাদের ওপর দাঁড়িয়ে আছে উপজেলা, জেলা ও কেন্দ্র। আর তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা তো অসংখ্যবার বলেছেন আওয়ামী সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সামগ্রিক বাস্তবতায় তৃণমূলের যে নেতা-কর্মীরা দলীয় মনোনয়নের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন তাদের ‘বিদ্রোহী তকমা’ দিয়ে বহিষ্কারের নামে ‘লেজে খেলা’ কতটা সুবিবেচনাপ্রসূত তা-ও কেন্দ্রের চিন্তা করা উচিত। কাজেই এ নিয়ে ভাবতে হবে। হয় তো এটি শেষতক ভাবতে হবে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীকেই। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ভাবনার মূল ফোকাস হওয়া প্রয়োজন মনোনয়ন প্রক্রিয়া কতটা সঠিক ও স্বচ্ছ। যেখানে সংসদ নির্বাচনেই বিভিন্ন দলে মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ ওঠে সেখানে স্থানীয় নির্বাচনে এ অনৈতিক আশঙ্কা কি উড়িয়ে দেওয়া যায়? মনে রাখা প্রয়োজন, রাজনীতি আগের মতো আর কেবল জনসেবা ও দেশভক্তির ব্রাকেটে নেই অনেকের ক্ষেত্রেই। রাজনীতিও এখন এক ধরনের অঘোষিত বাণিজ্যে পরিণত হয়েছে। ফলে ছোট নেতা অনেক সময় বড় নেতার চোখে ‘আয়ের পুত’ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছেন। আর নির্বাচনের সময় তো অনেক ক্ষেত্রে কর্তা-নেতাদের ‘মুরগি’ হিসেবে বিবেচিত হন মনোনয়নপ্রত্যাশীরা। এর সঙ্গে আরও অনেক বিষয় যুক্ত হয়ে আওয়ামী লীগের মনোনয়নবঞ্চিতদের জয়ের পাল্লা ভারী হয়েছে এবার স্থানীয় নির্বাচনে। অনেকেই মনে করেন এটি হচ্ছে মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় ত্রুটির নগ্ন প্রকাশ। মনোনয়ন প্রদানের বিরাজমান প্রক্রিয়ার ত্রুটি হয়তো এরই মধ্যে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ বিবেচনায় নিয়েছে। যার কিঞ্চিৎ ইঙ্গিত মিলছে কেন্দ্রীয় নেতা আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমের বক্তব্যে। তিনি জানিয়েছেন ‘মনোনয়নের জন্য তালিকা জেলা ছাড়াও ইউনিয়ন কমিটিও কেন্দ্রে পাঠাতে পারবে।’ এই নয়া সিদ্ধান্তে হয়তো সুফল পাওয়া যাবে। এর সঙ্গে ব্যক্তির আবেদন করার পথও উন্মুক্ত রাখলে আরও সুফল পাওয়া যেতে পারে বলে মনে করেন তৃণমূলের অনেক নেতা। উল্লেখ্য, তৃণমূলের নিবেদিতপ্রাণ অনেক নেতা মনোনয়ন না পেয়ে নির্বাচনে দাঁড়িয়ে এবার তকমা পেয়েছেন ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীর। আসলে এরা মোটেই বিদ্রোহী নন, এরা বিক্ষুব্ধ প্রার্থী। একটি কথা বিবেচনায় রাখা প্রয়োজন, আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতা-কর্মীরা কখনো বিদ্রোহী হন না। বড়জোর নিজেকে গুটিয়ে নেন। যারা এবার নিজেকে গুটিয়ে নেননি তারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাঠে নেমেছেন। সংশ্লিষ্টদের মতে মনোনয়ন প্রক্রিয়া বর্তমান ধারায় চলতে থাকলে তৃণমূলে আওয়ামী লীগের অসন্তুষ্ট প্রার্থী এবং নেতা-কর্মীর সংখ্যা বাড়বে জ্যামিতিক হারে। কাজেই চলমান মনোনয়ন প্রক্রিয়া পুনর্বিবেচনা করা খুবই জরুরি। ক্ষমতার মসনদ নির্ধারণী জাতীয় সংসদ নির্বাচন খুব বেশি দূরে নয়, এও বিবেচনায় রাখতে হবে।

অনেকেই বলছেন, ১১ নভেম্বরের ইউপি নির্বাচন নিয়ে যত আলোচনা হয়েছে তা অনেক সংসদ নির্বাচন নিয়েও হয়েছে কি না সন্দেহ আছে। এর যৌক্তিক কারণও রয়েছে। দলীয় রাজনীতি দ্রুত বিকশিত হওয়ার ধারায়ই ক্ষমতার বলয় বৃদ্ধি পেয়ে তৃণমূলে পৌঁছেছে বেনো জলের মতো প্রবলভাবে। এ কারণে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে গেছে ইউনিয়ন পরিষদ। আর এটি আপসে আপ হয়নি। রাজনীতির সুদূরপ্রসারী লক্ষ্য নিয়ে সুপরিকল্পিতভাবে করা হয়েছে বলে মনে করে পর্যবেক্ষক মহল। কিন্তু এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক কারণ ছাপিয়ে প্রধান হয়ে গেছে লুটপাটের অবারিত সুযোগ। ফলে ইউনিয়ন পরিষদ হয়ে উঠেছে স্থানীয় পর্যায়ে আলাদিনের প্রদীপের মতো। যে প্রবণতায় প্রায় সব আমলেই কেন্দ্র কমবেশি আক্রান্ত।

                লেখক : জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক।

সর্বশেষ খবর