শুক্রবার, ২৮ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

তামাক উৎপাদন

নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা ভাবুন

তামাক বাংলাদেশের জনস্বাস্থ্যের জন্য প্রধান হুমকি। পরোক্ষভাবে আইনশৃঙ্খলার জন্যও বিপদ সৃষ্টি করছে এ নেশা। কারণ তামাকে আসক্তি যাদের তাদের একাংশ পরবর্তীতে মাদকাসক্তের শিকার হয়। ইউরোপীয়রা সারা দুনিয়ায় তামাক-জাতীয় নেশা ছড়িয়ে দেয় আমেরিকা আবিষ্কারের পর। কলম্বাস আমেরিকা জয়ের পর সেখানকার অধিবাসীদের মধ্যে তামাকের প্রচলন লক্ষ্য করেন। একে ব্যবসার উপকরণ বানায় ইউরোপীয়রা। তারা প্রচার করে, তামাক একটি ধন্বন্তরি ওষুধ। যা ব্যবহারে নানা রোগ সারে। মুঘল সম্রাট আকবরের আমলে পর্তুগিজ বণিকরা ভারত সম্রাটকে তামাক উপহার দেন। কালক্রমে তামাক ব্যবহার আভিজাত্যের প্রতীক হয়ে দাঁড়ায়। পরবর্তীতে তা ছড়িয়ে পড়ে সমাজের সর্বস্তরে। সরকার তামাক ব্যবহার নিরুৎসাহকরণে বিড়ি, সিগারেট, গুল, জর্দা ইত্যাদি পণ্যের ওপর করারোপ করেছে বিপুলভাবে। তামাক পণ্যের বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ-জাতীয় পণ্যের প্যাকেটে তা যে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর তা লেখা বাধ্যতামূলক করেছে। তার পরও তামাকের আগ্রাসন থামছে না। রাজধানীর লাগোয়া মানিকগঞ্জে তামাক চাষ স্বাস্থ্যঝুঁকি সৃষ্টি করছে। দেশের উত্তরাঞ্চল, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে জনস্বাস্থ্যের জন্য তামাক চাষ একটা বড় ধরনের হুমকি। মানিকগঞ্জে আগে নদীপাড়ের অনুর্বর জমিতে তামাক চাষ হতো। ভালো দামে বিক্রির নিশ্চয়তা থাকায় এখন বসতভিটার চারপাশ এমনকি বিদ্যালয়সংলগ্ন জমিতেও তামাক চাষ হচ্ছে। এর ফলে সাধারণ লোকজনসহ কোমলমতি শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছে সাধারণ মানুষ। তামাকের কারণে ফুসফুসের রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। ক্যান্সারের অন্যতম কারণও তামাক-জাতীয় পণ্যের ব্যবহার। তামাক-জাতীয় পণ্য থেকে সরকার যে রাজস্ব পায় তার চেয়ে অনেক বেশি ব্যয় হয় তামাক ব্যবহারে সৃষ্ট বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা খাতে। তামাক আসক্তি যেহেতু মাদকাসক্তির পথ দেখায় সেহেতু তামাকের ওপর নিষেধাজ্ঞা কড়াকড়ি করা দরকার। তামাক উৎপাদন বন্ধের বিষয়েও ভাবতে হবে। তামাক থেকে পাওয়া করের লোভে দেশবাসীকে জিম্মি করা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর