বুধবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

বেহাল ইন্টারনেট সেবা

সরকারের চোখ-কান খোলা রাখতে হবে

একবিংশ শতাব্দী হলো তথ্যপ্রযুক্তির। এ সময় সে জাতিই এগিয়ে থাকবে যারা তথ্যপ্রযুক্তিতে এগিয়ে। তথ্যপ্রযুক্তির বিষয়টি উপেক্ষিত হয়েছিল নব্বই-পরবর্তী সরকারের আমলে। বিনামূল্যে সাবমেরিন ক্যাবল সংযোজনের প্রস্তাব পাওয়া সত্ত্বেও তা প্রত্যাখ্যান করা হয় বালখিল্য যুক্তি তুলে। এক যুগ আগে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতায় আসার পর ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠাকে স্বপ্রকল্প হিসেবে ঘোষণা করেন। তার বাস্তবায়নও শুরু হয় জোরেশোরে। ফলে আউটসোর্সিং আয়ের দিক থেকে বাংলাদেশ এখন শীর্ষ দেশগুলোর একটি। তবে আলোর নিচে রয়েছে অন্ধকার। দেশকে ডিজিটাল করার লক্ষ্যমাত্রা ধার্য হলেও বিটিআরসি নামের সাদা হাতির কারণে কাক্সিক্ষত সাফল্য অর্জন নিয়ে প্রশ্ন সৃষ্টি হয়েছে। ইন্টারনেট গতির বৈশ্বিক সূচকে ১৪০ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৩৬তম। এ ক্ষেত্রে পৃথিবীর সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া, দারিদ্র্য-পীড়িত সোমালিয়া ও ইথিওপিয়াও বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যেও বাংলাদেশে ইন্টারনেটের গতি ও সেবার মান সর্বনিম্ন। নেপাল, পাকিস্তান, মিয়ানমারও এদিক থেকে পেছনে ফেলেছে বাংলাদেশকে। ডিজিটাল জীবনযাত্রার সূচকে ১১০ দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ১০৩তম। সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যেও সবার নিচে। ডিজিটাল দেশ গড়ার ঢাকঢোল পেটালেও সেবার মান বাড়ে না বছরের পর বছর। মোবাইল ইন্টারনেট গতিতে ১৪০ দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ১৩৬তম। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে মালদ্বীপ। দেশটির অবস্থান ৪৫তম। এর পরই ৮৮তম স্থানে মিয়ানমার। নেপালের অবস্থান ১১৪তম। এর চার ধাপ পিছিয়ে ১১৮তম অবস্থানে রয়েছে পাকিস্তান। ১২০তম অবস্থানে শ্রীলঙ্কা। ভারত ১৩১তম অবস্থানে। সবচেয়ে নিচে ১৪০তম অবস্থানে রয়েছে আফগানিস্তান। ডিজিটাল জীবনযাত্রার সূচকেও পিছিয়ে বাংলাদেশ। ২১০ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের স্থান ১০৩তম। বাংলাদেশের ইন্টারনেটের স্থবির গতির পেছনে রয়েছে বিটিআরসির সঙ্গে মোবাইল অপারেটরদের দ্বন্দ্ব। ইন্টারনেটের গতি ও সেবার মান বাড়াতে যে পরিমাণ তরঙ্গ প্রয়োজন তা মোবাইল অপারেটরদের সরবরাহ না করায় ভোগান্তি বাড়ছে।

এ ব্যাপারে সরকারের চোখ কান-খোলা রাখার বিকল্প নেই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর