বুধবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

মানসিক রোগ

জনসচেতনতা বাড়াতে হবে

দেশে মানসিক রোগী আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। পরিণতিতে দেখা দিচ্ছে পারিবারিক ও সামাজিক জটিলতা। সবচেয়ে আশঙ্কার হলো তরুণ সমাজের মধ্যে মানসিক রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। দেশের ১৭ কোটি জনসংখ্যার অন্তত ৩ কোটি কোনো না কোনো মানসিক সমস্যায় ভুগছে। মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে আক্রান্তের ৯২ শতাংশই চিকিৎসা নিচ্ছেন না। সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে স্পেশাল ইনিশিয়েটিভ ফর মেন্টাল হেলথ-বিষয়ক এক অনুষ্ঠানে দেশে মানসিক রোগের বিস্তার সম্পর্কে যে তথ্য দেওয়া হয় তা আঁতকে ওঠার মতো। এতে বলা হয় বাংলাদেশে ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক ও ১২ দশমিক ৬ শতাংশ শিশু-কিশোর কোনো না কোনো মানসিক রোগে ভুগছে। বেকারত্ব, হতাশা, অস্থিরতা, ব্যক্তিজীবনের অনিয়ম, বিশৃঙ্খলা, নানামুখী চাপ, অপ্রাপ্তি, লোভ ও বিচারহীনতা তরুণদের মানসিক রোগীতে পরিণত করছে। দেশে মানসিক চিকিৎসাসেবা নিয়ে উচ্চতর পড়াশোনা করা চিকিৎসকের সংখ্যা প্রায় ৩০০। আর সাইকোলজিস্ট, সাইকিয়াট্রিস্ট, মানসিক স্বাস্থ্যসেবার সঙ্গে জড়িত চিকিৎসকের সংখ্যা হাজারের কম। দেশে বছরে গড়ে ১০ হাজারের বেশি মানুষ আত্মহত্যা করে। গুরুতর মানসিক রোগীর ৪২ শতাংশই কোনো না কোনো দীর্ঘমেয়াদি শারীরিক রোগে ভুগছে। এর মধ্যে ব্যথা, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হাঁপানি, হৃৎপিন্ডের সমস্যা, ব্রেন টিউমার, লিভার, কিডনি ও হার্ট ফেইলিউর অন্যতম। করোনাকালে মানসিক রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। মানসিক রোগে আক্রান্তের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেলেও জনসচেতনতার অভাবে অনেকে এজন্য চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন বোধ করেন না। মানসিক রোগে আক্রান্ত হয়ে অনেকে পারিবারিক জীবনে জটিলতা সৃষ্টি করছেন। দেশে তালাক ও আত্মহত্যার সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার পেছনে মানসিক অসুস্থতা অনেকাংশে দায়ী। মানসিক রোগে আক্রান্তে সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় পারিবারিক ঝগড়া-ফ্যাসাদ বাড়ছে। মানসিক ভারসাম্যহীনতায় ভাঙছে পারিবারিক ও সামাজিক সম্পর্ক; যা রোধে জনসচেতনতার বিকল্প নেই।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর