রবিবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

সোয়া ৫ লাখ মণ সার উধাও

চোর-মহাচোরদের ধরুন

এলোমেলো করে দে মা লুটেপুটে খাই তত্ত্বের বাস্তবায়ন সরকারি ও রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর সে নিয়মেই জামালপুরের সরিষাবাড়ীর যমুনা সার কারখানা থেকে সোয়া ৫ লাখ মণ ইউরিয়া সার গায়েব হয়ে গেছে। পুকুর নয়, সাগর চুরির এ ঘটনাকে আত্মসাৎ বলতে নারাজ অভিযুক্তরা। তাদের অজুহাত, কারখানায় গোডাউন না থাকায় বিভিন্ন সময় রোদবৃষ্টিতে বিপুল পরিমাণ সার নষ্ট হওয়ায় প্রকৃত হিসাবে গরমিল হয়েছে। সার গায়েবের দায়ে ইতিমধ্যে তিন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্তসহ করা হয়েছে বিভাগীয় মামলা। স্মর্তব্য, সার আত্মসাতের অভিযোগে বিসিআইসি ২৬ সেপ্টেম্বর ছয় সদস্যবিশিষ্ট একটি প্রাথমিক তদন্ত কমিটি গঠন করে। ২৯ সেপ্টেম্বর এ কমিটি সরেজমিন তদন্ত শুরু করে। ওই সময় কারখানার গুদামে রক্ষিত উৎপাদিত সারের ব্যাগ ও বাল্ক স্টোরে লুজ সারের পরিমাপ করা হয়। পরে হিসাবে ১৯ হাজার ১৩৩ দশমিক ১৩ টন অর্থাৎ সোয়া ৫ লাখ মণ সার ঘাটতি পাওয়া যায়। সার গায়েবের ঘটনায় অভিযুক্ত কর্মকর্তারা হলেন সাবেক মহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্যিক) খোকন চন্দ্র দাস, জেএফসিএল রসায়নবিদ নজরুল ইসলাম ও বাণিজ্যিক শাখার (বিক্রয় বিভাগ) ব্যবস্থাপক ওয়ায়েছুর রহমান। সার গায়েবে ৩০ কোটি ২৬ লাখ ৬৩৬ টাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যমুনা সার কারখানার। এ কারখানার উৎপাদিত সারের একাংশ রোদবৃষ্টিতে নষ্ট হতে পারে এমন সম্ভাবনা মেনে নিলেও তার পরিমাণ গায়েব হয়ে যাওয়া সারের এক শতাংশের বেশি হওয়া কোনোভাবে সম্ভব নয়। সার কারখানার কর্মকর্তাদের কেউ কেউ নিজেদের আরব্য উপন্যাসের থিপ অব বাগদাদের সাগরেদ হওয়ার কসরত করায় এমন সাগর চুরির ঘটনা ঘটছে। আমরা আশা করব সার গায়েবের সঙ্গে জড়িত চোর-মহাচোরদের চিহ্নিত করা শুধু নয়, তাদের শাস্তির পাশাপাশি ক্ষতিপূরণ আদায়ের পদক্ষেপ নেওয়া হবে। রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের নামে অপচয় ও লুটপাটের মহোৎসব জিইয়ে রাখা কতটা যৌক্তিক সে বিষয়ে সরকারের নীতিনির্ধারকরা ভেবে দেখবেন আমরা এমনটিই আশা করতে চাই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর