মঙ্গলবার, ৭ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

মানব পাচার

অপরাধ শনাক্তে শৈথিল্য কাম্য নয়

সাগরপথে মানব পাচার সংশ্লিষ্টদের জীবনের জন্য যেমন হুমকি তেমন তা দেশের ভাবমূর্তিতে বিসংবাদ ডেকে আনছে। দেশ ও জাতির জন্য বিড়ম্বনা সৃষ্টিকারী এ অপরাধ দমনে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো ঠিকপথে হাঁটছে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। কক্সবাজারের বাসিন্দা সাগরপথে মানব পাচারের এক গডফাদার সম্পর্কে ২০১৮ সালের ২০ আগস্ট রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির তৎকালীন বিশেষ পুলিশ সুপার বলেছিলেন, আন্তর্জাতিক এই মানব পাচারকারী কক্সবাজার সাগর চ্যানেল দিয়ে গত কয়েক বছরে হাজার হাজার মানুষকে মালয়েশিয়ায় পাচার করেছেন। সাগরপথে মালয়েশিয়া যাওয়ার সময় অনেক বাংলাদেশি মারাও গেছেন। এখনো অনেক মানুষ নিখোঁজ। তিনি দীর্ঘদিন ধরে কক্সবাজার-থাইল্যান্ড-মালয়েশিয়ায় সাগরপথে মানব পাচার করে মুক্তিপণের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অবৈধ অর্থের মালিক হয়েছেন। তাকে আগের দিন ১৯ আগস্ট রাজধানীর কারওয়ান বাজার থেকে সিআইডি গ্রেফতার করে। কথিত গডফাদারের বাবা দীর্ঘদিন মালয়েশিয়ায় ছিলেন এবং তার বড় ভাইও থাকেন মালয়েশিয়ায়। এ সুবাদে তারা আন্তর্জাতিক মানব পাচার চক্রের সঙ্গে যোগ দেন। কিন্তু এহেন গডফাদারকে পরে মামলার চার্জশিট থেকে বাদ দেওয়া হয়। চার্জশিটে যুক্তি দেখানো হয় মামলার ঘটনা প্রমাণিত না হওয়ায় বিচারার্থে প্রেরণ করা গেল না। নিরপেক্ষ তদন্তে তার জড়িত থাকার বিষয়ে সাক্ষ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়নি। স্বীকার করতেই হবে, প্রাথমিক তথ্যের ভিত্তিতে মামলা হয়। চূড়ান্ত তদন্তে সেটি প্রমাণিত না হলে তার নাম চার্জশিট থেকে বাদ দেওয়া দোষের কিছু নয়। কিন্তু যে গডফাদারের নামে দেশের বিভিন্ন স্থানে সুনির্দিষ্ট মামলা রয়েছে, এলাকাবাসীর কাছেও মানব পাচারকারী হিসেবে রয়েছে যার পরিচিতি তার নাম চার্জশিট থেকে বাদ দেওয়ার রহস্য নিয়েই তদন্ত হওয়া উচিত। মানব পাচার বন্ধের স্বার্থেই কোথাও আইনের ফাঁক যেন না থাকে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর