মঙ্গলবার, ১ মার্চ, ২০২২ ০০:০০ টা

নির্বাচন কমিশনকে কাজে বিশ্বাস ও আস্থা অর্জন করতে হবে

বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম

নির্বাচন কমিশনকে কাজে বিশ্বাস ও আস্থা অর্জন করতে হবে

সারা বিশ্বে সবচেয়ে আলোচিত খবর রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণ। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি প্রথম ভেবেছিলেন রাশিয়া কিছু করলে সারা পৃথিবী তার পেছনে ঝাঁপিয়ে পড়বে। তাঁর তেমন কিছুই করতে হবে না, সব অন্যরাই করে দেবে। গত জাতীয় নির্বাচনের সময় যেমন বিএনপি ভেবেছিল, ভোটে দাঁড়ালেই হলো, জনগণ সব ভোট তাদের দিয়ে দেবে। জামায়াত ভাবছিল, যা কিছু করার বিএনপি মরিয়া হয়ে করবে। আবার বিএনপি ভেবেছিল, জামায়াত একটা ক্যাডারভিত্তিক দল, লোকজন, সংগ্রাম, হাত কাটা, পা কাটা, গাড়ি ভাঙা যা কিছু করার তারাই করবে। আর আমরা যারা মুজিবভক্ত তারা ভাবছিলাম, আমাদের নেতা ড. কামাল হোসেনের পেছনে দেশ তো বটেই সারা বিশ্ব একাট্টা হয়ে যাবে। কিন্তু শ্রদ্ধেয় কামাল হোসেন নড়াচড়া করেননি। নেতৃত্বদানের কোনো চেষ্টা করেননি। তাই আপনাআপনি নেতৃত্ব চলে যায় বিএনপির হাতে। তা-ও আবার দেশে নয়, বিদেশে সুদূর লন্ডনে, সেখান থেকে তরুণ নেতা তারেক রহমান যা ইচ্ছা তা-ই করতে থাকেন। শেষমেশ দেখা যায় রাজার পুকুরে সবাই দুধ দেবে। কেউ একজন না গেলে কী আর কমবেশি হবে। একজন একজন করে কেউ যায়নি। পুকুরে এক ফেঁাঁটাও দুধ পড়েনি। যে পানি সেই পানি, শুধু পানি পানিই। তার অর্থ এই নয়, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর বাংলাদেশে কোনো ভোট হয়েছে। যা হওয়ার দিনের ভোট রাতে হয়েছে। সাধারণ ভোটারের ভোট দেওয়ার দরকার পড়েনি। ফলাফলে আটজন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের। কয়েকদিন ভোট চুরি, পার্লামেন্ট অবৈধ এসব বলে একজন সুলতান, আরেকজন মোকাব্বিরসহ বিএনপির পাঁচজন শপথ নিলেন। মহাসচিব নিলেন না, নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ করে পদত্যাগ করলেন। এ রকম দ্বিচারিতা মানুষের পছন্দ হয়নি। আমাদের ভালো লাগেনি তাই যেমন সবার শেষে জোটে গিয়েছিলাম, তেমনি সবার আগে জোট ছেড়েছি। বিষয়টা মনে হয় আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ ভুল। প্রায় অনেকটা সে রকম বর্তমানে ইউক্রেনের অবস্থা। ন্যাটোর পক্ষে গেলে তাবৎ পৃথিবী ইউক্রেনের সঙ্গে থাকবে। অস্ত্র-বস্ত্র-খাদ্য-অর্থ কী দরকার? সব দেবে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু ছয় দিনের যুদ্ধে কেউ আসেনি। কেউ কেউ এটাওটা পাঠাচ্ছে এতে কোনো কাজ হবে না। ইউক্রেনের ৪০-৫০ লাখ মানুষ, মাঝখান থেকে তাদের অনেকের প্রাণহানি হবে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট এর মধ্যেই যুদ্ধবিরতি চেয়েছেন। রাশিয়াও রাজি। কিন্তু সেনাবাহিনীকে ক্ষমতা নিতে বলেছে। যুদ্ধের সময় এসব হয়। যুদ্ধে কোনো নীতি কাজ করে না। যাতে শক্তিশালীদের সুবিধা তা-ই তারা করে, এটাই যুদ্ধের  স্বতঃসিদ্ধ নীতি। চেরনোবিলের পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র এর মধ্যেই রাশিয়ার হাতে চলে গেছে। রাশিয়া যে খুব সহজে ইউক্রেনকে ন্যাটোয় যোগ দিতে দেয়নি বা দেবে না তাদের দৃষ্টিতে দেখলে কোনো দোষের নয়। কারণ ঘাড়ের কাছে ন্যাটো শক্তি উপস্থিত হলে রাশিয়ার ভরসা কী? নিরাপত্তা কোথায়? তারা এ পর্যন্ত যতবার আক্রান্ত হয়েছে এ সমতলভূমির ওপর দিয়েই শত্রু এসেছে। ইউক্রেনের যে সমুদ্রপথ ন্যাটো বাহিনী ইউক্রেনে অবস্থান নিলে রাশিয়ার সমুদ্রপথও নিরাপদ থাকবে না। তাই রাশিয়ার শক্তি প্রয়োগ না করে খুব যে একটা উপায় ছিল তা-ও নয়। তবে ৫-৬ হাজার বা ৭ হাজার কিলোমিটার দূরে এ যুদ্ধের প্রভাব সারা পৃথিবীতে যেমন পড়বে, তেমনি বাংলাদেশেও পড়বে। এর মধ্যেই বাজারে যে টান পড়েছে তাতে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠে গেছে। টিসিবির ১৫-২০টি বা ৫০-৬০টি কিংবা ১০০টি ট্রাকে ১ টন তেল-নুন-ডাল-চাল সস্তা দরে দিলেও বাজারে তার কোনো প্রভাব পড়বে না।

ট্রাকের পেছনে মানুষজন না ছুটিয়ে ঢাকা শহরে টিসিবির ৫০০-৭০০ কিংবা ১ হাজার দোকান খুলে দিলে তেমন কী অসুবিধা? ইউনিয়নে ইউনিয়নে শহরে বন্দরে জনসংখ্যা অনুপাতে টিসিবির ন্যায্যমূল্যের দোকান দিলে দোষ কোথায়? শীতের ভরা মৌসুমে যখন বাজারে টমেটোর দাম থাকত ৩-৪ টাকা, তা এখন ৩০-৪০ টাকা। আলু-পটোল-পিঁয়াজ-মরিচ-আদা-রসুন কোনো কিছুর দাম কম নয়। অথচ এ উচ্চমূল্য সাধারণ মানুষ বহন করতে পারছে না। কৃষিপণ্য বাজারে যে উচ্চমূল্যে বেচাকেনা হচ্ছে তার ফল প্রান্তিক চাষিরা পাচ্ছে না। সবই যাচ্ছে মধ্যস্বত্বভোগীর পেটে। তেলের দাম বাড়ায় পরিবহন খরচ, রাস্তায় চাঁদাবাজি এসবেই বিপুল অর্থ চলে যাচ্ছে। কেউ দায়িত্ব নিচ্ছে না। দেশে পূতপবিত্র রাজনীতি নেই। সংসদের ৭০ ভাগ ব্যবসায়ী-শিল্পপতি প্রায় সবাই আছেন নিজের ধান্দায়। মানুষের কথা ভাববে কে? কিছুদিন যাবৎ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কোনো উপযুক্ত দক্ষ যোগ্য মানুষ পাচ্ছেন বলে মনে হয় না। যাকেই যে দায়িত্ব দিচ্ছেন তিনিই সেখানে ব্যর্থতার বিশ্বরেকর্ড গড়ছেন। এ রকম অবস্থা আর কত দিন চলবে। হঠাৎ সবকিছু তছনছ হয়েও যেতে পারে তাই বড় শঙ্কায় থাকি। বঙ্গবন্ধু যখন নিহত হন সে সময়টা বড় বেশি কাছে থেকে দেখেছি। এখানে-ওখানে আগুন, হত্যা-গুম লেগেই ছিল। প্রকাশ্য ঈদের মাঠে মাননীয় সংসদ সদস্য গুলি খেয়ে নিহত হয়েছেন। এখনো যখন এখানে-ওখানে আগুন জ্বলতে দেখি কেমন যেন লাগে। করোনায় মৃত্যুর চাইতে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু বেশি। কী করে মুখ বুজে মেনে নিই! সেদিন কক্সবাজারের মূল রাস্তায় একসঙ্গে ছয় ভাইয়ের মৃত্যুকে দুর্ঘটনা বলি কী করে? যে গাড়ি এ পরিবারটিকে চাপা দিয়েছিল সে গাড়ি পিছিয়ে এসে রাস্তায় এলোমেলো পড়ে থাকা আহতদের ওপর দিয়ে চালিয়ে দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করেছে। পাঁচ ভাই সঙ্গে সঙ্গে মারা গেলেও একজন হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছিলেন। তিনিও সেদিন পরপারে চলে গেছেন। এসবই কি স্বাভাবিক? না কোনো অভিসন্ধি আছে? একটু যত্ন নিয়ে না দেখলে পরিণতি ভয়াবহ হতে পারে।

ইউক্রেনের যুদ্ধের ওপর বিশ্ব পরিস্থিতি অনেকটাই নির্ভর করে। কেউ কেউ নাকে সরিষার তেল দিয়ে ঘুমিয়ে থাকলেও চোখ বন্ধ করলেই যেমন প্রলয় বন্ধ হয় না, তেমনি এসব যুদ্ধ বিগ্রহের প্রভাব থেকে আমরাও মুক্ত থাকব না। আমাদের যে সন্তানরা ইউক্রেনের যুদ্ধে ভয়াবহ মৃত্যুর দিন গুনছে তাদের নিরাপদ জীবনের জন্য সরকারের দায়িত্ব আছে। সর্বোচ্চ চেষ্টা দিয়ে দেশের সন্তান দেশে ফিরিয়ে আনা উচিত। তাদের সঠিকভাবে দেশে ফিরিয়ে আনতে না পারলে সরকারের ওপর তার মারাত্মক প্রভাব পড়বে। আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কোন জগতের মানুষ তা তিনিই জানেন। মাঝেমধ্যে এমন সব কথা বলেন যাতে মাথা গুলিয়ে যায়। কদিন আগে চীন টাকার ঝুড়ি নিয়ে বসে আছে এমন কথা পাগলের প্রলাপের চেয়েও মূল্যহীন। এ সম্পর্কে সৈয়দ বোরহান কবীরের লেখা ‘মন্ত্রীর চোখ যখন টাকার ঝুড়িতে’ আমার খুব ভালো লেগেছে। এভাবে একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি কথা বলতে পারেন কেউ চিন্তাও করে না। কিন্তু তিনি তা করেছেন বা বলেছেন। ইউক্রেন নিয়ে কী বলবেন আল্লাহ মালুম। ঘুমিয়ে থেকে টেকা যাবে না, আমাদেরও হাত-পা ছুড়তে হবে। সে হাত-পা এলোমেলো ছুড়লে লাভের চেয়ে ক্ষতি বেশি হবে। তাই মাথা ঠান্ডা রেখে বিচার-বিবেচনা করে মেপে মেপে কূটনীতিকদের প্রতি মুহূর্তে পা বাড়াতে হবে। কিন্তু তারাই যদি লাগামহীন হন তাহলে ঘোড়া তো এদিক-ওদিক করবেই। সামনে আমাদের মস্ত বড় চ্যালেঞ্জ। সঠিকভাবে এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে না পারলে আমরা খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হব। যে যা-ই বলি, সারা বিশ্বের হিংসা করার মতো জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির মধ্য দিয়ে আমরা বাংলাদেশ অর্জন করেছিলাম। হেমিলনের বংশীবাদকের চেয়ে আমাদের নেতা আমাদের পিতা আমাদের অস্তিত্ব বঙ্গবন্ধুর বাঁশির জোর ছিল শত কোটি গুণ বেশি। তাই এক বিরাট অসম শক্তির সঙ্গে প্রত্যক্ষ রক্তক্ষয়ী লড়াই করে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছিলাম। আজকাল বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কত কথা কত সমালোচনা। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর অমন হিমালয়সম ব্যক্তিত্ব না থাকলে স্বাধীনতার পর মিত্রবাহিনী অত তাড়াতাড়ি দেশ ছেড়ে চলে যেত না। আফগান দখল করে আমেরিকা ২০ বছর থেকেছে। ভিয়েতনামেও অনেক দিন। এর আগে এ রকম একটি কঠিন যুদ্ধের পর বিজয়ী শক্তি কখনো বিজিত স্থান ছেড়ে অত তাড়াতাড়ি চলে যায়নি। কিন্তু আজ অনেকের কাছে বঙ্গবন্ধুর সেই কৃতিত্বের মূল্য অনেকটা কমে গেছে। আওয়ামী লীগ থেকে আজ কিছুদিন বলা হচ্ছে, ’৭৫-এর পর বঙ্গবন্ধুকে মুছে ফেলার চেষ্টা হচ্ছিল। আমার মনে হয় আমরা বঙ্গবন্ধুর অযোগ্য ভক্ত-সমর্থকরা তাঁকে মুছে না ফেললে শত্রুপক্ষের কারও তাঁর অবদান মুছে ফেলা সম্ভব নয়। কারও কোনো কাজ ইচ্ছা করলেই মুছে ফেলা যায় না। যদি যেত তাহলে কবে ফুঁ দিয়ে আমাকে উড়িয়ে দেওয়া হতো, মুছে ফেলা হতো। তা কিন্তু সম্ভব হয়নি। হ্যাঁ, কিছু কিছু ঘোমটা দেওয়া বউ ভাশুরের নাম নেয় না সত্য, তাই বলে ভাশুর নেই এটা সত্য নয়। সেদিন এক পুরনো কর্মীকে দেখতে গিয়েছিলাম। মরণব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত। চেন্নাইয়ে চিকিৎসার জন্য যাবে, আমাকে দেখার তার খুবই শখ। যদি এ দেখাই শেষ দেখা হয় তাই তাকে দেখতে গিয়েছিলাম। মুক্তিযুদ্ধে আমাকে অজানা-অচেনা হাজার হাজার লাখো মানুষ নেতা-কর্মী সাহায্য করেছে। কিন্তু এই সহকর্মীটি শুধু মুক্তিযুদ্ধে নয়, মুক্তিযুদ্ধের অনেক আগে থেকে ছাত্র আন্দোলন, গণআন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ সবকিছুতেই ছায়ার মতো অনুসরণ করেছে। আলোচনার মধ্যে খুব দৃঢ়তার সঙ্গে সহকর্মীটি একসময় বলেছিল, ‘মন্ত্রী হাছান মাহমুদকে তথ্যমন্ত্রী না বলে বিএনপিবিষয়ক মন্ত্রী বলাই ভালো।’ মতিউর রহমান নামে সেই কর্মী বন্ধুকে দেখে ফেরার পথে বারবার মনে হচ্ছিল, সত্যিই তো যথার্থ বলেছে। তথ্যমন্ত্রী না বলে তাকে বিএনপিবিষয়ক মন্ত্রী বলাই যথার্থ।

যাক ওসব কথা। গতকাল প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী নির্বাচন কমিশনকে শপথ করিয়েছেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ একজনের সঙ্গেও পূর্বপরিচয় আছে কি না জানি না। একজনকেও খুব বেশি মনে পড়ে না। আমি এমনিতে মায়ের সন্তান বলে মহিলাদের হয়তো একটু বেশি সম্মান করি। আমার মেয়েরা আমার মাথার তাজ, কলিজার টুকরা। গত নির্বাচন কমিশনে অবশ্যই একজন মহিলা নিতে বলেছিলাম। মহামান্য রাষ্ট্রপতি কমিশন নিয়োগে একজন মহিলা রেখেছিলেন। আমার মনে হয়েছে সাবেক নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম নারীর মর্যাদা, গুছিয়ে কাজ করার ঐতিহ্য, ধৈর্যের দিক থেকে হিমালয়ের চাইতেও দৃঢ়তা- এর কিছুই রক্ষা করতে পারেননি। শিমুল তুলার মতো তাঁর ব্যক্তিত্ব-কর্তৃত্ব হাওয়ায় ভেসেছে। কেউ কোনো ভরসা পায়নি। বেহুদা কমিশনের মতো ব্যর্থ কমিশন পৃথিবী এর আগে দেখেনি। যদি বর্তমান কমিশন তার চাইতে ব্যর্থ না হয় তাহলে নূরুল হুদা কমিশনের ব্যর্থতার বিশ্বরেকর্ড কেউ ভাঙতে পারবে না। নতুন কমিশনের প্রতি আস্থা রাখার কোনো কারণ নেই। কিন্তু তাদের প্রতি আমাদের অনাস্থাও নেই। কারণ তাদের কোনো কাজই আমরা দেখিনি। তাদের কাজের মাধ্যমেই আস্থা-অনাস্থার ফয়সালা হবে। তারা যদি ভালো করেন, যা করবেন তার চাইতেও অনেক বেশি প্রশংসা ও সম্মান পাবেন। অনেক তেতো খেতে খেতে কেউ বিষিয়ে উঠলে তার কাছে সামান্য মিষ্টিও অমৃত মনে হয়। আমাদের দেশের মানুষ সম্পর্কে অনেকের ধারণা তারা অসহায়, কোনো বোধ-বিবেচনা নেই, তাদের নিয়ে যা খুশি তা করা যায়। কিন্তু আমার চিন্তা-চেতনা বিচার-বিবেচনা অন্য রকম। ঘুমিয়ে থাকা ঝিমিয়ে থাকা আমার দেশের মানুষ নিয়ে কিছুটা ছেলেখেলা করা গেলেও জেগে ওঠা মানুষকে তাদের মতের বাইরে এক সুতোও নড়ানো যায় না, যাবেও না। সামনে একটা বিশ্বাসযোগ্য জাতীয় নির্বাচন বাংলাদেশের জন্য খুবই প্রয়োজন। সাধারণ মানুষ দু-এক বেলা না খেয়ে থাকলেও হাসিমুখে মেনে নিতে রাজি। কিন্তু ভোটহীনতা ভোটাধিকার ছাড়া তারা থাকতে চায় না। আর এ ভোটের প্রশ্নে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্ব যতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তা কাটিয়ে ওঠার সবচাইতে বড় কাজ হচ্ছে প্রকৃত বিশ্বাসযোগ্য সরকারি প্রভাবমুক্ত একটি নির্বাচন। ভালো নির্বাচন বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের মধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীরই বেশি প্রয়োজন। বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন হলে দেশের মানুষ যেমন উজ্জীবিত উৎসাহিত হবে, দেশের মানুষ প্রকৃত নাগরিকের সম্মান পাবে, তেমনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সারা জীবনের স্বপ্নসাধ অবাধ নিরপেক্ষ সরকারি প্রভাবমুক্ত বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন- তা-ও বাস্তবায়ন হবে।

 

লেখক : রাজনীতিক।

www.ksjleague.com

সর্বশেষ খবর