রবিবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

বিদেশে অর্থ পাচার

প্রশাসনকে কঠোর হতে হবে

আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের আড়ালে বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর গড়ে প্রায় ৭৪ হাজার ৪৭৫ কোটি টাকা পাচার হচ্ছে। এর মধ্যে শুধু ২০১৫ সালেই পাচার হয়েছে ১ লাখ কোটি টাকার বেশি। ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফিন্যানশিয়াল ইন্টিগ্রিটির (জিএফআই) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। বৃহস্পতিবার প্রতিষ্ঠানটি তাদের ওয়েবসাইটে এ তথ্য প্রকাশ করে। ২০০৯ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ১৩৪ দেশের বাণিজ্যের আড়ালে অর্থ পাচারের চিত্র তুলে ধরে সংস্থাটি। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে মূল্য ঘোষণার গরমিল দেখিয়ে কীভাবে দেশ থেকে অর্থ পাচার হয় সে চিত্র তুলে ধরেছে জিএফআই। জিএফআই প্রতি বছর বিশ্বজুড়ে অর্থ পাচারের বিশ্লেষণ তুলে ধরে। এক দশক ধরে কাজটি করছে সংস্থাটি। প্রতিবেদনে ১৩৪টি উন্নয়নশীল দেশের ২০০৯ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত তথ্য উঠে এসেছে। জিএফআই বলেছে, উন্নয়নশীল দেশ থেকে বেশি অর্থ পাচার হয় আমদানি-রপ্তানি পণ্যের প্রকৃত দাম গোপন করে। বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা ২০১৫ সালে বিদেশে পণ্য কেনাবেচার যে খতিয়ান দিয়েছেন তার ১৮ শতাংশই ভুয়া। আমদানিতে বেশি আর রপ্তানিতে কম দেখিয়ে ওই বছর গায়েব করা হয়েছে ১ হাজার ১৮৭ কোটি ডলার যা, ১ লাখ কোটি টাকার বেশি। পাচারের অর্থের সংখ্যাটি বড়। এসব অর্থের উৎস মূলত দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত হয়। তবে পাচারের ক্ষেত্রে দেশের সার্বিক অবস্থা বিশেষ করে নিজের নিরাপত্তা, পরবর্তী প্রজন্মের নিরাপত্তা, সম্পদের নিরাপত্তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যখন কেউ মনে করেন এসব নিরাপত্তা নেই কিংবা থাকলেও ভবিষ্যতে না থাকার অনিশ্চয়তা থাকে, তখন অনেকে বিদেশে অর্থ পাচার করেন। আমলা, ব্যবসায়ী প্রায় সবার ছেলেমেয়ে বিদেশে থাকে। সন্তানদের নিরাপদ ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে তারা টাকা সরানোর চেষ্টা করেন। তাদের মধ্যে এ দেশে বিনিয়োগ বা টাকা রাখায় আস্থা নেই। অনেকে বাড়ি বিক্রি করে, সম্পদ বিক্রি করে হুন্ডির মাধ্যমে টাকা নিয়ে যাচ্ছেন। প্রতি বছরই নানা কায়দায় অর্থ পাচার বাড়ছে। যারা অর্থ পাচার করছেন তারা আর্থিক, রাজনৈতিক ও প্রশাসনিকভাবে অনেক প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। পাচার বন্ধ করতে হলে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের কঠোর হতে হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর