শুক্রবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

শান্তি চুক্তির দুই দশক

সংঘাতকামীদের রুখতে হবে

পার্বত্য শান্তি চুক্তির দুই যুগে অবহেলিত ও পিছিয়ে পড়া পার্বত্য চট্টগ্রামে দৃষ্টি কাড়া উন্নতি হয়েছে। দুই যুগ আগে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে পাহাড়ি বিদ্রোহীদের রক্ত ঝরার যে লড়াই চলত তার অবসান ঘটেছে। তারপরও পার্বত্য চট্টগ্রামে রক্ত ঝরছে। সশস্ত্র পাহাড়ি সংগঠনগুলোর চাঁদাবাজি ও আধিপত্য প্রতিষ্ঠার লড়াই অমিত সম্ভাবনার এই জনপদের অধিবাসীদের জীবনমান উন্নয়নের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার বিদ্রোহী শান্তি বাহিনীর নেতা ও বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় সন্তু লারমার সঙ্গে শান্তিচুক্তিতে আবদ্ধ হয়। চুক্তি অনুযায়ী দুই দশকের হানাহানির অবসান ঘটে। পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার অতুলনীয় দেশপ্রেমের পরিচয় দেন। এই চুক্তি পার্বত্য চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের জন্য ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে এমন আশঙ্কাকে তুচ্ছ করে জাতীয় ঐক্যের প্রতি অঙ্গীকারাবদ্ধ অবস্থান নেয় তৎকালীন সরকার। শান্তিচুক্তি শান্তি বাহিনীর সদস্যদের অস্ত্র সমার্পণ নিশ্চিত করে। তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা ও পুনর্বাসনের সুযোগ এনে দেয়। বিদ্যালয় কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় ও সড়ক এবং সেতুতে পাল্টে যায় পাহাড়ি জনপদের চেহারা। পাহাড়িদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য দেশের সর্বত্র সহজ পরিবহনের সুযোগ সৃষ্টি হওয়ায় তাদের জীবন-জীবিকায় পরিবর্তন এসেছে। পর্যটনের সুযোগ যত বাড়ছে ততই পাহাড়ি জনপদের বাসিন্দাদের আয়ের উৎস বাড়ছে। কিন্তু পাহাড়ি ক্ষুদ্র জাতি গোষ্ঠীগুলোর কিছু সন্ত্রাসী গ্রুপ চাঁদাবাজি ও প্রভাব বিস্তারের নিন্দনীয় কাজে একে অপরের রক্ত ঝরিয়ে জনমনে শঙ্কা সৃষ্টি করছে। পাহাড়ি জনগণের শান্তি ও কল্যাণের স্বার্থে সমাজবিরোধীদের রুখতে হবে। পার্বত্য শান্তিচুক্তি পূর্ণ বাস্তবায়নের স্বার্থে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টিতে দলমত নির্বিশেষে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা সময়ের দাবি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর