শুক্রবার, ২১ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

বিপন্নপ্রায় বংশী নদী

দখল-দূষণ রোধে সক্রিয় হতে হবে

রাজধানীর বর্ধিত অংশ হিসেবে বিবেচিত সাভারের বংশী নদী দখল ও দূষণে অস্তিত্ব হারাতে বসেছে। একসময়কার স্বচ্ছ ও প্রাণবন্ত নদীর পানি এখন ব্যবহার-অযোগ্য হয়ে পড়ছে দূষণের কবলে পড়ে। দূষণের পাশাপাশি দখলের খড়্গও নেমে এসেছে বংশীর ওপর। দখলবাজদের কারোর পরিচিতি রাজনীতিক হিসেবে, কেউ মাস্তান। ব্যবসায়ী নামধারীর সংখ্যাও কম নয়। নদীর দুই তীর একের পর এক দখল হলেও প্রশাসন দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না এমন অভিযোগ এলাকাবাসীর। শুধু দখল নয়, শত শত কলকারখানার বর্জ্যে নদীর পানি দূষিত হয়ে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। দূষণ ও দখল রোধে স্থানীয় নদীরক্ষা কমিটি মাঝেমধ্যে সমাবেশ, মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি পালন করলেও তা দখল প্রক্রিয়া থামানোর ক্ষেত্রে কোনো অবদান রাখতে পারছে না। সরকারিভাবে নদী দখলদারদের তালিকা প্রস্তুত করে নোটিস দেওয়া হলেও বহাল তবিয়তে রয়েছেন তারা। নদীর তীর ঘেঁষে কোথাও টিনের ঘর, কোথাও কংক্রিটের ঢালাই আর ইটের গাঁথুনি দিয়ে দোকানপাট নির্মাণ করছেন দখলবাজরা। সাভার থানাঘাট থেকে নামাবাজার, বাঁশপট্টি পর্যন্ত সাভার পৌরসভার বর্জ্য ফেলে ভরাট করে গড়ে তোলা হয়েছে বড় বড় দালান। বংশীর ওপর নির্মিত সাভার-ধামরাই সেতুর দুই পাশ দখল করে রেখেছেন প্রভাবশালীরা। নয়ারহাটেও নদী দখলের ভয়াবহ চিত্র যে কারোর চোখে পড়বে। এ ব্যাপারে প্রশাসনের কোনো মাথাব্যথা আছে মনে হয় না। জনপ্রতিনিধিদের মধ্যেও রয়েছে প্রায় নির্বিকার ভূমিকা। তারা মাঝেমধ্যে সক্রিয় হলেও উদ্দেশ্য থাকে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদ নয় বরং তাদের থেকে সুবিধা পাওয়া। শুধু বংশী নয়, ঢাকার সব নদ-নদীই দখল-দূষণের অপ্রতিরোধ্য শিকার। এটাই যেন বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, ধলেশ্বরী, বালু, বংশী ও শীতলক্ষ্যার ভাগ্যের লিখন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ দুর্ভোগের অবসানে প্রশাসন সক্রিয় হবে এমনটিই প্রত্যাশিত।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর