সোমবার, ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

ভাষার ভিন্নতা মহান আল্লাহর কুদরত

মুহম্মাদ আশরাফ আলী

প্রতি বছরের মতো এবারও আমাদের মাঝে এসেছে ভাষাশহীদদের রক্তেস্নাত দিন একুশে ফেব্রুয়ারি। এ দিনটিতে সারা দুনিয়ার মানুষ মাতৃভাষার মর্যাদাকে সমুন্নত রাখার শপথ নেয়। ইসলামে মাতৃভাষার মর্যাদাকে স্বীকার করা হয়েছে বিশেষভাবে। মুসলমান মাত্রই বিশ্বাস করে, ভাষা মানুষের প্রতি মহান আল্লাহর একটি নেয়ামত। জীবজগতের মধ্যে একমাত্র মানুষই কথা বলতে পারে। সর্বশক্তিমান আল্লাহ মানুষকে ভাষা ও বর্ণের ভিন্নতা দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। তিনি ইরশাদ করছেন, ‘আর আল্লাহর নিদর্শনগুলোর মধ্যে (একটি নিদর্শন হলো) আসমান ও জমিন সৃষ্টি এবং মানুষের ভাষা ও বর্ণের ভিন্নতা। এর মধ্যে জ্ঞানী সম্প্রদায়ের জন্য উপদেশ রয়েছে।’ সুরা রুম, আয়াত ২২। ওই আয়াতে পৃথিবীর মানুষের ভাষা ও বর্ণের ভিন্নতাকে আল্লাহ তায়ালা তাঁর একটি নিদর্শন বলে আখ্যায়িত করেছেন। অন্যত্র আল্লাহ বলেন, সুন্দর ভাষায় বক্তব্য উপস্থাপন ও উত্তম বাচনভঙ্গিতে কথা বলতে অপারগতার কারণেই হজরত মুসা (আ.) দীনের দাওয়াত নিয়ে ফিরাউনের কাছে যাওয়ার সময় সুন্দর ভাষা ও হৃদয়গ্রাহী কথাবার্তায় পারঙ্গম স্বীয় ভাই হারুন (আ.)-কে নিজের সঙ্গী করার জন্য আল্লাহর কাছে আবেদন জানিয়ে বলেছিলেন, ‘আমার ভাই হারুন; সে আমার থেকে অনেক বেশি প্রাঞ্জল-ভাষী। তাই আপনি তাকে আমার সহযোগী করে প্রেরণ করুন; যাতে সে আমাকে (দাওয়াতের ক্ষেত্রে তার প্রাঞ্জল ভাষার দ্বারা) সত্যায়িত করে। কেননা আমি আশঙ্কা করছি (আমার বক্তব্য সত্য হওয়া সত্ত্বেও) তারা আমাকে মিথ্যাবাদী সাব্যস্ত করবে।’ সুরা কাসাস, আয়াত ৩৪।

আল্লাহ মানুষের হেদায়াতের জন্য পৃথিবীতে যেসব নবী-রসুল পাঠিয়েছেন, তাঁদের সবার কাছে মাতৃভাষায় আল্লাহর ওহি প্রেরিত হয়েছে; যাতে তাঁরা তাঁদের জাতিকে সুস্পষ্ট ভাষায় আল্লাহর হুকুম সম্পর্কে অবহিত করতে পারেন। হজরত মুসা (আ.)-এর ওপর তাওরাত অবতীর্ণ হয়েছে হিব্রু ভাষায়, হজরত দাউদ (আ.)-এর ওপর জবুর অবতীর্ণ হয়েছে ইউনানি ভাষায় আর হজরত ইসা (আ.)-এর ওপর ইনজিল অবতীর্ণ হয়েছে সুরিয়ানি ভাষায়। শেষ নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ওপর কোরআন অবতীর্ণ হয়েছে আরবি ভাষায়।

            

    লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক।

সর্বশেষ খবর